আরজেডি এবং পরিবারের বাইরে বেরিয়ে এবার একক রাজনৈতিক যাত্রার ইঙ্গিত দিলেন লালুপ্রসাদ যাদবের ‘ত্যাজ্যপুত্র’ তেজপ্রতাপ যাদব। শুক্রবার নিজের পুরনো বিধানসভা কেন্দ্র মহুয়ায় সমর্থকদের নিয়ে একটি শোভাযাত্রা করেন তিনি। হাতে ছিল সবুজ-সাদা পতাকা, তাতে লেখা – ‘টিম তেজপ্রতাপ যাদব’। মাথায় ছিল আরজেডির প্রতীকী রং সবুজ রংয়ের টুপি। দলের থেকে বহিষ্কৃত হওয়ার পর এই প্রথম বার প্রকাশ্যে রাজনৈতিক কর্মসূচিতে দেখা গেল তাঁকে।
শোভাযাত্রার পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে হাসনপুরের বর্তমান বিধায়ক তেজপ্রতাপ বলেন, ‘মানুষের ইচ্ছাতেই আমি আছি। মানুষ যেখান থেকে চাইবেন, আমি সেখান থেকেই ভোটে দাঁড়াব। কোন দলের হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করব, তা সময় বলবে। আমি কারও নিয়ন্ত্রণে নেই। আমি মানুষের জন্য রাজনীতি করি।’ তাঁর এই মন্তব্যে জল্পনা বাড়ছে – তবে কি নতুন দল গড়ার পথে হাঁটতে চলেছেন তেজপ্রতাপ? যদিও এই বিষয়ে এখনও কোনও চূড়ান্ত ঘোষণা করেননি তিনি।
Advertisement
প্রসঙ্গত, গত মে মাসে এক বিতর্কিত ফেসবুক পোস্ট ঘিরে বিহারের রাজনৈতিক মহলে প্রবল শোরগোল ওঠে। সেই পোস্টে এক মহিলার সঙ্গে নিজের সম্পর্কের কথা প্রকাশ্যে আনেন তেজপ্রতাপ। দাবি করা হয়, ১২ বছর ধরে প্রেমের সম্পর্কে রয়েছেন তাঁরা। পোস্ট ভাইরাল হতেই শুরু হয় বিতর্ক। পরে অবশ্য তেজপ্রতাপ দাবি করেন, তাঁর প্রোফাইল হ্যাক করে ভুয়ো পোস্ট করা হয়েছে। এই বিতর্কের পরিপ্রেক্ষিতে আরজেডি শীর্ষ নেতৃত্ব কড়া সিদ্ধান্ত নেয়।
Advertisement
‘দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণ’ ও ‘পারিবারিক মর্যাদায় আঘাত’-এর অভিযোগ তুলে তেজপ্রতাপকে দল এবং পরিবার থেকে বহিষ্কার করেন দলের সুপ্রিমো লালুপ্রসাদ যাদব। তিনি জানিয়ে দেন, আগামী ৬ বছর আরজেডির সঙ্গে তেজপ্রতাপের কোনও সম্পর্ক থাকবে না। পিতা লালুর এই সিদ্ধান্তকে পূর্ণ সমর্থন জানান তেজপ্রতাপের ভাই, বিহারের প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী তেজস্বী যাদবও।
দল ও পরিবারের থেকে বিতাড়িত হওয়ার পর নিজেকে দীর্ঘদিন রাজনৈতিকভাবে নীরব রাখলেও, এই দিনের শোভাযাত্রা এবং বক্তব্যে স্পষ্ট – তেজপ্রতাপ চুপচাপ বসে থাকার পাত্র নন। মহুয়ার রাস্তায় তাঁর সমর্থকদের উপস্থিতি এবং তাঁদের উৎসাহ দেখে অনেকেই বলছেন, বিহারের রাজনীতিতে নিজের পরিচিতি ও শক্তি ফের প্রমাণ করার পথে হাঁটছেন তিনি। তবে তেজপ্রতাপ আদৌ নতুন দল গড়বেন কি না, বা কোনও অন্য দলে যোগ দেবেন কি না – সেই প্রশ্নের উত্তর সময়ই দেবে। আপাতত বিহারের রাজনৈতিক মহল তাঁর পরবর্তী পদক্ষেপের দিকে তাকিয়ে।
Advertisement



