• facebook
  • twitter
Saturday, 6 December, 2025

গরু পাচারকাণ্ডে গ্রেফতার বিএসএফ কমান্ডান্ট সতীশ কুমার

গরু পাচার কাণ্ডে গ্রেফতার করা হল বিএসএফ কামান্ডান্ট সতীশ কুমারকে। সিবিআই সূত্রের খবর, তদন্তে অসহযােগিতা করার কারণে সতীশ কুমারকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি (Photo; iStock)

গরু পাচার কাণ্ডে গ্রেফতার করা হল বিএসএফ কামান্ডান্ট সতীশ কুমারকে। সিবিআই ম্যারথন জিজ্ঞাসাবাদের পর সতীশ কুমারকে গ্রেফতার করে। সিবিআই সূত্রের খবর, তদন্তে অসহযােগিতা করার কারণে সতীশ কুমারকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

মঙ্গলবার, সতীশ কুমারকে নিজাম প্যালেসে বেলা ১১ টার পর থেকে প্রায় তিন দফা জেরা করা হয়। সিবিআই সূত্রের খবর, এই ম্যারাথন জেরাতে মূলত সতীশ কুমারকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছে গরু পাচার কাণ্ডের টাকা কোন কোন প্রভাবশালীদের কাছে গিয়েছে। কারণ সিবিআইয়ের কাছে তথ্য রয়েছে, গরু পাচার কাণ্ডের মূল পাণ্ডা এনামুল হকের সঙ্গে বিএসএফ কর্তা সতীশ কুমারের সরাসরি যােগাযােগ ছিল। ২০১৭ সালে যখন তিনি মুর্শিদাবাদ রেঞ্জে কর্মরত ছিলেন তখন তিনি গরু পাচার করার কাজে এনামুল ও তার বাহিনীকে সুরক্ষা দিতেন।

Advertisement

তার কলমের খোঁচাতে গরুকে বাছুর হিসাবে দেখিয়ে, অনেক কম দামে নিলাম থেকে গরু কিনে নিয়ে তা বাংলাদেশে পাচার করা হত। এই গরু পাচারের কাজে সাহায্য করার জন্য এনামুলের কাছ থেকে তিনি কোটি কোটি টাকা রােজগার করেছেন বলে সিবিআই সূত্রের খবর। তার বহু নামি ও বেনামী সম্পত্তির হদিস পেয়েছে তদন্তকারী অফিসাররা।

Advertisement

ইতিমধ্যেই তার ৩০ থেকে ৩৫ কোটি টাকা সম্পত্তির হদিস পেয়েছে সিবিআই তদন্তকারীরা। দিল্লি এবং ঝাড়খণ্ডে  তার সম্পত্তির হদিস পাওয়া গিয়েছে বলে সিবিআই সূত্রের খর। মালদা, মুর্শিদাবাদ, বসিরহাট এলাকাতে গরু পাচারের যে কর্মকাণ্ড চলতাে তাতে পুরােপুরি মদত দিত এই বিএসএফ কর্তা বলে সূত্রের খবর। এবং সিবিআইয়ের কাছে খবর রয়েছে ২০১৭ সাল থেকে ২০১৯ সাল অবধি গরু পাচার চক্রের টাকা থানা স্তর থেকে শুরু করে পুলিশ আধিকারিক এমনকি আইপিএস অফিসারদের কাছেও পৌঁছত।

শুধু তিনিই নন, আরও অনেক বিএসএফ অফিসাররাই এই গরু পাচার চক্র থেকে টাকা পেত বলে খবর রয়েছে তদন্তকারীদের কাছে। তদন্তকারীদের সিবিআইয়ের দুর্নীতি দমনকারী শাখার তদন্তকারী অফিসাররা মূলত সতীশ কুমারকে এবং এনামুল হককে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানতে চাইছে কোন কোন প্রভাবশালী ব্যক্তির কাছে এই গরু পাচার চক্রের টাকা পৌঁছাত।

সূত্রের খবর, এই বিষয় সতীশ কুমারকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে অনেক প্রশ্নের উত্তরই তিনি এড়িয়ে গিয়েছেন বা জবাব দেননি বলে সিবিআই সূত্রের খবর। এই কারণেই সতীশ কুমারকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চাইছে সিবিআই। গরু পাচার কাণ্ডের এফআইআর এও সতীশ কুমারের নাম সবার প্রথমে রয়েছে। এই মামলার তদন্তে সতীশ কুমারের সল্টলেকের ফ্ল্যাটেও তল্লাশি চালায় সিবিআই।

ইতিমধ্যেই গরু পাচার কাণ্ডের মূল পাণ্ডা এনামুলকেও দিল্লি থেকে গ্রেফতার করেছিল সিবিআই। কিন্তু আদালত থেকে এনামুল জামিন পেয়ে যায়। তারপর জামিনের মেয়াদ শেষ হলে আত্মসমর্পণের জন্য তিনি নিজাম প্যালেসেও আসেন। কিন্তু তার করােনা পজিটিভ হওয়ায় তাকে ১৪ দিনের হােম আইসােলেশনে পাঠান হয়েছে। তারপর তিনি নিজাম প্যালেসে এসে গােয়েন্দাদের সঙ্গে কথা বলবেন। আগেও তিন বার সতীশ কুমারকে নােটিশ পাঠিয়েছিল সিবিআই।

কিন্তু তিনি তখন সিবিআই দফতরে হাজিরা দেননি। মঙ্গলবার তিনি নিজাম প্যালেসে আসেন । এবং সিবিআই তাকে টানা ৭ ঘণ্টা জেরা করার পর গ্রেফতার করে। সতীশ কুমার বর্তমানে ছত্তিশগড়ের রায়পুরে কর্মরত ছিলেন। কালকে সতীশ কুমারকে আদালতে তুলবে সিবিআই।

Advertisement