• facebook
  • twitter
Wednesday, 17 December, 2025

বিষাক্ত বাতাস, চিকিৎসকের পরামর্শ— ‘যত দ্রুত সম্ভব, রাজধানী ছাড়ুন’

বায়ু পরিষ্কারক যন্ত্র কি সত্যিই কার্যকর? চিকিৎসকের মতে, ভালো মানের বায়ু পরিষ্কারক যন্ত্র একটি ঘরের বাতাস কিছুটা সময়ের জন্য পরিষ্কার রাখতে পারে।

প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র

বিষাক্ত দিল্লির বাতাস, দূষণে নাজেহাল বাসিন্দারা, চিকিৎসকের পরামর্শ— ‘যত দ্রুত সম্ভব, আপাতত রাজধানী ছাড়ুন’

দিল্লি, ২ নভেম্বর — ঘন ধোঁয়ায় ঢেকে আছে রাজধানীর আকাশ। গত এক সপ্তাহ ধরে দিল্লির বায়ুর সামগ্রিক গুণগত মান ‘খারাপ’ থেকে ‘খুব খারাপ’ পর্যায়ে। বহু এলাকায় সেই মাত্রা খুবই ‘গুরুতর’। রবিবার সকালে দিল্লির মোট বায়ুর গুণগত মানের সূচক ছিল ৩৭৭— যা স্পষ্টতই ‘খুব খারাপ’ শ্রেণিতে। সকাল ১০টার পর আনন্দ বিহার, চাঁদনি চক, নেহরু নগর, আর কে পুরম, রোহিনির মতো অঞ্চলে সূচক ৪০০ ছাড়িয়ে যায়। অর্থাৎ সেসব জায়গার বাতাস গুরুতরভাবে বিষাক্ত স্তরের হয়ে ওঠে।

Advertisement

এই ভয়াবহ দূষণে রাজধানীর বাসিন্দাদের মধ্যে উৎকণ্ঠা বাড়ছে। শ্বাসকষ্ট, দীর্ঘস্থায়ী কাশি, চোখ জ্বালা, মাথা ঘোরা, বুক জ্বালা থেকে শুরু করে নানারকম শারীরিক সমস্যায় ভুগছেন বহু মানুষ। বিশেষত বয়স্ক, শিশু ও ফুসফুস–হৃদরোগে আক্রান্তরা বিপদের সম্মুখীন।

Advertisement

ফুসফুস বিশেষজ্ঞ ডা. গোপীচন্দ খিলনানি জানিয়েছেন, যাঁদের পক্ষে সম্ভব, তাঁদের কিছুদিনের জন্য দিল্লির বাইরে দূষণমুক্ত এলাকায় থাকার পরামর্শই একমাত্র রেহাইয়ের উপায়। তাঁর কথায়, ‘সবাই শহর ছেড়ে থাকতে পারবেন না। কিন্তু যাঁদের ফুসফুস বা হৃদযন্ত্রের রোগ আছে, অক্সিজেনের উপর নির্ভর করেন, কিংবা অন্যত্র থাকার সুযোগ রয়েছে, তাঁরা অন্তত ছ’ থেকে আট সপ্তাহ দূষিত পরিবেশের বাইরে থাকুন। এতে শারীরিক জটিলতা অনেকটা কমবে।’

ডা খিলনানি সতর্ক করেছেন, বায়ু দূষণ শুধু ফুসফুস নয়— হৃদযন্ত্র, মস্তিষ্ক, কিডনি, অন্ত্র, হরমোন– এমনকি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকেও প্রভাবিত করে। এইমসের এক গবেষণায় দেখা গিয়েছে, দূষণের কারণে শিশুদের ফুসফুস ঠিক মতো বেড়ে উঠতে পারে না। আগে ফুসফুসের দীর্ঘস্থায়ী রোগের মূল কারণ ছিল ধূমপান। এখন তার অর্ধেকই হচ্ছে ঘরের ভিতর ও বাইরের দূষণের কারণে। এমনকি ধূমপান না করেও বহু মানুষ ফুসফুসের ক্যান্সারে আক্রান্ত হচ্ছেন।

এবার প্রশ্ন— বায়ু পরিষ্কারক যন্ত্র কি সত্যিই কার্যকর? চিকিৎসকের মতে, ভালো মানের বায়ু পরিষ্কারক যন্ত্র একটি ঘরের বাতাস কিছুটা সময়ের জন্য পরিষ্কার রাখতে পারে। তবে তা লাগাতার চালিয়ে রাখতে হবে এবং ঘরটির জানলা–দরজা বন্ধ রাখতে হবে। বারবার দরজা–জানলা খোলা হলে এই যন্ত্রের কার্যকারিতা কমে যায়। যদিও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এই যন্ত্রকে খুব কার্যকর মনে করে না। তবু শ্বাসযন্ত্র বা হৃদরোগে আক্রান্তদের জন্য এটি সাময়িক স্বস্তি দিতে পারে।

রাজধানীর দূষণ এখন এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে, যেখানে শ্বাস নেওয়াও ঝুঁকিপূর্ণ। চিকিৎসকদের পরামর্শ, যাঁদের সামর্থ্য আছে, তাঁরা শীতকালের এই ভয়াবহ দূষণের সময় কিছুদিন দিল্লির বাইরে কাটিয়ে আসুন। এতে শরীরে দূষণের কুফল অনেকটাই কমবে।

Advertisement