বুধবার ডায়মন্ড হারবারে নির্বাচনী সভায় বিদ্যাসাগরের মুর্তি ভাঙা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মােদি কোনও ব্যাখ্যা না দিলেও বৃহস্পতিবার বিকেলে মথুরাপুর লােকসভার প্রার্থী শ্যামাপ্রসাদ হালদারে প্রচারে এসে পরিষ্কার জানিয়ে দেন, তিনি জেনেছেন বিদ্যাসাগরের মূর্তি কারা ভেঙেছে। তাদের শীঘ্রই ধরা হবে এবং কঠোর শাস্তি দেওয়া হবে।
তবে এটাও ঠিক, এ রাজ্যে গণতন্ত্রের বদনাম হচ্ছে। সারদানারদের মতাে বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙার সিসিটিভি ফুটেজও নাকি সরিয়ে ফেলা হয়েছে। বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙার ঘটনা শুধু বাংলার নয়, সারা দেশের লজ্জা। কষ্ট পেয়েছে সকলে। এদিন প্রধানমন্ত্রী লক্ষ্মীকান্তপুর স্টেশনের কাছে উল্লোন রামলােনপুরে বিবেকানন্দ সেবাকেন্দ্র ও শিশুউদ্যানে সভা করলেন। সভাস্থলে লক্ষাধিক মানুষ ছাড়াও পথে হেলিপ্যাড চত্বরে অগণিত মানুষ দেখে আপ্লুত প্রধানমন্ত্রী।
Advertisement
মঞ্চের কাছে থাকা গাছগুলিতে মানুষকে উঠে যেতে দেখে প্রধানমন্ত্রীই অনুরােধ করেন, আপনারা সকলে চোট পেলে আমার লাগবে। প্রধানমন্ত্রীর আবেদনে জনতা নেমে আসে গাছ থেকে। বাংলার নানা হিংসাত্মক ঘটনা থেকে আঘাত পাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রীও। তিনি বলেন, এই বাংলা স্বামী বিবেকনন্দ, শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জির। এখানকার সংস্কৃতি সকলের অনুসরণযােগ্য। সেই বাংলায় যা হচ্ছে, তা লজ্জার। গত চারদিন ধরে নির্বাচনী প্রচারকে ঘিরে যা হচ্ছে, তা দেখছে সমগ্র দেশ।
Advertisement
তবে ডায়মন্ড হারবার-মথুরাপুরে যেভাবে সাধারণ মানুষ এত কষ্ট করে সভায় এসে বসে থাকছেন, তা দেখে বলা যায় এই দেশের সেবকরূপে কাজ করার সুযােগ পেলে গর্বিত হবেন। তিনি বলেন, ‘তৃণমুলের গুন্ডারা রাজ্যকে নরক বানিয়ে হিংসা ছেড়েছে। মমতাদিদি কতদূর যেতে পারেন আমরা দেখব। বিদ্যাসাগরের মূর্তি আমরা গড়ে দেব।’ এদিন মন্দিরবাজার অঞ্চলের এই সভায় উপস্থিত ছিলেন মুকুল রায়, সুরেশ পূজারি, জেলা সভাপতি (পশ্চিম) অভিজিৎ দাস (ববি) প্রমুখ।
এদিন প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, রাজ্যের অনেক উন্নয়নে ‘স্পিড় ব্রেকার’ বসাচ্ছেন দিদি। কেন্দ্রীয় যােজনার নামগুলি রাজ্যের নামে করছে। গরিব পরিবারকে ৫ লক্ষ টাকা, অসুস্থ হলে সাহায্যে বাদ সাধছেন। অথচ রাজ্যে ভাইপােকে নিয়ে সিন্ডিকেট চালাচ্ছেন। আবার বলছেন, ‘আমাকে জেলে পুরবে। দিল্লির অফিস দখল করবে। বাংলার মানুষ সবকিছুর উত্তর দেবে ২৩ মে।’ কথা দিলেন, আবার সরকারে এলে মৎস্যজীবীদের কথা ভেবে তাদের সমস্যা দুর করতে আলাদা মৎস্য মন্ত্রণালয় করবেন। গঙ্গাসাগরে নদীর উপর সেতু গড়ে তা সড়কপথের সঙ্গে জুড়বেন। কিষানমণ্ডিও হবে মথুরাপুরে। এছাড়া হলদিয়া বারাণসী জলপথ হলে কাজের সুযােগ বাড়বে।
‘বাংলার মানুষকে গণতন্ত্রের সুযােগ করে দিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে সারা রাজ্যে ঘুরেছেন তৃণমূলের বহু নেতা। কারণ বাম আমলে গণতান্ত্রিক পরিবেশ শেষ হয়ে যাচ্ছিল। ‘পাপ’ করেছি। এখন তার প্রায়শ্চিত্ত করছি।’ এদিন প্রধানমন্ত্রীর সভায় জানালেন, একদা তৃণমূল কংগ্রেসের চাণক্য মুকুল রায়। তিনি বলেন, ২০০৩ সালেও বামেদের ভােট দেখেছি। কিন্তু ২০১৯-এর পঞ্চায়েত ভােট সব সন্ত্রাসকে ছাড়িয়ে গেছে বিদ্যাসাগরে মুর্তি আমরা ভাঙিনি দায়িত্ব নিয়ে বলছি। আর বলছি, মমতার মাথা খারাপ হয়ে গেছে। প্রধানমন্ত্রী হবার স্বপ্ন দেখছে। উনি আসলে সবাইকে জােকরা সার্কাস দলের এক জোকার।’
Advertisement



