বিস্ফোরক মমতা: করােনার পরে কৃষি বিল ‘মরােনা’, রাজ্যজুড়ে চলবে ধর্না

অগণতান্ত্রিক উপায়ে রাজ্যসভায় দু’টি কৃষি বিল পাশ এবং তার প্রতিবাদ করায় আট সাংসদকে সাসপেন্ড করার ঘটনাকে তীব্রভাবে নিন্দা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

Written by SNS Kolkata | September 22, 2020 2:18 pm

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Photo: IANS)

অগণতান্ত্রিক উপায়ে রাজ্যসভায় দু’টি কৃষি বিল পাশ এবং তার প্রতিবাদ করায় আট সাংসদকে সাসপেন্ড করার ঘটনাকে তীব্রভাবে নিন্দা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সােমবার নবান্নের সাংবাদিক বৈঠকে বিস্ফোরক মমতা বলেন, হিটালারি কায়দায় দেশ চলছে। দেশে ফ্যাসিজম চলছে। 

বিজেপিকে নিশানা করে মমতা বলেন, একে করােনা ঠেকাতে পারল না, তার পরে এই বুলডােজ করা বিল ‘মরােনা’। দেশকে এবার দুর্ভিক্ষের দিকে নিয়ে যাচ্ছে বিজেপি। মহারাষ্ট্রে কৃষকদের আত্মহত্যা করার সময় থেকেই মমতা কৃষকদের পাশে থাকার বার্তা দিয়ে আসছিলেন। কেন্দ্রীয় সরকারের কৃষক বিরােধী ভাবমূর্তিকে সর্বসমক্ষে আনতে চাইছিলেন। রবিবার কৃষি বিল পাস করানাের সূত্র ধরে কৃষকদের জন্য আন্দোলনের পথে হাঁটতে চাইলেন মমতা।

এদিন নবান্ন থেকেই কেন্দ্রীয় সরকারের কৃষি বিল নিয়ে লাগাতার আন্দোলনের ডাক দিলেন মমতা। দলের মহিলা শাখার নেত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যকে নির্দেশ দিলেন আজ মঙ্গলবার গান্ধি মূর্তির পাদদেশে ধর্নায় বসার জন্য। বুধবার এবং বৃহস্পতিবার যথাক্রমে দলের ছাত্র সংগঠন এবং খেতমজুর ও কৃষকদের সংগঠনকেও পর্যায়ক্রমে পথে নামার নির্দেশ দেন মমতা। 

রবিবার কৃষি বিল পাশ করানাে নিয়ে রাজ্যসভা উত্তপ্ত হয়েছে। রাজ্যসভায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অভিযােগ এনে দু’জন তৃণমূল সাংসদ (ডেরেক ও’ব্রায়েন এবং দোলা সেন) ছাড়াও অন্য বিরােধী দলের ছয় জন সাংসদকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। এই ঘটনার নিন্দা করে সুর চড়ান মমতা। তিনি বলেন, রবিবার রাজ্যসভায় কৃষকদের স্বার্থে তৃণমূলসহ অন্য বিরােধী দলের সাংসদ যে বিদ্রোহ দেখিয়েছে সেজন্য আমি গর্বিত। তিনি বলেন, কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে নয়, একথা আমি তৃণমূলের চেয়ারপার্সন হিসেবে বলছি। 

রবিবারের দিনটিকে ‘ব্ল্যাক সানডে’ নামে চিহ্নিত করেন মমতা। তৃণমূল সুপ্রিমাের মতে, তৃণমূলসহ বিরােধীরা অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছে। মুখ বুজে সবকিছু মেনে নেওয়া বিরােধীদের কাজ নয়। বিজেপি ক্ষমতার জোরে, ‘ডিভিশন’ করতে না দিয়ে ধ্বনিভােটে কৃষিবিল পাস করিয়েছে। 

মমতা বলেন, করােনা ঠেকাতে পারল না। এবার দেশে দুর্ভিক্ষ আনতে চাইছে মােদি সরকার। যেমন, ১৯৪৩ সালে হয়েছিল। কৃষকদের জমি কেড়ে নেওয়ার চক্রান্ত চলছে। খেতমজদুর ও কৃষকদের অধিকারে হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে। আলু, পেঁয়াজ সব দেশের বাইরে পাঠিয়ে দিচ্ছে। আগে ফসলের দাম বাড়লে রাজ্য সরকার মনিটরিং করতে পারত। এখন রাজ্যের সব ক্ষমতা কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। বিজেপি মজুতদার, কালােবাজারিদের সরকার হয়ে গিয়েছে বলে মন্তব্য করেন তৃণমূল নেত্রী। 

কেন্দ্রকে ঠুকে মমতা এদিন বলেন, গায়ের জোরে গণতন্ত্রকে হত্যা করা হল। যারা মানুষের স্বার্থে প্রতিবাদ করেছেন, সেইসব সাংসদদের সাসপেন্ড করেই ক্ষান্ত হয়নি। তার ওপরে নিন্দা প্রস্তাবও এনেছে। এই ঘটনায় দেশের মানুষ ছি ছি করছে। 

মমতা এদিন সব রাজনৈতিক দলকে আন্দোলন গড়ে তােলার জন্য ডাক দিলেন। তিনি বলেন, প্রয়ােজনে তৃণমূল কংগ্রেস পেছনের সারিতে থাকবে। কাসর ঘন্টা বাজিয়ে স্লোগান দেবে। বিজেপি সরকার, আর নেই দরকার। 

দিল্লিতে কৃষিবিল নিয়ে ইতিমধ্যেই আলােচনা শুরু হয়েছে। মমতা সােমবার নবান্নে বলেন, সব রাজনৈতিক দলগুলাে এক হয়েছে কৃষক ইস্যুতে। আগামী দিনে শ্রমিক ইস্যুতেও সব রাজনৈতিক দল এক হবে। কৃষকদের ওপর বজ্রাঘাত, শ্রমিকদের ওপর প্রত্যাঘাত। সর্বস্তরের মানুষকে প্রতিবাদে সামিল হতে আহ্বান জানান মমতা।