• facebook
  • twitter
Saturday, 27 December, 2025

বাংলা ভাষা বলা অপরাধ নয়, ওড়িশার ঘটনায় প্রতিবাদ মুখ্যমন্ত্রীর

মুর্শিদাবাদের সুতির পরিযায়ী শ্রমিক জুয়েল রানার মৃত্যুতে প্রতিবাদ জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

বিজেপি শাসিত রাজ্যে বাংলা ভাষায় কথা বলার জন্য লাগাতার হামলার মুখে পড়ার অভিযোগ উঠছে। দিল্লিতে সোনালি ও সুইটি বিবিদের বাংলাদেশে ‘পুশব্যাক’ করা নিয়ে উত্তাল হয়ে ওঠে দেশের রাজনীতি। সুপ্রিম কোর্টের কড়া নির্দেশের পর তাঁদের দেশে ফিরিয়ে আনতে বাধ্য হয় কেন্দ্রীয় সরকার। আর এবার ওড়িশায় কাজ করতে গিয়ে বাংলা ভাষায় কথা বলার জন্য মৃত্যু হল সুতির এক পরিযায়ী শ্রমিকের।

তাঁকে ‘বাংলাদেশি’  তকমা দিয়ে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ উঠেছে। এবার মুর্শিদাবাদের সুতির পরিযায়ী শ্রমিক জুয়েল রানার মৃত্যুতে প্রতিবাদ জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর স্পষ্ট বক্তব্য, ‘বাংলা ভাষা বলা কোনও অপরাধ হতে পারে না।’ তিনি আরও বলেন, ‘নিগৃহীত, সন্ত্রস্ত ও অত্যাচারিত পরিযায়ী বাংলাভাষী পরিবারগুলির পাশে রয়েছি। সব রকমের সমর্থনের আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।’

Advertisement

শনিবার এক্স হ্যান্ডলে জুয়েল রানার মৃত্যুর প্রতিবাদে গর্জে ওঠেন মুখ্যমন্ত্রী। এক্সে পোস্টে করে তিনি লিখলেন, ‘প্রতিটি বিজেপি-শাসিত রাজ্যে বাংলাভাষী মানুষের উপর যে নির্মম অত্যাচার ও নিগ্রহ নেমে এসেছে আমরা তাকে তীব্র ধিক্কার জানাচ্ছি। বাংলা ভাষা বলা কোনও অপরাধ হতে পারে না। আমরা নিগৃহীত, সন্ত্রস্ত ও অত্যাচারিত সেইসব পরিযায়ী বাংলাভাষী পরিবারের পাশে আছি, সেই সব পরিবারকে আমরা সমস্ত রকম সমর্থন দেব।’  তিনি পোস্টে জানিয়েছেন, নিহত জুয়েল রানাকে নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ ইতিমধ্যে সুতি থানায় জিরো এফআইআর রুজু করেছে।  ৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তদন্তের স্বার্থে ওড়িশা গিয়েছে রাজ্য পুলিশের একটি দল।

Advertisement

গত ২৪ ডিসেম্বর রাতে সম্বলপুরে জুয়েল রানার সঙ্গে ঘটে যাওয়া সেই দুঃসহ ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে শিউড়ে উঠেছিলেন তাঁরই এক সহকর্মী। হাসপাতালের বেডে শুয়ে শুনিয়েছিলেন সেই দিনের মর্মান্তিক ঘটনার কাহিনি।মুর্শিদাবাদের সুতি ১ নম্বর ব্লকের বাসিন্দা জুয়েল রানা জীবিকার প্রয়োজনে ওড়িশার সম্বলপুরে থাকতেন। বুধবার রাতে প্রায় সাড়ে ৮টা নাগাদ জুয়েল একটি স্থানীয় চায়ের দোকানে যান, যেখানে আগে থেকেই তাঁর দুই বন্ধু উপস্থিত ছিলেন।

তিনজন নিজেদের মধ্যে স্বাভাবিকভাবেই বাংলায় কথা বলছিলেন। অভিযোগ, ঠিক সেই সময় কয়েকজন দুষ্কৃতী সেখানে হাজির হয়। ভাষার কারণে তাঁদের বাংলাদেশি বলে সন্দেহ করা হয় এবং সেই অভিযোগ থেকেই শুরু হয় হেনস্থা ও মারধর। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, নির্মম অত্যাচারের জেরেই ঘটনাস্থলেই জুয়েলের মৃত্যু হয়। পরে তাঁকে সম্বলপুর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও চিকিৎসকেরা মৃত বলে ঘোষণা করেন।

এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই তড়িঘড়ি পদক্ষেপ করে রাজ্য পুলিশ। সুতি থানায় ‘জিরো এফআইআর’ দায়ের করা হয়। গ্রেপ্তার করা হয় ৬ জনকে। পুলিশ সমাজ মাধ্যমে এই খবর জানায়। আর শনিবার এক্স হ্যান্ডলে এনিয়ে পোস্ট করে ক্ষোভ উগড়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুধু তাই পরিবারগুলোর পাশে থাকার বার্তাও দেন মুখ্যমন্ত্রী। মানুষের জীবনের বিনিময়ে কোনও মূল্য হয় না বলে জানান তিনি। সেই সঙ্গে ‘অর্থনৈতিক ক্ষতিপূরণের অঙ্গীকার’ করেন।

 

Advertisement