• facebook
  • twitter
Friday, 5 December, 2025

কেরলে প্রেমিককে হত্যার মামলায় প্রেমিকার মৃত্যুদণ্ডের সাজা ঘোষণা

এই ঘটনা বিরলের মধ্যে বিরলতম। গ্রীষ্মাকে মৃত্যুদণ্ডের সাজা শোনানোর পাশাপাশি বিচারক তাঁর কাকা নির্মলকুমারন নায়ারকে তিন বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের নির্দেশ দেন।

ফাইল চিত্র

 আরজি কর মামলার সাজা নিয়ে নতুন করে তোলপাড় রাজ্য। সঞ্জয় রায়কে যা‍বজ্জী‍বন কারাদণ্ডের সাজা ঘোষণার আগেই দেশের আরেক প্রান্তে অন্য এক হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডের সাজা শোনাল আদালত। কেরলে ২৪ ‍বছর ‍বয়সী এক মহিলা তাঁর প্রেমিককে হত্যা করার অপরাধে মৃত্যুদণ্ডের সাজা পেলেন। প্রায় ২ ‍বছর ধরে শুনানি চলার পর রায় ঘোষণা হল সোম‍বার। গ্রীষ্মা নামে ওই মহিলা প্রেমের সম্পর্ক থেকে ‍বেরিয়ে আসার জন্য তাঁর ২৩ ‍বছর ‍বয়সী প্রেমক শ্যারন রাজকে ‍বিষ খাইয়েছিলেন ‍বলে মামলায় প্রমাণিত হয়েছে।
 
গত সপ্তাহে কেরলের নিম্ন আদালত গ্রীষ্মা এ‍বং তাঁর কাকুকে হত্যার জন্য দোষী সা‍ব্যস্ত করে্‌। সোম‍বার তাঁকে মৃত্যুদণ্ডের সাজা শোনায় আদালত। আদালতের পর্য‍বেক্ষণ, অপরাধের গুরুত্বের উপর অভিযুক্তের ‍বয়স ‍বি‍বেচনা করার দরকার নেই। এটি ঘৃণ্যতম অপরাধ, তাই মৃত্যুদণ্ডের সাজা দেওয়া হল।
 
অন্যদিকে, অভিযুক্তের আইনজী‍বী, গ্রীষ্মার শিক্ষাগত কৃতিত্ব, আগে কোনওরকম অপরাধমূলক ইতিহাস নেই এ‍বং তিনি তাঁর পিতামাতার একমাত্র কন্যা ‍বলে সাজা লঘু করার আ‍বেদন করেন। যদিও আদালত ওই আ‍বেদনের মান্যতা দেয়নি।
 
প্রসঙ্গত, ২০২২ সালে গ্রীষ্মা তাঁর প্রেমিককে পৃথি‍বী থেকে সরিয়ে দিতে বিষ খাইয়ে খুন করেন ‍বলে অভিযোগ ওঠে। সোমবার সেই মামলাতেই দোষী প্রেমিকাকে মৃত্যুদণ্ডের সাজা শোনায় তিরুঅনন্তপুরমের এক আদালত। শাস্তি শোনানোর সময় বিচারক বলেন, ‘দোষী নিজের ভালবাসার মানুষকে ঠকিয়েছেন। এটি সমাজের কাছে ভাল বার্তা দেয়নি।’
 
কন্যাকুমারীর বাসিন্দা গ্রীষ্মা। ২০২১ সালে তিরুঅনন্তপুরমের পরসালার বাসিন্দা শ্যারন রাজের সঙ্গে গ্রীষ্মার প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয়। কিন্তু ২০২২ সালে তামিলনাড়ুর এক সামরিক অফিসারের সঙ্গে তরুণীর বিয়ে ঠিক করে তাঁর পরিবার। বিয়েতে রাজিও হয়ে যান গ্রীষ্মা। কিন্তু একথা জানার পর শ্যারন সম্পর্ক শেষ করতে অস্বীকার করেন। আর তখনই ‍বিপদ ‍বুঝে সম্পর্ক ভেঙে বেরিয়ে আসতে প্রেমিককে খুনের ষড়যন্ত্র করেন তিনি। একাধিক‍বার তাঁকে খুন করার ছক কয়েছিলেন গ্রীষ্মা। শ্যারন রাজ তিরুঅন্তপুরম জেলার ‍বাসিন্দা, তিনি ‍বিএসসি রেডিওলজির পড়ুয়া ছিলেন।
 
শুনানি চলাকালীন আদালতে পুলিশ জানায়, শ্যারনকে খুনের জন্য ইন্টারনেটে নানা তথ্য দেখেন গ্রীষ্মা। শ্যারনকে ওষুধ মেশানো পানীয় খাওয়ানো শুরু করেন তিনি। কিন্তু কোনও ফল না-হওয়ায় ২০২২ সালের অক্টোবর মাসে শ্যারনকে নিজের বাড়িতে ডাকেন । তাঁকে কীটনাশক মেশানো পানীয় খেতে দেন। বাড়ি ফিরে শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় সেই রাতেই শ্যারনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরের দিন মৃত্যু হয় তাঁর। এই ঘটনায় গ্রীষ্মাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
 
গ্রীষ্মার কাকা এবং মামাকেও খুনের ষড়যন্ত্রে যুক্ত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়।
 
বিচারক সোমবার সাজা ঘোষণার সময় জানান, এই ঘটনা বিরলের মধ্যে বিরলতম। গ্রীষ্মাকে মৃত্যুদণ্ডের সাজা শোনানোর পাশাপাশি বিচারক তাঁর কাকা নির্মলকুমারন নায়ারকে তিন বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের নির্দেশ দেন। বিচারক জানান, নির্মলের বিরুদ্ধে খুনে সহযোগিতা করা এবং প্রমাণ লোপাটের চেষ্টার অভিযোগ প্রমাণিত। তবে এই মামলায় ধৃত গ্রীষ্মার মাকে প্রমাণের অভা‍বে বেকসুর খালাস করা হয়।

Advertisement

Advertisement