জগন্নাথ মন্দিরে যাওয়ার পথে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন চারজন। শনিবার সকাল ৬টা নাগাদ পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার বেলদার রানি সরাইয়ের কাছে ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কে একটি চারচাকা গাড়ি ও ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষ ঘটে। গ্যাস কাটার ব্যবহার করে গাড়ির ভিতর থেকে চারজনকে উদ্ধার করা হয়। এরপর তাঁদের নিকটবর্তী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও শেষরক্ষা হয়নি। চিকিৎসকেরা তাঁদের মৃত বলে ঘোষণা করেন। ঠিক কী কারণে নিয়ন্ত্রণ হারাল গাড়িটি, তা স্পষ্ট নয়।
পুলিশ সূত্রে খবর, দুর্ঘটনায় মৃতেরা হলেন – কার্তিকচন্দ্র লাহিড়ী (৪৬), অতনু গুহ (৪৫), হিমাদ্রিশেখর পাল (৪১) এবং বিশ্বজিৎ মণ্ডল (৫০)। চারজনই আসানসোলের একটি আবাসনের বাসিন্দা। মৃতদের মধ্যে অতনুর ঠিকাদার সংস্থা রয়েছে। মৃত চারজনের মধ্যে একজন ছিলেন স্কুলশিক্ষক, একজন বিদ্যুৎ দপ্তরের কর্মী, একজন আসানসোল পুরনিগমের ঠিকাদার এবং আরেকজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে আসানসোল পুরনিগমের ২২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অনির্বাণ দাস মৃতদের বাড়িতে যান।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, চারচাকা গাড়িটিতে করে ওই চারজন আসানসোল থেকে খড়গপুর হয়ে দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের উদ্দেশে রওনা হয়েছিল। গাড়িটিতে চালক সহ মোট চারজন ছিলেন। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, চারচাকা গাড়িটি অত্যন্ত দ্রুতগতিতে যাচ্ছিল এবং আচমকাই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টো লেনে ঢুকে পড়ে। সেই সময় বিপরীত দিক থেকে আসা একটি ট্রাকের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষ এতটাই ভয়ঙ্কর ছিল যে, চারচাকা গাড়িটি দুমড়ে-মুচড়ে যায়। খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছয় বেলদা থানার পুলিশ।
দুর্ঘটনার জেরে জাতীয় সড়কের ওই অংশে দীর্ঘক্ষণ যান চলাচল বন্ধ ছিল। পরে পুলিশ ধীরে ধীরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে। মৃতদেহগুলি ময়নাতদন্তের জন্য খড়গপুর মহকুমা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত গাড়িদুটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ট্রাকের চালক ও খালাসি অক্ষত আছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ওই জাতীয় সড়কে অতিরিক্ত গতি ও বেপরোয়া চালানোর প্রবণতা ক্রমশ বাড়ছে। ফলে প্রায়শই ঘটছে প্রাণঘাতী দুর্ঘটনা। পুলিশের সক্রিয় নজরদারির দাবি তুলেছেন তাঁরা।