রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের সমাধান খুঁজতে নতুন উদ্যোগ নিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আলাস্কায় রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠকের পর তিনি প্রস্তাব দিয়েছেন, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিও পুতিনের সঙ্গে খুব শীঘ্রই মুখোমুখি একটি বৈঠক করুক। এমনকি আগামী ২২ অগস্ট, শুক্রবার বৈঠকের সম্ভাব্য তারিখও নির্দিষ্ট করে ফেলেছেন তিনি। রাশিয়ার সরকারি সংবাদ সংস্থা তাস মার্কিন সংবাদমাধ্যম অ্যাক্সিওস-এর রিপোর্ট উদ্ধৃত করে এই খবর জানিয়েছে।
পুতিনের সঙ্গে আলোচনার পরেই জেলেনস্কিকে ফোন করেন ট্রাম্প। পাশাপাশি ব্রিটেন, জার্মানি এবং ফ্রান্সের রাষ্ট্রপ্রধানদের সঙ্গেও কথা বলেন তিনি। সেখানে ট্রাম্প জানান, দ্রুত ত্রিপাক্ষিক বৈঠক আয়োজন করতে চান তিনি। তবে বৈঠকের স্থান বা সময় এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হয়নি।
Advertisement
ট্রাম্প নির্বাচনী প্রচারে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, ক্ষমতায় ফিরলেই ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধ থামাবেন। কিন্তু সাড়ে তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা এই যুদ্ধ এখনও শেষ হয়নি। বাইডেন প্রশাসনের মতো কঠোর মস্কো-বিরোধী অবস্থান না নিয়ে ট্রাম্প কূটনৈতিকভাবে নরম ও কঠোর— দুই ভাবেই ভারসাম্য বজায় রেখে চলেছেন। একদিকে রাশিয়ার তেলের জন্য ভারতের উপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করেছেন, অন্যদিকে আলাস্কায় পুতিনকে লাল গালিচায় স্বাগত জানিয়েছেন। আলাস্কার বৈঠককে ফলপ্রসূ বলেছেন দুই নেতা, কিন্তু যুদ্ধবিরতি বা শান্তিচুক্তির কোনও রূপরেখা সেখানে সামনে আসেনি।
Advertisement
পুতিনের সঙ্গে আলোচনার পর জেলেনস্কি ঘোষণা করেছেন, সোমবার তিনি ওয়াশিংটনে ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা করবেন। ট্রাম্প নিজেও সমাজমাধ্যমে লিখেছেন, যদি সেই বৈঠক সফল হয়, তাহলে তিনি পুতিনের সঙ্গে আবারও বৈঠকে বসবেন। যদিও সরাসরি ত্রিপাক্ষিক বৈঠকের কথা এখনও পর্যন্ত প্রকাশ্যে বলেননি তিনি।
এদিকে নিউ ইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, সোমবারের বৈঠকে ট্রাম্প জেলেনস্কিকে প্রস্তাব দেবেন পূর্ব ইউক্রেনের ডনবাস অঞ্চল রাশিয়ার হাতে তুলে দেওয়ার। খনিজ সমৃদ্ধ এই অঞ্চল দীর্ঘদিন ধরেই মস্কো দাবি করে আসছে। লুহানস্ক ইতিমধ্যেই রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে। কিন্তু ডনেৎস্কে এখনও যুদ্ধ জারি রয়েছে। নিরাপত্তার স্বার্থে ইউক্রেন এই অঞ্চল ছাড়তে রাজি নয়। অতীতে বারবার এই প্রস্তাব খারিজ করেছেন জেলেনস্কি।
তবে ট্রাম্পের দাবি, সংঘর্ষবিরতি দিয়ে যুদ্ধ থামানো সম্ভব নয়, প্রয়োজন পূর্ণাঙ্গ শান্তিচুক্তি। তিনি ইউরোপের নেতাদেরও জানিয়েছেন, ডনবাস রাশিয়াকে ছেড়ে দিলে শান্তির রাস্তা খুলতে পারে। কিন্তু ইউক্রেন যদি রাজি না হয়, তাহলে যুদ্ধ পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠতে পারে বলেই আশঙ্কা করা হচ্ছে।
Advertisement



