ভোটের আগে স্বচ্ছতা আনতে বরখাস্ত অভিযুক্ত কর্মীদের

Written by SNS March 21, 2024 2:06 pm

আকবরের পরে কাজিরুল ও আকাশে কঠোর আশিস

খায়রুল আনাম:  লোকসভা ভোটে দলীয় প্রার্থীদের নাম ঘোষণা হয়ে যাওয়ার পরে রাজ্যের শাসক তৃণমূল কংগ্রেস যখন জোর কদমে প্রচারে নেমে পড়েছে তখন, দলীয় কোনও কর্মীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠলে তৃণমূল কংগ্রেস যে তাকে প্রশ্রয় না দিয়ে দলীয় শৃঙ্খলা রক্ষার দিকে জোর দেবে, সেই বার্তা-ই দিয়ে দেওয়া হলো৷ একশো দিনের কাজের বকেয়া টাকা কেন্দ্র না দেওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্য সরকার নিজেই যখন লোকসভা ভোটের আগে সেই টাকা মিটিয়ে দিতে তৎপরতার সাথে উপভোক্তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউণ্টে টাকা পাঠিয়ে দিতে শুরু করেছে তখন, কোথাও কোথাও দলীয় কর্মীদের একাংশের বিরুদ্ধে সেই টাকা আত্মসাৎ করে নেওয়ার অভিযোগও উঠছে৷ এধরনের ঘটনা বীরভূম জেলার কোথাও কোথাও ঘটছে বলেও অভিযোগ উঠেছে৷ এই ধরনের একটি অভিযোগ সামনে আসার পরই তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা কোর কমিটি বিষয়টির দিকে দৃষ্টি দেয় এবং দুই দলীয় কর্মীর বিরুদ্ধে দ্রুততার সাথে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়ে দিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা চেয়ারম্যান তথা রাজ্য বিধানসভার ডেপুটি স্পিকার ড. আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়৷ তিনি অভিযুক্ত কাজিরুল ইসলাম এবং শেখ আকাশ তৃণমূল কংগ্রেসেরই কর্মী বলে জানা গিয়েছে৷ কিন্ত্ত আমরা কোনও রকম দুর্নীতিকে বরদাস্ত করছি না৷ অভিযুক্ত দুই দলীয় কর্মী কাজিরুল ইসলাম এবং শেখ আকাশকে দল থেকে বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়ে দলের জেলা কোর কমিটি পুলিশকেও এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে৷ এদিকে জানা যাচ্ছে যে, জেলা পুলিশও অভিযুক্ত ওই দুই ব্যক্তিকে নোটিশ পাঠিয়ে আইনী পদক্ষেপ নেওয়ার দিকে এগোচ্ছে৷

অভিযোগ সূত্র থেকে জানা যাচ্ছে যে, রামপুরহাটের আয়াস গ্রাম পঞ্চায়েতের পানিসাইল গ্রামের জবকার্ডধারী শেখ নূরজামান রামপুরহাট থানায় ১৪ মার্চ লিখিত অভিযোগ করেন যে, তাঁর একশো দিনের কাজের বকেয়া টাকা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউণ্টে ঢোকার পরই গ্রামেরই দুই তৃণমূল কংগ্রেস কর্মী শেখ কাজিরুল ও শেখ আকাশ তাঁর বাড়িতে ঢুকে তাঁকে মারধর করে কাছে থাকা দু’হাজার টাকা ছিনিয়ে নিয়ে চলে যায়৷ বাকী টাকাও দিয়ে দিতে হবে বলে হুমকি দিয়ে যায়৷ ওই এলাকার মহিলারাও গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসে এবং বিডিওর কাছে গিয়ে ওই দুই তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীর নামে তাঁদের কাছ থেকেও একশো দিনের কাজের টাকা তাঁদের হাতে দিয়ে দিতে হবে বলে হুমকি দিয়ে আসেন বলে অভিযোগ জানিয়ে আসেন৷ অভিযুক্ত ওই দুই ব্যক্তি এলাকায় তৃণমূল কংগ্রেসের প্রভাবশালী মুখ হওয়ায় ঘটনার জেরে তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্বকে চরম বিব্রতকর অবস্থার মধ্যে পরতে হয়৷ এর আগেও পঞ্চায়েত ভোটের সময় এলাকার আরেক প্রভাবশালী তৃণমূল কংগ্রেস নেতা তথা দলের অঞ্চল সভাপতি আকবর আলমের বিরুদ্ধে নানাবিধ অভিযোগ ওঠায় দল তাঁকে শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে অপসারিত করে৷ দলের নারায়ণপুর অঞ্চল সভাপতি শেখ মিলনও জানিয়ে দিয়েছেন যে, আমরা এই ধরণের ঘটনাকে প্রশ্রয় দিতে পারি না৷ এভাবে উপভোক্তাদের উপরে জুলুমবাজি করে তাঁদের শ্রমের টাকা ছিনিয়ে নেওয়া হলে বিষয়টি গ্রাম পঞ্চায়েত অফিস এবং পুলিশকে জানানোর কথাও তিনি জানিয়েছেন৷ এবারও এখানে লোকসভা ভোটে প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন শতাব্দী রায়৷ এক শ্রেণির দলীয় কর্মীর এই ধরণের আচরণের কারণে বিরোধীরা যাতে কোনও সুবিধা আদায় করতে না পারে, সে জন্যই তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা কোর কমিটি দ্রুততার সাথে অভিযুক্ত দলীয় কর্মীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে তৎপর হয়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে৷