• facebook
  • twitter
Friday, 5 December, 2025

পাঁচ মাসে চারবার ধর্ষণ করেছে পুলিশ, হাতের পাতায় নোট লিখে আত্মঘাতী তরুণী চিকিৎসক

বৃহস্পতিবার রাতে আত্মঘাতী হন ওই তরুণী চিকিৎসক

পুলিশ আধিকারিকের কাছে টানা ধর্ষণের শিকার হয়ে মৃত্যুর পথ বেছে নিলেন এক  তরুণী চিকিৎসক। তবে মৃত্যুর আগে নিজের সঙ্গে হওয়া অত্যাচারের গোটা ঘটনা নিজের হাতের তালুতে লিখে রেখে গেছেন ওই চিকিৎসক।
ঘটনাটি মহারাষ্ট্রের সাতারা জেলার।  জানা গিয়েছে, মৃত চিকিৎসক ফালতন সাব-ডিভিশন হাসপাতালের মেডিক্যাল অফিসার হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
এর আগে, গত ১৯ জুন তিনি ফালতনের ডেপুটি সুপারিনটেনডেন্ট অফ পুলিশ (ডিএসপি)-এর কাছে লিখিতভাবে অভিযোগ করেছিলেন। সেই চিঠিতে তিনি তিনজন পুলিশ অফিসারের নাম উল্লেখ করে যৌন হেনস্থা ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ জানান। অভিযুক্তদের মধ্যে ছিলেন এসআই গোপাল বাদনে, সাব-ডিভিশনাল পুলিশ ইন্সপেক্টর পাতিল এবং অ্যাসিস্ট্যান্ট পুলিশ ইন্সপেক্টর লাডপুত্রে।

বৃহস্পতিবার রাতে আত্মঘাতী হন ওই তরুণী চিকিৎসক। মৃত্যুর আগে তিনি নিজের বাঁ হাতে লেখেন, “আমার মৃত্যুর জন্য দায়ী পুলিশ ইনস্পেক্টর গোপাল বাদনে। আমাকে চারবার ধর্ষণ করেছেন তিনি। পাঁচ মাস ধরে আমাকে শারীরিক এবং মানসিকভাবে তিনি নির্যাতন করেছেন।” এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই অভিযুক্ত পুলিশ আধিকারিককে সাসপেন্ড করা হয়েছে।

Advertisement

চিকিৎসকের মৃত্যুর পরেই জানা যায়, স্থানীয় ডিএসপির কাছে ফল্টনের তিন পুলিশ আধিকারিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছিলেন তিনি। প্রবল মানসিক চাপ দিয়েছেন বাদনে-সহ তিনজন পুলিশ আধিকারিক, এই মর্মে চিঠি লেখেন চিকিৎসক। সেই চিঠি দেওয়ার মাত্র মাসচারেকের মধ্যেই চরম সিদ্ধান্ত নেন চিকিৎসক।

Advertisement

গোটা ঘটনার পর শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা।  মহাজুটি এনডিএ সরকারকে তুলোধোনা করেছে কংগ্রেস। এক্স হ্যান্ডলে কং নেতা বিজয় নমদেবরাও ওয়াদেত্তিওয়ার লেখেন, ‘রক্ষকই তো ভক্ষক হয়ে গেল। পুলিশের কাজ রক্ষা করা, কিন্তু তারাই তো মহিলা চিকিৎসককে নির্যাতন করেছে। আসলে মহাজুটি সরকার এইভাবে পুলিশকে ঢাল করছে, তাই পুলিশও অত্যাচার চালাচ্ছে।’

অন্যদিকে, বিজেপি নেতৃত্ব জানিয়েছে, পুরো ঘটনাটির সুষ্ঠু তদন্ত হবে। সিআইডি তদন্ত শুরু হয়েছে, এফআইআর নথিভুক্ত হচ্ছে। এও জানান হয়েছে, চিকিৎসক আগেও যে অভিযোগ করেছিলেন, তা নিয়েও তদন্ত হবে। কোনও মহিলা যেন এমন কঠোর সিদ্ধান্ত না নেন, তার জন্য সরকার সবরকম সহায়তা দিতে প্রস্তুত।

ঘটনাটির পর মহারাষ্ট্র রাজ্য মহিলা কমিশনের তরফে সাতারার পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, দ্রুত অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে সম্পূর্ণ ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত করতে। কমিশন প্রশ্ন তুলেছে, “চিকিৎসক আগেই অভিযোগ জানিয়েছিলেন, তবুও কেন তাঁকে সাহায্য করা হয়নি?” চার মাস আগে অভিযোগ জানিয়েছিলেন চিকিৎসক। তা সত্ত্বেও কেন অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হল না? গোটা ঘটনা নিয়ে এক্স হ্যান্ডেলে ক্ষোভ উগরে দিয়েছে তৃণমূলও।

Advertisement