পাকিস্তানের সাম্প্রতিক বিমান হামলার প্রেক্ষিতে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানাল আফগানিস্তান। দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘদিনের টানাপোড়েন নতুন করে চরমে উঠেছে এই ঘটনায়। আফগান সরকার স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, সীমান্তের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় তারা প্রস্তুত এবং ‘সঠিক সময়ে যথাযথ প্রতিক্রিয়া’ জানানো হবে।
সরকারি সূত্রের দাবি, পাকিস্তানের যুদ্ধবিমান খাইবার পাখতুনখাওয়া সীমান্তবর্তী আফগান অঞ্চলে ঢুকে হামলা চালায়। আফগানিস্তানের বক্তব্য, এই হামলায় বহু নিরীহ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ঘটনার তীব্র নিন্দা করে আফগান কর্তৃপক্ষ বলেছে, তারা প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান বজায় রাখতে চায় ঠিকই, তবে দেশের ভূখণ্ডের মর্যাদা ও নিরাপত্তা রক্ষায় কোনও আপস করা হবে না।
Advertisement
আফগান স্বরাষ্ট্র দপ্তরের এক শীর্ষকর্তা বলেন, ‘আমাদের ভূখণ্ডে কোনও ধরনের আগ্রাসনই মেনে নেওয়া হবে না। আমাদের জনগণ নিরাপত্তার অধিকার রাখে। আমরা শান্তি চাই, কিন্তু আমাদের ধৈর্যের মর্যাদা দিতে না পারলে আমরা নীরব থাকব না।’ তিনি আরও বলেন, ‘যদি কেউ আমাদের সীমান্ত লঙ্ঘন করে, আমরা সময়মতো উপযুক্ত তার জবাব দেব।’
Advertisement
বিশেষজ্ঞদের মতে, তালিবান শাসনের পর থেকেই পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের সম্পর্ক অনিশ্চিত। পাকিস্তানের দাবি, সীমান্তবর্তী এলাকায় জঙ্গি সংগঠনের আস্তানা রয়েছে এবং তারাই হামলা চালিয়েছে। তবে আফগানিস্তানের যুক্তি, পাকিস্তান নিজের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ব্যর্থতার দায় অন্যের উপর চাপাচ্ছে।
এদিকে, রাষ্ট্রসঙ্ঘ ও আন্তর্জাতিক মহল এই সীমান্ত উত্তেজনা থেকে সংঘাত বাড়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছে। সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা বিঘ্নিত হওয়ায় পরিস্থিতি মানবিক সংকটে গড়াতে পারে বলেও সতর্ক করা হচ্ছে।
সীমান্তে ইতিমধ্যেই নজরদারি ও নিরাপত্তা বাড়িয়েছে আফগান বাহিনী। স্থানীয় মানুষও আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। আন্তর্জাতিক মহলের প্রশ্ন, দুই পারমাণবিক অস্ত্রধারী প্রতিবেশী দেশের এই সংঘাত কি বৃহত্তর অস্থিরতার ইঙ্গিত?
আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, এখনই যদি কূটনৈতিক পথে সমাধানের চেষ্টা না করা হয়, তাহলে পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে। তবে আফগান সরকারের স্পষ্ট হুঁশিয়ারি— ‘সীমান্ত রক্ষায় তারা উপযুক্ত পদক্ষেপ নিতে একেবারেই পিছপা নয়’।
Advertisement



