• facebook
  • twitter
Friday, 5 December, 2025

স্ক্রিপ্ট ভালো হলে আবার এক সঙ্গে হবে দেব-শুভশ্রী

ধূমকেতু। দেখা মেলে, আবার মিলিয়ে যায়। কিছু ধুমকেতু নিয়মমাফিক ফিরে আসে, বহু বছর বাদে বাদে। হ্যালির ধুমকেতু ৭৬ বছর বাদে বাদে দেখা যায়। আর দেব-শুভশ্রীর ‘ধুমকেতু’ অনেক পথ পেরিয়ে দেখা দিল ৯ বছর পর। কৌশিক গাঙ্গুলির পরিচালনায়। কেমন ছিল দেব-শুভশ্রীর এই ছবির রসায়ন! আবার কি দেখা যাবে দেব-শুভশ্রীর ছবি! ‘ধুমকেতু’ নিয়ে শুভশ্রী-র সঙ্গে কথা বললেন দেবযানী লাহা ঘোষ।

প্রশ্ন: শুটিং একটা সময়ে, ছবি মুক্তি একটা সময়ে। মাঝে কেটে গিয়েছে বেশ কিছু বছর। বহতা স্রোত বদলেছে। এই ছবি মানুষের কাছে আসছে অনেক দিনের অপেক্ষার পর।

শুভশ্রী: একেবারে। দিন নয়, অনেক বছরের৷ আমি বিলিভ করি, সব কিছুর একটা পরিমেয় সময় হয়। সময়ের আগে কিছুই হয় না। সবাই সবার ডেস্টিনি নিয়ে আসে। প্রতিটা ছবিই তার ডেস্টিনি নিয়ে আসে। আমরা যখন কাজ করি, একশো শতাংশ দিয়ে কাজটা করি। কারণ জানি, অনেক মানুষের কাছে কাজটা পৌঁছবে। কখনও ক্র্যাক করে, কখনও ক্র্যাক করে না। মানুষ কিছু কাজ পছন্দ করে, কিছু কাজ করে না৷ সেটা আলাদা ব্যাপার। কিন্তু ‘ধূমকেতু’, একটু স্পেশ্যাল। এত দিন বাদে ছবিটা মুক্তি পাচ্ছে, এর থেকে ভালো আর কী হতে পারে।

Advertisement

প্রশ্ন: কমার্শিয়াল ছবি দিয়ে শুরু। ‘পরিণীতা’ থেকে নিজেকে ভেঙে-চুরে এক অন্যধারার ছবিতে আত্মপ্রকাশ করলে। মানুষ দেখল। তারপর থেকে অন্যধারার ছবি করছো। ‘ইন্দুবালা’ করলে, কিন্তু এই ছবির শুটিং যখন করেছিলে, তখন আর এখনকার মধ্যে বিস্তর ফারাক। এখন নানা প্লট দেখছি। কিন্তু এই ছবির ওই প্লটের একটা আলাদা আঙ্গিক ছিল।

Advertisement

শুভশ্রী: (একটু থেমে) হ্যাঁ, বলতে পারো। আর আমার মনে আছে, সেসময় পরিচালক এক ইন্টারভিউতে বলেছিলেন, এমনকি আমাকেও বলেছিলেন যে, তুই ভালো অভিনয় করিস। এমন ধারার সিনেমা তুই করতে পারিস। তবে এখন এটুকু বলতে পারি, এই সিনেমা দেখে কারোর আক্ষেপ থাকবে না যে, কেন দেখলাম বা কীসের জন্য এত অপেক্ষা করলাম।

প্রশ্ন: এই ছবির জনারটা বোধহয় অনেক ধরনের হতে পারে, তাই না!

শুভশ্রী: একদম৷ এটাই বলার চেষ্টা করছিলাম। আসলে তোমরা জানো। তোমরা শুটিংয়ের সময় ছিলে। যারা জানে না, তাদের বলছিলাম যে, আমি যখন এই ছবি দেখব, তখন আমি যে কোনও ধারার ছবি ভাবতে পারি। থ্রিলার ভাবলে থ্রিলার, প্রেমের ছবি, সম্পর্কের ছবি, যা কিছু ভাবতে পারি। পরিচালক কী ভাববেন জানি না। আমি এই ছবির অংশ হয়ে বলতে পারি, এটা সবার পার্সপেক্টিভের উপর ডিপেন্ড করবে।

প্রশ্ন: এই ছবিতে তুমি, দেব ছাড়াও রুদ্রনীল রয়েছে।

শুভশ্রী: হ্যাঁ, একদম। রুদ্রনীল জাত অভিনেতা। আমরা লাকি রুদ্রর মত অভিনেতা বাংলায় জন্মেছে। ওর কাজ অনবদ্য।

প্রশ্ন: ‘গৃহপ্রবেশ’-এও তুমি, রুদ্রনীল, কৌশিক ছিলে। এই ছবিতেও সেম।

শুভশ্রী: (হেসে) আগে পরে ব্যাপারটা হয়েছে। কিন্তু হ্যাঁ, আমরা তিনজনই এখানে কমন। আমি আশা করি, এখানেও দর্শক আমাদের স্পার্ক দেখতে পাবেন।

প্রশ্ন: একটু ‘গৃহপ্রবেশ’-এর কথায় আসব। ছবি মানুষের মুখে মুখে ঘুরছে। মানুষ ভীষণ পছন্দ করছে। তোমার-জীতুর কেমিস্ট্রিও অসাধারণ। এই নিয়ে যদি কিছু বলো।

শুভশ্রী: দেখো একটা কথা বলব, মানুষ ইন্দ্রদীপ দাশগুপ্তের স্বপ্নকে ভালোবেসেছে। ওঁর আইডিয়াকে ভালোবেসেছে। আমার কাজ ভালোবেসেছে। এর থেকে বড় পাওয়া আর কী হতে পারে।

প্রশ্ন: ‘তিতলি’কে যখন শুভশ্রী দেখেছে তখন কী মনে হয়েছে?

শুভশ্রী: মনে হয়েছে, এটা কেন এমন করলাম, অন্যরকম করতে পারতাম। অন্য কিছু করলে আরও ভালো হত। আসলে নিজের কাজ দেখলে দেখবে এমনই হয়।

প্রশ্ন: আচ্ছা, রাজ কী বলে তোমার কাজ দেখে?

শুভশ্রী: রাজ আমার সবচেয়ে বড় সমালোচক। ‘ইন্দুবালা’ আর ‘গৃহপ্রবেশ’ দেখে কিছু বলতে পারেনি।

প্রশ্ন: ছেলেমেয়ের সঙ্গে অনেক সময় কাটে। অভিনয়ের ক্ষেত্রে কতটা পজিটিভিটি পাও তার থেকে?

শুভশ্রী: অনেক, বাচ্চারা আমার অক্সিজেন। আর আমার স্বামীর সঙ্গে কাটানো সময়ও আমার কাছে ফ্রেশ এয়ার। বাচ্চা হওয়ার পর এখন অনেক পজিটিভিটি কনফিডেন্স বেড়ে গিয়েছে।

প্রশ্ন: দিন যত যাচ্ছে, শুভশ্রী নিজেকে মেলে ধরছে। অভিনয়ের রকম বদলাচ্ছে। চরিত্র নিয়ে এক্সপেরিমেন্ট করছে। অনেক অভিনেত্রীর ক্ষেত্রেই আমরা দেখি, কোথাও গিয়ে আর তাদের পাওয়া যায় না।

শুভশ্রী: দেখো, আমি এটা ভাবি না যে, কালকে আমার পজিশন কী হবে। আমি আজকে বিশ্বাস করি। আমি কাজকে বিশ্বাস করি। এই যে আমি শুটিং ফ্লোরে গিয়ে কাজ করি, ওটাই আমার। ওটাই আমার সব৷ আমি জানি, পজিশনের খেলাটা টেম্পোরারি। আমার কাজটা পার্মানেন্ট। আমি যে চরিত্র জন্ম দিই, সেটা আমার কাছে পার্মানেন্ট। ওটা আমার। আর মানুষ যে ভালোবেসে আমার কাজ দেখতে যাচ্ছে, এটা আমার পরম পাওয়া। তাই কী পজিশন, থাকল না গেল, আমাকে বদার করে না।

প্রশ্ন: আচ্ছা, কোন ধরনের চরিত্র এখন করতে ইচ্ছে করে?

শুভশ্রী: দেখো, এখানে আমি ভীষণ হ্যাংলা। চরিত্রের জন্য আমি হ্যাংলা। ভালো কাজের খিদে খুব। আমি ভালো কাজের জন্য জান-প্রাণ দিয়ে খাটতে পারি।

প্রশ্ন: আচ্ছা, এখন তো মনে হয় বাংলা সিনেমায় কনটেন্টই রাজা। জুটি কনসেপ্ট আর ম্যাটার করে না। তোমার কী মনে হয়?

শুভশ্রী: একদম। জুটি কনসেপ্ট হয়তো চেঞ্জ হয়েছে। এখন আসলে গল্পই সব। গল্প বলার ধরন বদলেছে। এখন যদি কেউ ভাবে চ্যালেঞ্জ করলে হিট হবে। সেটা ভুল।

প্রশ্ন: আচ্ছা, একটা প্রশ্ন করছি। ভবিষ্যতে কি আবার দেব-শুভশ্রী জুটিকে দর্শক পর্দাতে দেখতে পাবে?

শুভশ্রী: একদম। আমি অভিনেত্রী। প্রফেশনাল মানুষ। কেন ছবি করব না? নিশ্চয় ভালো গল্প, ভালো চরিত্র হলে নিশ্চয় দেবের সঙ্গে কাজ করব।

Advertisement