রোজগারের তাগিদে রাজ্যের সীমান্ত পেরিয়ে প্রতিবেশী রাজ্যে কাজ করতে গিয়ে ফের হেনস্থার শিকার হলেন বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকরা। ওড়িশার ভদ্রক জেলায় কর্মরত বীরভূমের নলহাটি এলাকার পাঁচ শ্রমিককে ‘বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী’ আখ্যা দিয়ে আটক করেছে স্থানীয় পুলিশ। এমনটাই অভিযোগ করেছে তাঁদের পরিবার। পরিচয়পত্র সঙ্গে থাকা সত্ত্বেও কেন তাঁদের আটক করা হল, তা নিয়ে জোরালো প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
নলহাটি ২ নম্বর ব্লকের ভগলদিঘি গ্রামের বাসিন্দা আবদুল আলিম শেখ, সেলিম শেখ, মনিরুল ইসলাম, আতাউর রহমান ও নুর আলম গত ২৫ দিন ধরে পরিযায়ী শ্রমিক হিসেবে ওড়িশার আগরপাড়া এলাকায় কাজ করছিলেন। শনিবার হঠাৎই তাঁদের ভদ্রকের আগরপাড়া থানায় ডেকে পাঠানো হয়। পরিবারগুলির দাবি, থানায় পৌঁছতেই শ্রমিকদের ‘বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী’ তকমা দেওয়া হয়।
Advertisement
পরিচয়ের প্রমাণ হিসেবে তাঁরা ভোটার কার্ড, আধার কার্ড, প্যান কার্ড দেখান। কিন্তু অভিযোগ, তাতেও তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়নি। বরং পাঁচজনকেই আটক করে একটি ডিটেনশন ক্যাম্পে রাখা হয়েছে বলে দাবি করেছে তাঁদের পরিবার। খবর পেয়ে গভীর দুশ্চিন্তায় ভগলদিঘি গ্রামের প্রতিটি পরিবার। উদ্বেগে রাতের ঘুম উধাও তাঁদের আপনজনদের মুক্তি নিয়ে।
Advertisement
পরিবারের বক্তব্য, ‘২০০২ সালের ভোটার তালিকায় আমাদের আত্মীয়দের নাম আছে। পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের নামও রয়েছে। তবু তাঁদের বাংলাদেশি বলা হচ্ছে, এটা অত্যন্ত অন্যায়।’ পরিবারের সদস্যদের দাবি, পশ্চিমবঙ্গ-সহ ১২ রাজ্যে চলছে এসআইআর প্রক্রিয়া। এই পরিস্থিতিতে পরিচয়পত্র থাকা সত্ত্বেও শ্রমিকদের আটক করা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলেই তাঁদের ধারণা।
একই সঙ্গে তাঁদের অভিযোগ, ওড়িশায় গিয়ে বাংলার শ্রমিকদের হেনস্থা নতুন নয়। মুর্শিদাবাদ, পূর্ব মেদিনীপুর-সহ বিভিন্ন জেলার বহু শ্রমিক অতীতেও একই অভিযোগ করেছেন। বাংলাদেশি তকমা দিয়ে পরিযায়ী শ্রমিকদের একের পর এক আটক করার অভিযোগে উত্তপ্ত নলহাটি। পরিবারগুলির দাবি, ‘এবার রাজ্য প্রশাসন এগিয়ে এসে আমাদের ছেলেদের ওড়িশা থেকে ছাড়িয়ে আনার ব্যবস্থা করুক।’
Advertisement



