আরজি কর কাণ্ড নিয়ে আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তাররা এবার সিবিআই তদন্তের গাফিলতির দায় চাপালেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর উপর। প্রতিবাদী জুনিয়র ডাক্তাররা বলেছেন, আরজি করে যে ঘটনা ঘটেছে তার জন্য রাজ্য সরকার যেমন দায়ী, তেমনই দায় অস্বীকার করতে পারে না কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিবিআইও। তারা তদন্তভার হাতে নেওয়ার পর এতদিনেও সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট দিতে পারেনি। কেন চার্জশিট দিতে পারছে না কেন্দ্রীয় সংস্থা, তার ‘গাফিলতি’র দায় বিরোধী দলনেতাকেও নিতে হবে।
কসবা কাণ্ডের প্রতিবাদে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ওই ল কলেজের সামনেই সভা করেছিলেন। সেই মঞ্চ থেকে আগামী ৯ আগস্ট আরজি কর কাণ্ডের এক বছরে নবান্ন অভিযানের কথা বলেছিলেন। যদিও পরে শুভেন্দু দাবি করেন, তিনি এই অভিযানের ঘোষণা করেননি। নির্যাতিতার বাবা-মার পথে নামার ডাককে সমর্থন করেছেন মাত্র। এরপর প্রতিবাদী জুনিয়র ডাক্তাররা মঙ্গলবার সাংবাদিক বৈঠক করে জানিয়ে দিলেন, তাঁরা এই অভিযানে সামিল হবেন না।
এদিকে আরজি কর কাণ্ডের এক বছর পূর্তিতে আগামী ৮ ও ৯ আগাস্টের মাঝে ফের ‘রাত দখল’-এর ডাক দিয়েছেন প্রতিবাদী আন্দোলনকারীরা। ওইদিন জুনিয়র চিকিৎসকরা কলেজ স্কোয়ার থেকে শ্যামবাজার মোড় পর্যন্ত মশাল মিছিল করবেন। এরপর রাত ১২টা থেকে পরের দিন ভোর ৪টে পর্যন্ত পথে থাকবেন তাঁরা। ইতিমধ্যে শিল্পী থেকে নাগরিক সমাজ – সকলকেই সেই মিছিল ও প্রতিবাদ কর্মসূচিতে শামিল হওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। জুনিয়র ডাক্তারদের স্পষ্ট বার্তা, ‘থ্রেট কালচারের বিরুদ্ধে সবাইকে রাস্তায় নামতেই হবে। আমরা চাই শুধু চিকিৎসক, নার্স বা স্বাস্থ্যকর্মী নন, সাধারণ মানুষ, সমাজের সমস্ত স্তরের মানুষও যেন এই প্রতিবাদে শামিল হন।’
অন্যদিকে, ৯ আগস্ট এবার রাখী পূর্ণিমা। ওইদিন জুনিয়র ডাক্তাররা রাখী বন্ধনের মাধ্যমে সম্প্রীতির বার্তা দেওয়ার পরিকল্পনা করেছেন। এরপর আরজি কর মেডিক্যালে ফের তাঁরা জমায়েত করবেন বলে জানা গিয়েছে।
উল্লেখ্য, অনিকেত মাহাতো, দেবাশিস হালদার, আসফাকুল্লা নাইয়ারা আরজি কর আন্দোলনকে রাজনৈতিক রং দেওয়ার বিরুদ্ধে ছিলেন। সেজন্য প্রথম থেকেই এই আন্দোলনকে অরাজনৈতিক রেখেছিলেন। গত ৯ আগস্টের সেই ঘটনার পর ইতিমধ্যে কেটে গিয়েছে ১১ মাস। সামনের আগস্টেই এক বছর পূর্ণ হতে চলেছে। এতদিন পরেও তাঁদের আন্দোলনের রূপরেখা বদল করেননি এই প্রতিবাদী জুনিয়র ডাক্তাররা। ৯ আগস্ট নবান্ন অভিযান প্রসঙ্গে তাঁরা বলছেন, দলীয় পতাকা ছাড়া নবান্ন অভিযানের কথা হয়েছে ঠিকই, কিন্তু তার ঘোষণা হয়েছে রাজনৈতিক মঞ্চ থেকেই। তাই এই কর্মসূচিতে তাঁরা থাকবেন না। যদিও আরজি করে নির্যাতিতার বাবা-মা এই আন্দোলনে সামিল হবেন বলে জানা গিয়েছে।