টানা ৪৩ দিনের অচলাবস্থার পর অবশেষে স্বাভাবিক ছন্দে ফিরছে মার্কিন প্রশাসন। বুধবার হাউস অফ রিপ্রেজেন্টিটিভসে অর্থবরাদ্দ সংক্রান্ত বিল পাশ হওয়ার পর সেই বিলে স্বাক্ষর করেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এর মধ্য দিয়েই যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে দীর্ঘতম ‘শাটডাউন’-এর আনুষ্ঠানিক ইতি ঘটে।
বিলটি বুধবার হাউসে ২২২-২০৯ ভোটে পাশ হয়। রিপাবলিকান সংখ্যাগরিষ্ঠ হাউসে ডেমোক্র্যাট সদস্যদের অধিকাংশই বিলের বিরোধিতা করেন। তবে সিনেটে (উচ্চকক্ষ) মঙ্গলবারই বিলটি পাশ হয়েছিল ৬০-৬০ ভোটে। আট জন ডেমোক্র্যাট সদস্য রিপাবলিকানদের সঙ্গে এক হয়ে বিলের পক্ষে ভোট দেন। তাঁদের সমর্থন না থাকলে বিলটি পাশ করা সম্ভব হত না।
Advertisement
বিল পাশের পর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সরাসরি বিরোধী ডেমোক্র্যাটিক পার্টিকে দায়ী করে বলেন, ‘যখন ২০২৬ সালের মধ্যবর্তী নির্বাচন আসবে, তখন আমেরিকার মানুষ ভুলবেন না, ডেমোক্র্যাটরা আমাদের দেশের সঙ্গে কী করেছিল।’
Advertisement
এদিকে এই অচল্যাবস্থার জেরে টানা দেড় মাসেরও বেশি সময় ধরে বন্ধ ছিল মার্কিন ফেডারেল সরকারের নানা দপ্তরের কাজকর্ম। স্বাস্থ্য, পরিবহন, বিমান চলাচল, প্রশাসনিক ব্যবস্থা, সব ক্ষেত্রেই দেখা দেয় বড়সড় সমস্যা। জরুরি পরিষেবা অবশ্য চালু ছিল। বেশিরভাগ সরকারি কর্মী বেতন ছাড়াই কাজ করছিলেন। বহু বিমানের ফ্লাইট বাতিল হয়, যাত্রীদের অসুবিধা হয়।
প্রতি বছর ১ অক্টোবর থেকে মার্কিন সরকারের অর্থবর্ষ শুরু হয়। ওই সময়ের মধ্যেই কংগ্রেসে ব্যয়বরাদ্দ সংক্রান্ত চুক্তি সম্পন্ন না হওয়ায় চলতি বছর ১ অক্টোবর থেকেই শুরু হয় ‘শাটডাউন’। সেনেটে বিল পাশের আগে ডেমোক্র্যাটরা শর্ত দেন, নিম্ন আয়ের মানুষের স্বাস্থ্যবিমা প্রিমিয়ামে সরকার যেন ভর্তুকি দেয়। কিন্তু সেই দাবি নিয়ে দর কষাকষির মাঝেই দলের আট জন সিনেটর রিপাবলিকানদের পাশে দাঁড়ানোয় অভ্যন্তরীণ বিরোধও তৈরি হয়েছে ডেমোক্র্যাট শিবিরে।
শেষ পর্যন্ত প্রশাসনিক অচলাবস্থা কাটাতে রিপাবলিকানদের উদ্যোগে তিনটি সংশোধনী বিল একত্র করে তহবিল বরাদ্দের প্রস্তাব আনা হয়। সিনেট ও হাউস, উভয় কক্ষে বিল পাশ হওয়ার পর প্রেসিডেন্টের স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে ৪৩ দিনের অচলাবস্থার ইতি ঘটে। ট্রাম্প শিবির এখন স্বস্তির নিশ্বাস ফেললেও, রাজনৈতিক মহলের বক্তব্য, এই শাটডাউন দেশের অর্থনীতি ও প্রশাসনের উপর গভীর প্রভাব ফেলবে।
Advertisement



