বায়ু দূষণ দেশের অন্যতম প্রধান সমস্য হয়ে দেখা দিয়েছে। বিভিন্ন রাজ্য গাড়ির দূষণ মাপার জন্য যে ধোঁয়া পরীক্ষা ও গাড়ির ইঞ্জিনের অংশের পর্যবেক্ষণের জন্য আয়না দ্বারা পরীক্ষার ব্যবস্থ ছিল তা বাতিল করেছে। জাতীয় রাজধানী অঞ্চলে বায়ু দূষণ প্রতিরােধে অবিলম্বে অধ্যাদেশ জারি না করলেই নয়। কিন্তু কেন্দ্রে যে দলের শাসন রাজ্যে সেই দলের শাসন না হলেই কোনও আইন বলবৎ করার বিষয়ে মতদ্বৈধতা দেখা দিচ্ছে।
বিগত বেশ কয়েক বছর ধরেই এমন বিভিন্ন বিষয়ে মতবিরােধ লেগেই রয়েছে। সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রের দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদগুলিও প্রতিরােধী আইন বলবতের ক্ষেত্রে অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছে। একারণে কমিশনের নাম কমিশন ফর এয়ার কোয়ালিটি ম্যানেজমেন্ট ইন ন্যাশনাল ক্যাপিটাল রিজিওন অ্যান্ড অ্যাডজয়েনিং এরিয়াজ অর্ডন্যান্স ২০২০ রাখা জরুরি।
Advertisement
ফলে জাতীয় রাজধানী ও সন্নিহিত হরিয়াণা, রাজস্থান, পাঞ্জাব এবং উত্তরপ্রদেশ রাজ্যে দূষণ নিয়ন্ত্রণ আইন কার্যকর করার সুবিধা পাওয়া যাবে। একাধিক সদস্য নিয়ে গঠিত সংশ্লিষ্ট পর্ষদের প্রধানের পদে জাতীয় সরকারের অবসরপ্রাপ্ত কোনও সচিব বা কোনও রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যসচিবকে নিয়ােগ করতে হবে।
Advertisement
এছাড়া কেন্দ্রীয় পরিবেশ মন্ত্রকের প্রতিনিধি এবং রাজ্যগুলির প্রতিনিধিদের সংযুক্ত করতে হবে। এর অতিরিক্ত দুই আধিকারিক বা যুগ্মসচিব এবং কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের সদস্য, ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্রের সদস্য, স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার তিন সদস্য, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউশন ফর ট্রান্সফর্মিং ইন্ডিয়ার সদস্য সহ পাঁচজন টেকনিক্যাল সদস্য থাকবেন।
এছাড়া, কমিশনের বিভিন্ন মন্ত্রকের প্রতিনিধি, ব্যবসায়িক সংগঠনের প্রতিনিধি সহ একাধিক ব্যক্তিকে সদস্য হিসেবে সংযুক্ত করার ক্ষমতা থাকবে। এই ব্যবস্থার ফলে কমিশনের আমলাতান্ত্রিকতার বদনাম ঘােচানাে সম্ভব হবে এবং কাজও হবে দ্রুতগতিতে।
আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে দণ্ড হিসেবে পাঁচ বছর পর্যন্ত জেলহাজত বা এক কোটি টাকা পর্যন্ত জরিমানা বা উভয়ই ঘােষণা করার কমিশনের ক্ষমতা থাকবে। অধ্যাদেশের বলে কমিশন নিয়ন্ত্রণ, শাস্তি ঘােষণা ও কার্যকর করা এবং আধা বিচারবিভাগীয় কাজে অধিকারী হবে। কমিশনের অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে গবেষণা, সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রের সংস্থাগুলির সঙ্গে সমন্বয় সাধন এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কের উন্নতি বিধানে উদ্যোগী হওয়ার অতিরিক্ত ক্ষমতার অধিকারী হবে। এমন সকল ক্ষমতা ও দায়িত্ব দেওয়ার একটিই উদ্দেশ্য হল বায়ু দূষণ নিয়ন্ত্রণ করা। তবে কলকাতায় এই সমস্য থাকলেও এলাকাটি পর্ষদের অধিক্ষেত্রের বাইরে রাখাই যুক্তিযুক্ত হবে।
আরও দুটি বিষয়ে চিন্তা করা জরুরি। অধ্যাদেশের বলে বায়ু দূষণের ক্ষেত্রে কমিশনের অধিক্ষেত্রে অধীনে দেশের সকল দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্যদ নিয়ে আসা এবং বায়ু দূষণ নিয়ে স্বপ্রণােদিত হয়েই ব্যবস্থা গ্রহণ বা কোনও ব্যক্তি বা স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার অভিযােগের ভিত্তিতে অবিলম্বে ব্যবস্থা গ্রহণের ব্যবস্থা নিলে, তা কার্যকর হওয়ার ক্ষেত্রটিও ত্বরান্বিত হবে। শীতের মরসুম আগত, এসময়ে নাগরিকরা পূর্ব বর্ষের বিরক্তিকর স্মৃতি ভুলে নিশ্বাসের সঙ্গে স্বচ্ছ শুদ্ধ বায়ু গ্রহণে আগ্রহী।
Advertisement



