পূর্ব ইউরোপে শান্তি ফেরাতে হিমশিম খাচ্ছেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সম্প্রতি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে আলাস্কায় দীর্ঘ আলোচনার পর ট্রাম্প আশাবাদী হয়ে উঠে বলেছিলেন, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠকে রাজি হয়েছেন পুতিন। এমনকি প্রয়োজন পড়লে সেই বৈঠকে ট্রাম্প নিজেও উপস্থিত থাকতে পারেন বলে জানিয়েছিলেন। তবে ট্রাম্পের এই দাবি ঘিরে তৈরি হওয়া আশার আলো নিভিয়ে দিলেন রাশিয়ার বিদেশমন্ত্রী সেরগেই লাভরভ।
সম্প্রতি মার্কিন সংবাদমাধ্যম এনবিসি নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে লাভরভ সাফ জানান, পুতিন ও জেলেনস্কির মধ্যে কোনও বৈঠকের পরিকল্পনা নেই। তাঁর কথায়, ‘এই ধরনের উচ্চপর্যায়ের বৈঠকের আগে একটি নির্দিষ্ট আলোচ্য বিষয় বা অ্যাজেন্ডা থাকা প্রয়োজন। কিন্তু এখনও পর্যন্ত তেমন কোনও বিষয় খুঁজে পাওয়া যায়নি। ফলে বৈঠক আয়োজনের প্রশ্নই ওঠে না।’
Advertisement
লাভরভের এই মন্তব্যই পুতিন-জেলেনস্কি সম্ভাব্য বৈঠক নিয়ে ক্রেমলিনের তরফে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে স্পষ্ট বার্তা বলেই মনে করছেন আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। এদিকে হোয়াইট হাউসে ফিরে ট্রাম্প আবার ইউরোপের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন। তিনি জানান, যুদ্ধ থামাতেআন্তরিক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। যদিও লাভরভের বক্তব্য সামনে আসার পর প্রশ্ন উঠছে, আদৌ কি রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে সমঝোতার কোনও বাস্তব সম্ভাবনা রয়েছে?
Advertisement
এই পরিস্থিতির মধ্যেই আরও একটি মন্তব্য ঘিরে শুরু হয়েছে বিতর্ক। লাভরভ দাবি করেছেন, ইউক্রেনের নিরাপত্তার বিষয়টিতে রাশিয়াও অংশীদার হতে আগ্রহী। যদিও ইউক্রেন ও ইউরোপের নেতারা তা নস্যাৎ করে দিয়েছেন। তাদের বক্তব্য, রাশিয়ার এমন প্রস্তাব অবাস্তব ও বিভ্রান্তিকর।
একই সঙ্গে, ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে ট্রাম্প নিজেও হতাশা গোপন করছেন না। সম্প্রতি ওভাল অফিসে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেছেন, ‘আমি এই পরিস্থিতি নিয়ে একেবারেই খুশি নই।’ তিনি ইঙ্গিত দিয়েছেন, আগামী দু’সপ্তাহের মধ্যে এই বিষয়ে বড় কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।
অন্যদিকে, এনবিসিকে দেওয়া এক পৃথক সাক্ষাৎকারে আমেরিকার ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভান্স দাবি করেছেন, রাশিয়া কিছু গুরুত্বপূর্ণ দাবি থেকে সরে এসেছে। যুদ্ধ শেষে ইউক্রেনের আঞ্চলিক অখণ্ডতা ও নিরাপত্তার নিশ্চয়তার মতো বিষয়েও রাশিয়া নমনীয় হয়েছে বলে তাঁর অভিমত। ভান্স বলেন, ‘পুরোপুরি সমঝোতা এখনও হয়নি, তা হলে তো যুদ্ধই থেমে যেত। তবে কূটনৈতিক পথে অগ্রগতি হচ্ছে। আমরা আশাবাদী।’
সব মিলিয়ে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের জটিলতা কিছুতেই কাটছে না। আর এই পরিস্থিতিতে ট্রাম্পের হস্তক্ষেপ কতটা কার্যকর হবে, তা নিয়ে ফের প্রশ্ন উঠে গেল আন্তর্জাতিক মহলে।
Advertisement



