মঙ্গলবার গভীর রাতে মহাকুম্ভে কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে অমৃত স্নান শুরু হয়েছিল। ১৩টি আখড়ার মৌনী অমাবস্যার অমৃত স্নানের সময়, পদপিষ্টের মতো পরিস্থিতির কারণে কমপক্ষে ১৫ জন তীর্থযাত্রীর মৃত্যুর আশঙ্কা রয়েছে। পাশাপাশি আহতের সংখ্যা আরও অনেক বেশি বলে জানা গিয়েছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, আহতের সংখ্যা ৫০ জনেরও বেশি।
প্রশাসনিক কর্মকর্তারা এই ঘটনা নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছেন। তাঁরা দাবি করেছেন যে, এটি কোনও পদদলিতের ঘটনা নয়। কেবল অতিরিক্ত ভিড় ছিল। তবে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, প্রায় ১৫ জনের মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য সরূপ রানী নেহেরু মেডিকেল কলেজে আনা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, এই ঘটনায় আহত ৫০ জনেরও বেশি লোক যাদের বেশিরভাগই মহিলা, তাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক। রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং অন্যান্য রাজনৈতিক নেতারা এই ঘটনায় নিহতদের প্রতি শোক প্রকাশ করেছেন।
Advertisement
এদিকে, প্রয়াগরাজ এবং এর আশেপাশের পরিস্থিতি অত্যন্ত উত্তেজনাপূর্ণ। কারণ সঙ্গমে যাওয়ার পথে বিভিন্ন স্থানে আটকে রাখা হয়েছে। নতুন ভক্তদের স্নান করার জন্য ঘাটগুলি খালি করতে নিরাপত্তা কর্মীদের সমস্যা হচ্ছে। গঙ্গা ও যমুনার বেশ কয়েকটি সেতু এবং পন্টুন সেতুতে অতিরিক্ত লোক রয়েছে। কারণ এখনও প্রায় ৫ কোটি মানুষ সঙ্গমে পৌঁছনোর পথে রয়েছেন।
Advertisement
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার রাত ১.৩০ নাগাদ সঙ্গমের কাছে পদদলিত হওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়। এসএসপি কুম্ভ মেলা রাজেশ দ্বিবেদী এখনও পর্যন্ত এই ঘটনায় কোনও মৃত্যুর বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। তিনি দাবি করেছেন যে, অতিরিক্ত ভিড়ের কারণেই এই ঘটনা ঘটেছে। তিনি বলেছেন যে, সমস্ত ঘাটে মানুষ স্নান করছিলেন। এমনকি আখড়াগুলিতেও সকাল ১১ টায় অমৃত স্নান শুরু হয়েছিল।
মেলা কর্মকর্তারা দাবি করেছেন যে, দুপুর ১২ টা পর্যন্ত, মৌনী অমাবস্যার দিন ৫.০৪ কোটি ভক্ত সঙ্গমে পবিত্র স্নান করেছেন। তাঁরা আরও দাবি করেছেন যে, ১৩ জানুয়ারী মহাকুম্ভ শুরু হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত ২৪ কোটিরও বেশি মানুষ সঙ্গমে এসেছেন। প্রত্যক্ষদর্শীদের অভিযোগ, অমৃত স্নানের কারণে বেশিরভাগ পন্টুন সেতু বন্ধ থাকায় ভিড় দেখা সৃষ্টি হয়। যার ফলে পুণ্যার্থীরা সঙ্গমে পৌঁছতে শুরু করে এবং কিছু লোক ব্যারিকেডের উপর পড়ে যায়। এটি দেখেই পদদলিত হওয়ার গুজব ছড়ায়।
এছাড়া, সঙ্গম স্থলের প্রবেশ ও প্রস্থান পথ আলাদা ছিল না। মানুষ একই পথ দিয়ে ফিরে যাচ্ছিল, তীর্থযাত্রীরা আসছিলেন। এমন পরিস্থিতিতে, যখন পদদলিত হয়, তখন মানুষ বেরিয়ে যাওয়ার সুযোগ পায়নি। তারা একে অপরের উপর পড়ে যায়। দুর্ঘটনার পর ৭০ টিরও বেশি অ্যাম্বুলেন্স সঙ্গম স্থলে পৌঁছে গিয়েছে। আহত ও মৃতদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। দুর্ঘটনার পর, এনএসজি কমান্ডোরা সঙ্গম স্থলের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়। এবং ওই এলাকায় সাধারণ মানুষের প্রবেশ বন্ধ করে দেওয়া হয়। ক্রমবর্ধমান ভিড় নিয়ন্ত্রণে প্রয়াগরাজের সীমান্তবর্তী জেলাগুলিতে ভক্তদের প্রবেশ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আজ মহাকুম্ভে মৌনী অমাবস্যার স্নান এবং শহরে প্রায় ৯ কোটি ভক্তের উপস্থিতির সম্ভাবনা রয়েছে।
Advertisement



