ওয়াকফ বিরোধিতায় মুর্শিদাবাদে উত্তাল হওয়া এবং হিংসার পিছনে রয়েছে বহিরাগত শক্তি। এমনটাই দাবি করেছেন তৃণমূলের সাংসদ এবং বিধায়করা। তাঁরা এই ঘটনার পিছনে বিজেপিকে নিশানা করেছেন। শাসকদলের জনপ্রতিনিধিদের দাবি, বিজেপি বাইরে থেকে লোক এনে এই অশান্তি পাকাচ্ছে। তারা রাজ্যে সাম্প্রদায়িক হিংসা ছড়াতে চাইছে। আর সেই কাজে বিএসএফ সহযোগিতা করছে বলে দাবি করেছে তারা। যদিও রাজ্যের গেরুয়া শিবির শাসকদলের সেই অভিযোগ মানতে নারাজ।
বিএসএফ সূত্রে জানা গিয়েছে, সীমান্তবর্তী জেলায় অশান্তিতে বহিরাগতরা উসকানি দিচ্ছে বলে রাজ্যকে সতর্ক করা হয়েছে। সম্প্রতি মুর্শিদাবাদে বাংলাদেশি জিহাদি শক্তি আনসারুল্লা বাংলা টিম, বিচ্ছিন্নতাবাদী নিষিদ্ধ সংগঠন পিএফআই, সিমির স্লিপার সেল সক্রিয় হয়ে উঠেছে বলে গোয়েন্দা খবর সূত্রে খবর ছিল। তবে কি তারাই ঘোলা জলে মাছ ধরতে নেমেছে? তারাই স্থানীয় মানুষের মগজ ধোলাই করে অশান্তি ছড়াচ্ছে? কিন্তু শয়ে শয়ে মানুষকে রাস্তায় নেমে অশান্তি ছড়াতে দেখা গিয়েছে। তারা কি সকলেই বহিরাগত? প্রশ্ন অনেক, যার উত্তর খুঁজছেন গোয়েন্দারা। ইতিমধ্যে অশান্তি ছড়ানোর অভিযোগে দেড়শোর বেশি মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
Advertisement
এব্যাপারে জঙ্গিপুরের বিধায়ক খলিলুর রহমান দাবি করেছেন, যারা অশান্তি পাকাচ্ছে তারা সকলেই বাইরের। কিন্তু কোথা থেকে ঢুকছে জানা যায়নি। ফারাক্কার বিধায়ক মণিরুল ইসলাম। অশান্তি চলাকালীন তাঁর বাড়িতেও হামলা হয়েছে। ভাঙচুর, আগুন ধরিয়ে দেওয়া এবং লুটপাট চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ। সেজন্য তিনিও একই দাবি করেছেন। তিনি বলেছেন, এতদিন এখানে এই ধরনের ঘটনা ঘটেনি। বাইরে থেকে লোকজন না ঢুকলে এই ধরনের কাণ্ড ঘটত না। বাইরে থেকে লোকজন এলাকায় ঢুকে তাণ্ডব করতে শুরু করেছে। ভিতরের লোকজন তো রয়েছেই।
Advertisement
এদিকে তৃণমূল দলের অন্যান্য নেতৃত্বের তরফেও একই দাবি করা হয়েছে। এ বিষয়ে শাসকদলের পক্ষ থেকে একটি ভিডিও পোস্ট করা হয়েছে এক্স হ্যান্ডেলে। যেখানে সুকান্ত মজুমদার-অর্জুন সিংকে অশান্তি ছড়ানোর উসকানি দিতে শোনা গিয়েছে। রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার রাস্তায় গাড়ি ধরে-ধরে মারার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। আর বারাকপুরের ‘দাপুটে’ নেতা অর্জুন সিং ঝাড়খণ্ড-উত্তরপ্রদেশ-বিহার থেকে লোক এনে মুর্শিদাবাদ-মালদহ ফাঁকা করে দেওয়ার হুমকি দিতে শোনা গিয়েছে। এরপরই প্রশ্ন উঠছে, মুর্শিদাবাদের নেপথ্যে কারা? তবে কি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেই অশান্তি ছড়ানো হচ্ছে?
এ প্রসঙ্গে তৃণমূলের অন্যতম রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বিজেপি বিএসএফ-এর সাহায্য নিয়ে বহিরাগতদের দিয়ে অশান্তি পাকাচ্ছে বলে দাবি করা হয়েছে। তিনি বলেছেন, বিএসএফের একাংশের সাহায্য নিয়ে বহিরাগত দুষ্কৃতীদের ঢুকিয়ে অশান্তি ছড়িয়ে আবার তাদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এলাকার লোকজন বলছে, অশান্তির মূল পাণ্ডাদের তারা চেনেন না। ফলে কোনও রাজনৈতিক দল কোনও কোনও এজেন্সির সাহায্য়ে অশান্তি ছড়াচ্ছে কি না তা দেখতে হবে।
Advertisement



