হংকংয়ের তাই পো অগ্নিকাণ্ডের ভয়ংকর আগুনের ঠিক আগে শ্রমিকদের ধূমপানের ভাইরাল ফুটেজে তোলপাড় গোটা বিশ্ব। সেই ফুটেজ থেকে অগ্নিকাণ্ডের কারণ প্রকাশ্যে এসেছে। জানা গিয়েছে, তাই পো-র ওয়াং ফু কোর্টে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের আগে বহিরাংশে মেরামতির কাজ চলছিল। সেই সময় দু’জন শ্রমিককে দেয়ালের ধারেই নির্লিপ্ত ভঙ্গিতে ধূমপান করতে দেখা গিয়েছে—সেটাই উঠে এসেছে সাম্প্রতিক এক ভিডিও ফুটেজে। ওই শ্রমিকদের কাছাকাছি তখনই ছিল বাঁশের মাচা, নির্মাণের ঢাকনি-জাল এবং দাহ্য উপকরণ। বিশেষজ্ঞদের একাংশ মনে করছেন, ঠিক ওই মুহূর্তেই ঘটতে পারে আগুন ছড়িয়ে পড়ার সূত্রপাত। আর তার কিছুক্ষণের মধ্যেই পুরো বহুতলকে গ্রাস করে ভয়াবহ আগুন, যার জেরে প্রাণ হারাতে হয়েছে বহু মানুষকে। শহরজুড়ে শুরু দেখা দিয়েছে ক্ষোভ ও প্রশ্ন—‘অবহেলা কি এই বিপর্যয়ের মূল?’।
বুধবার দুপুরে ওয়াং ফু কোর্ট কমপ্লেক্সের বহুতলে আগুন লাগে। দমকলকর্মীরা আগুন নেভাতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লড়াই করেন। এরপর যখন তদন্ত শুরু হয়, তখনই প্রকাশ্যে আসে ওই ভিডিও। দেখা যাচ্ছে, কর্মীরা কোনও নিরাপত্তা নিয়ম মানছেন না। তাঁদের পাশেই ঝুলছে দাহ্য মেটেরিয়াল, অথচ সতর্কতার বালাই নেই। দমকল দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, বহুতলের কাঠামোহীন জায়গাগুলিতে নির্মাণ-সংক্রান্ত নেট, শুকনো কাঠামো এবং বাঁশের মাচা আগুন লাগার জন্য বিশেষ ঝুঁকিপূর্ণ ছিল।
Advertisement
দুর্ঘটনার পর স্থানীয় বাসিন্দারা ক্ষোভ ব্যক্ত করেছেন। তাঁদের বক্তব্য, ‘এ ধরনের অসতর্কতা মানুষের জীবন নিয়ে ঠাট্টা করা ছাড়া কিছুই নয়।’ প্রশাসন জানিয়েছে, ভিডিও যাচাই করা হচ্ছে এবং শ্রমিক ও ঠিকাদারি সংস্থার ভূমিকা খতিয়ে দেখা হবে। ইতিমধ্যেই তদন্তের জন্য একটি বিশেষ দল গঠন করা হয়েছে। দমকল বিভাগের প্রাথমিক অনুমান, আগুন লাগার শুরুটা বহিরাংশেই হয়েছিল এবং তা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে ভেতরে।
Advertisement
এই ঘটনায় বহু পরিবার প্রিয়জন হারিয়েছেন। নিহতদের সংখ্যা বাড়তে পারে বলেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছে উদ্ধারকারী দল। আহতদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, ‘সতর্কতা ও নিরাপত্তা বিধির এমন লঙ্ঘন মেনে নেওয়া যায় না। দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ হংকংজুড়ে এখন একটাই প্রশ্ন—মানবিক সুরক্ষার জায়গায় ঢিলেঢালা নজরদারি আর কতদিন চলবে?
Advertisement



