বেইজিং, ৯ সেপ্টেম্বর– পোশাক নিয়ে নতুন আইন আনছে চিন । এই আইন নিয়ে ইতোমধ্যে বিতর্কে শুরু হয়ে গেছে দেশটিতে। এই আইনে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, দেশের মানুষের ভাবাবেগে আঘাত করে এমন পোশাক আর পরা যাবে না। কোন পোশাকের কথা বলছে সে দেশের সরকার?
এই খসড়া প্রস্তাব আইনে পরিণত হলে- চিনাদের ভাবাবেগে আঘাত করলে কড়া শাস্তির সঙ্গে জরিমানাও হতে পারে। তবে ঠিক কী পরলে বা করলে নতুন আইন ভাঙা হতে পারে, সে বিষয়ে স্পষ্ট করে খসড়ায় কিছু উল্লেখ নেই।
Advertisement
তবে পোশাক নিয়ে চিন যে খসড়া প্রস্তাব দিয়েছে, তা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন দেশটির বহু মানুষ। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তা নিয়ে মতামত দিয়েছেন তারা।
Advertisement
খসড়ায় বলা হয়েছে, ‘চিনে রাষ্ট্রের ভাবাবেগকে আঘাত করতে পারে বা অবদমিত করতে পারে’ এমন পোশাক বা চিহ্ন পরা যাবে না। এই ধরনের পোশাক পরলে ওই নাগরিকের ১৫ দিন পর্যন্ত জেল বা ৫০০০ ইউয়ান পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে, যা ভারতীয় টাকায় প্রায় ৬৫ হাজার টাকা।
চিনের চীনের ভাবাবেগকে আঘাত করতে পারে, এমন কথা বললে বা প্রতিবেদন লিখলেও একই শাস্তি। সে কথাও লেখা রয়েছে প্রস্তাবে।
চিনের আইনজীবীদের একাংশ মনে করছেন, এই প্রস্তাবের অনেক বিষয়ই স্পষ্ট নয়। এই প্রস্তাব আইনে পরিণত হলে নাগরিকদের মানবিক অধিকার লঙ্ঘিত হতে পারে। ইউনিভার্সিটি অবপলিটিক্যাল সায়েন্সের অধ্যাপক ঝাও হং জানিয়েছেন, এই প্রস্তাব আইনে পরিণত হলে বহু মানুষ নিত্য দিন গ্রেফতার হতে পারেন। কোনও পুলিশ কর্মী শত্রুতা চরিতার্থ করতেও এই আইনের ব্যবহার করতে পারেন।
এই প্রসঙ্গে গত বছরের একটি ঘটনার কথা মনে করিয়ে দিয়েছেন ঝাও। তিনি জানিয়েছেন, গত বছর সুঝৌতে এক মহিলাকে আটক করা হয়েছিল। তিনি জাপানের সাবেকি পোশাক কিমোনো পরেছিলেন। সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছিল সেই খবর।
ঝাও জানিয়েছেন, ওই নারীর বিরুদ্ধে ‘ঝগড়া এবং বচসায় উস্কানি’ দেওয়ার অভিযোগ ছিল। এও দাবি করা হয়, জাপানি পোশাক পরেছিলেন বলেই ওসব করছিলেন তিনি।
২০১২ সালে চীনে ক্ষমতায় এসেছেন শি জিনপিং। তার পর থেকেই নাগরিকদের আদর্শ আচরণবিধি নিয়ে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন নির্দেশিকা দিয়েছেন।
চীনের নাগরিকদের কী রকম আচরণ করা উচিত, তা নিয়ে ২০১৯ সালে জিনপিং সরকার একটি নির্দেশিকা জারি করে। তাতে বলা হয়, নাগরিকদের নম্র আচরণ করতে হবে। জিনপিং এবং তার দলের উপর ‘আস্থা’ রাখতে হবে। পায়ে ধুলো লাগিয়ে ঘুরে বেড়ানো চলবে না।
Advertisement



