করােনা পরিস্থিতি : আজ বৈঠক নবান্নে

রাজ্যজুড়ে বাড়ছে করােনা আতঙ্ক। এই ভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে রাজ্য সরকার একাধিক পদক্ষেপ নিচ্ছে।

Written by SNS Kolkata | March 16, 2020 1:47 pm

প্রতীকী ছবি (Photo: iStock)

রাজ্যজুড়ে বাড়ছে করােনা আতঙ্ক। এই ভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে রাজ্য সরকার একাধিক পদক্ষেপ নিচ্ছে। শিক্ষাক্ষেত্র, স্বাস্থ্য, জনজীবনের পাশাপাশি করােনাভাইরাস প্রভাব ফেলেছে রাজনৈতিক ক্ষেত্রেও। করােনা আতঙ্কে জমায়েত করতে ভয় পাচ্ছেন নেতারা। স্বাভাবিকভাবেই পুরভােটের মুখে থমকে প্রচার। পুরভােটের সময় পিছিয়ে দিল রাজ্য নির্বাচন কমিশন, এমনটাই আর্জিবিরােধী নেতাদের একাংশের। 

এদিকে রাজ্যে করােনা পরিস্থিতি মােকাবিলায় সােমবার বিকেল ৩টেয় নবান্নে একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক হতে চলেছে। রবিবারও করােনা সন্দেহে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে এক বৃদ্ধকে। হাসপাতাল সূত্রে খবর, এই বৃদ্ধের ছেলে ১৫ দিন আগেই বিদেশ থেকে ফিরেছেন। তার শরীরে স্বাসকষ্ট, সর্দি, কাশি সহ অন্যান্য উপসর্গ নজরে আসার পরই ভর্তি করার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা।

এই নিয়ে এখনও পর্যন্ত করােনা সন্দেহে ১০ জনকে ভর্তি করা হয়েছে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে। যদিও এখনও পর্যন্ত করােনা সন্দেহে ৫৮ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হলেও এক জনের শরীরেও করােনাভাইরাসের সন্ধান পাওয়া যায়নি।

করােনাভাইরাসের প্রকোপ রুখতে তৎপর রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরও। রাজ্যের প্রত্যেকটি সরকারি হাসপাতালে সংশ্লিষ্ট দফতরের তরফে একটি নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছে। এই প্রসঙ্গে স্বাস্থ্য অধিকর্তা প্রশাসন অজয় চক্রবর্তী জানান, করােনাভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে স্ট্যান্ডার্ড অপারেশন প্রসিডিওর বা এসওপি তৈরি করেছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। এসওপি’র আওতায় সাধারণ মানুষকে চারটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে।

প্রথম ভাগ অর্থাৎ ‘এ’-র মধ্যে তাদের রাখা হয়েছে যাদের করােনাভাইরাস আক্রান্ত দেশে যাওয়ার রেকর্ড রয়েছে এবং শরীরে জ্বর, সর্দি, কাশির লক্ষণ রয়েছে। এ বিভাগের মধ্যে থাকা ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে সরকারের তরফে আইসােলেশনে রেখে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে। 

দ্বিতীয় বিভাগ অর্থাৎ ‘বি’ বিভাগের মধ্যে তাদের রাখা হবে যাদের বিদেশ যাত্রার কোনও রেকর্ড নেই। কিন্তু জ্বর, সর্দি, শ্বাসকষ্টের মতাে উপসর্গ দেখা যাচ্ছে। এই ব্যক্তিদের মধ্যে কারওর বয়স যদি ৬০ বছরের বেশি হয় এবং তার যদি ডায়াবেটিস বা শাসকষ্টের সমস্যা থাকে সেক্ষেত্রে তাকে আইসােলেশনে রাখা হবে। শুধু তাকে নয় তার পরিবারকেও ১৪ দিন নজরে রাখা হবে। 

তৃতীয় বিভাগ অর্থাৎ ‘সি’ বিভাগে বিদেশ যাত্রার রেকর্ড রয়েছে, কিন্তু কোনও জ্বর বা কাশি বা অন্য কোনও উপসর্গ নেই এই ধরনের ব্যক্তিদের ১৪ দিন আইসােলেশনে রাখা হবে।

যাদের বিদেশযাত্রা বা সর্দি, কাশি, শ্বাসকষ্টের কোনও লক্ষণ নেই তাদের সর্বশেষে ‘ডি’ বিভাগে রাখা হয়েছে। 

করােনা প্রসঙ্গে সাধারণ মানুষের ওপর নজরদারি চালাতে– এই চারটি বিভাগ করেছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। দেশে প্রথম কোনও রাজ্য করােনা মােকাবিলায় এই ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে। 

এদিকে করােনা আতঙ্কে পুরভােটের প্রচারে পথেঘাটে জমায়েত করতে ভয় পাচ্ছেন সমস্ত রাজনৈতিক দলের নেতারাই। সােমবার সমস্ত রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠক করতে চলেছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে, তবে কি করােনা আতঙ্কে পিছিয়ে যাবে পুরভােট?

এদিকে করােনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ে সােমবার ফের নবান্নে একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকের আয়ােজন করা হয়েছে। ভবিষ্যতে এই ভাইরাস রােখার ক্ষেত্রে রাজ্য আরও কি কি পদক্ষেপ নিতে পারে বা বর্তমানে রাজ্যের পরিস্থিতির সামগ্রিক পর্যালােচনা করা হবে এদিনের বৈঠকে, সূত্রের খবর এমনটাই। পাশাপাশি, শহরের পরিষ্কার- পরিচ্ছন্নতার দিকে বিশেষ নজর রাখতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কাউন্সিলরদের।