কোচবিহার জেলার গোঁসাইরহাট কালী মন্দিরে পুজো দিতে এসে স্থানীয় বাসিন্দাদের বিক্ষোভের মুখে পড়লেন শীতলকুচির বিজেপি বিধায়ক বরেণচন্দ্র বর্মন। যদিও বিজেপির দাবি, পুজো দিয়ে বের হওয়ার সময় মন্দিরের সামনে বিধায়ককে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা-কর্মীরা। এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে রাজ্যের শাসকদল। তৃণমূলের পাল্টা দাবি, রাজ্যের প্রতি কেন্দ্রের বঞ্চনার অভিযোগ তুলে এলাকাবাসী বিক্ষোভ দেখান। এই নিয়ে বিধায়কের সঙ্গে তাঁদের বচসা হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ঘটনাস্থলে আসে শীতলকুচি থানার পুলিশ।
এই ঘটনার সঙ্গে তৃণমূল কোনওভাবে জড়িত নয় বলেই দাবি করেছেন জেলা তৃণমূল মুখপাত্র তথা কোচবিহার কেন্দ্রে প্রাক্তন সাংসদ পার্থপ্রতীম রায়। তিনি বলেন, ‘গত ৪ বছরে কোনও কাজ করেননি। বিধায়কের দেখা পাননি স্থানীয়রা। এলাকায় উন্নয়নমূলক কাজ, স্কলারশিপের ফর্ম সইয়ের জন্য পাওয়া যায় না। তাই মানুষ বীতশ্রদ্ধ। মানুষ প্রশ্ন করেছেন, এতদিন কোথায় ছিলেন? এই ঘটনার সঙ্গে তৃণমূল কোনওভাবে জড়িত নয়। সাধারণ মানুষ বিক্ষোভ দেখিয়েছেন।’
গুরু পূর্ণিমা উপলক্ষে বৃহস্পতিবার গোঁসাইহাট বাজারের কালীমন্দিরে পুজো দিতে যান শীতলকুচির বিজেপি বিধায়ক বরেনচন্দ্র বর্মন। অভিযোগ, সেই সময় তাঁকে ঘিরে ধরে বিক্ষোভ দেখানো হয়। ‘গো ব্যাক’ স্লোগানও দেওয়া হয়। তাঁর নিরাপত্তারক্ষী ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি সামাল দেয়। বিজেপি বিধায়কের দাবি, তিনি কোনও দলীয় কর্মসূচিতে যোগ দিতে আসেননি। বরেণচন্দ্র বর্মন বলেন, ‘গুরুপূর্ণিমা উপলক্ষে বৃহস্পতিবার সকালে গোঁসাইরহাট কালীমন্দিরে পুজো দিতে এসেছিলাম। এটা নিয়েও জঘন্য রাজনীতি শুরু হয়েছে। মানুষ এর জবাব দেবে।’
কোচবিহার জেলা পরিষদের সদস্য শেফালী বর্মনের অভিযোগ, বিধায়ক ভোটে জেতার পর আর এলাকায় আসেনি। কেন্দ্র টাকা বন্ধ করায় একশো দিনের কাজ পাচ্ছেন না এলাকার মানুষ। তাই এলাকার মানুষ ক্ষোভে ফুঁসছেন। তিনি বলেন, ‘ঝামেলা পাকানোর জন্য বৃহস্পতিবার সকালে বিধায়ক এলাকায় আসেন। স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান। এর সঙ্গে তৃণমূলের কোনও যোগ নেই।’
অবশ্য এটাই প্রথম নয়, এর আগেও একাধিকবার এলাকাবাসীর বিক্ষোভের মুখে পড়েছেন শীতলকুচির বিজেপি বিধায়ক বরেণচন্দ্র বর্মন। ২০২৪ সালে পুজোর মুখে বস্ত্র বিতরণ করতে গিয়ে এলাকাবাসীর বিক্ষোভের মুখে পড়েন তিনি। ১০০ দিনের কাজের টাকা চেয়ে বিজেপি বিধায়কের গাড়ি ঘিরে বিক্ষোভ দেখান এলাকাবাসী। বিধায়ক সেবারও দাবি করেন, তৃণমূলের লোকজনই বিক্ষোভ দেখিয়েছে। তিনি বলেছিলেন, ‘রাজ্য সরকার হিসেব দিলেই কেন্দ্র ১০০ দিনের কাজের টাকা দেবে।’
তার আগে ওই বছরেরই মার্চ মাসে লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে গিয়েও বিক্ষোভের মুখে পড়েছিলেন শীতলকুচির বিজেপি বিধায়ক। গত বছর মার্চে কোচবিহার লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী নিশীথ প্রামাণিকের সমর্থনে প্রচারে যান তিনি। ছোট শালবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের ফক্কোরেরহাট এলাকায় পৌঁছতেই বিধায়ককে ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন এলাকার বাসিন্দারা।