• facebook
  • twitter
Friday, 5 December, 2025

রাজ্য সরকারের কাছে দাবি সৌমিত্রর স্মৃতিতে হোক সংগ্রহশালা: অধীর

প্রয়াত কিংবদন্তি অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের স্মৃতিতে সংগ্রহশালা তৈরি করুক রাজ্য সরকার। এমনই দাবি জানালেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী।

অধীর রঞ্জন চৌধুরী ও পৌলমী বসু (ছবি: SNS)

প্রয়াত কিংবদন্তি অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের স্মৃতিতে সংগ্রহশালা তৈরি করুক রাজ্য সরকার। বুধবার প্রয়াত অভিনেতার বাড়িতে গিয়ে রাজ্য সরকারের প্রতি এমনই দাবি জানালেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী।

পাশাপাশি রাজ্য সরকারের প্রতি বিষােদগার করে তিনি বলেন, সৌমিত্রবাবুর মরদেহ নিয়ে বাংলায় ‘নাটক’ হল। অথচ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার সৌমিত্রবাবুকে বিভিন্ন পদ থেকে অপসারণ করেছিল।

Advertisement

প্রসঙ্গত, এ দিন সকালে সদ্য প্রয়াত সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের গল্ফগ্রিনের বাড়িতে যান অধীর চৌধুরী। সেখানে গিয়ে অভিনেতার পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন। শিল্পীর স্মৃতির উদ্দেশে সম্মান জানানাের পাশাপাশি তাঁর পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান অধীর। এরপরে বাইরে বেরিয়ে রাজ্য সরকারের কাছে তাঁর আবেদন, সৌমিত্রর স্মৃতির উদ্দেশে একটি সংগ্রহশালা নির্মাণ করা হােক। কলকাতার সত্যজিৎ রায় ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ইনস্টিটিউটে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের নামে একটি চেয়ারের নামকরণ যাতে হয় , সে ব্যাপারে তিনি নিজে ভারত সরকারের কাছে আবেদন করবেন বলেও জানিয়েছেন অধীর।

Advertisement

এর সাথে সাথেই তিনি বলেন, এই বাড়িতে আসা তাঁর কাছে তীর্থ দর্শনের মতাে। রাজ্য সরকার এমন একজন অভিনেতাকে তেমন ভাবে সম্মান জানানাের প্রয়ােজন বােধ করেনি বলে অভিযােগ করেন তিনি।

অধীর বলেন, সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের মৃত্যুর পর তাঁর মরদেহ নিয়ে অনেক নাটক হয়ে গেল, রাজনীতি হয়ে গেল কিন্তু যেখানে যেখানে তাঁকে অধিকার দেওয়া হয়েছিল, যে সমস্ত পদে তাঁকে বসানাে হয়েছিল, ২০১১ সালের পর তা একটা একটা করে তার কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া হল। ২০২০ সাল পর্যন্ত অনেক ছােটোখাটো, মাঝারি, এ পাড়ার সে পাড়ার শিল্পীদের সম্মান দেওয়া হয়েছে।

কিন্তু সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, যিনি আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন একজন অভিনেতা এবং শিল্পী, তাকে কিন্তু কখনও এই সরকার একটা ছােটোখাটো, মাঝারি সম্মান দেওয়ার প্রয়ােজন বােধ করেনি।

২০১১ সালে ক্ষমতায় এল তৃণমূল। সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়কে সম্মানিত করার জন্য যে সমস্ত জায়গা ছিল, সবকিছু থেকে তাঁকে বঞ্চিত করে দেওয়া হল। যদিও বঙ্গে ক্ষমতায় আসার এক বছর পরেই সারাজীবনের অবদানের জন্য সৌমিত্রবাবুর হাতে চলচ্চিত্র পুরস্কার তুলে দেয় তৃণমূল কংগ্রেস সরকার। সাংস্কৃতিক তথা বিনােদন জগতের ক্ষেত্রে মুখ্যমন্ত্রীর যে ঘনিষ্ঠ বলয় তৈরি হয়েছিল, সেই সীমানার ধারে কাছে দেখা না গেলেও ২০১৭ সালে সৌমিত্রবাবুকে রাজ্যের সর্বোচ্চ সম্মান বঙ্গবিভূষণ দেওয়া হয়েছিল।

এ দিন এই তথ্য তুলে ধরে তৃণমূলের অন্যতম মুখপাত্র তথা রাজ্যের মন্ত্রী তাপস রায় অধীরকে পাল্টা আক্রমণ করে বলেন, ‘রাজনৈতিক বা অরাজনৈতিক, যে কোনও বিষয় নিয়ে রাজ্য সরকারকে আক্রমণ করার এই প্রবণতাটা আর মানুষ ভাল ভাবে নিচ্ছে না। কোনও বিষয় নিয়ে বেশি বাড়াবাড়ি করলে সেটা তিক্ত হয়ে যায়। অধীর চৌধুরী সেই পথেই হাঁটছেন। মানুষ এর পরে ওঁর কথাকে আর গুরুত্ব দেবে না।’

তিনি অধীৱেৱ তােলা অভিযােগ খণ্ডন করে পাল্টা প্রশ্ন তােলেন, কংগ্রেস কতটা সম্মান দিয়েছে প্রয়াত শিল্পীকে? তিনি বলেন, ‘সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানাতে মুখ্যমন্ত্রী নিজে মরদেহের সঙ্গে হেঁটেছেন। তাঁর নেতৃত্বে আমরাও অনেকেই রবীন্দ্র সদন থেকে কেওড়াতলা শ্মশান পর্যন্ত হেঁটেছি। বামপন্থী নেতাদেরও সেই মিছিলে দেখা গিয়েছিল। অধীরকে বা তাঁর দলের সেরকম কাউকে ওই মিছিলে দেখা গিয়েছিল বলে তাে মনে করতে পারছি না।

Advertisement