ফের কৃষকদের ‘দিল্লি চলো’ অভিযান। যা ঘিরে ধুন্ধুমার পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। আন্দোলনকারীরা এখনও দিল্লি ও শম্ভু সীমান্তেই রয়েছেন। সেখানে তাঁদের আটকে দিয়েছেন পুলিশ। ব্যারিকেড টপকে এগোতে গেলেই কৃষকদের আটকে দেয়। পুলিশ ও আন্দোলনকারীদের মধ্যে শুরু হয় খণ্ডযুদ্ধ। জখম হয়েছেন ১৭জন কৃষক। তাঁদের ছত্রভঙ্গ করতে জলকামান ও কাঁদানে গ্যাস ছোঁড়া হয়। ফের পুলিশের প্রতিরোধে আজকের মতো স্থগিত হয়ে গিয়েছে আন্দোলন।
কৃষক নেতা তেজভির সিংহ বলেন, ‘‘আমরা আজকের আন্দোলন কর্মসূচি স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। হরিয়ানা পুলিশের ছোড়া কাঁদানে গ্যাসের ফলে ১৭ জন কৃষক গুরুতর আহত হয়েছেন। আমাদের পরবর্তী কর্মসূচি আমরা খুব তাড়াতাড়িই ঘোষণা করব।’’
Advertisement
এদিন রাজধানী অভিমুখের এই পদযাত্রায় ছিলেন ১০১ জন কৃষক। শনিবার সংযুক্ত কিসান মোর্চা (অরাজনৈতিক) এবং কিসান মজদুর মোর্চার তরফে শান্তিপূর্ণভাবে দিল্লির উদ্দেশে পদযাত্রা শুরু করেন আন্দোলনকারী কৃষকরা। শনিবার আন্দোলন স্থগিত হওয়ার পর ফের তাঁরা আলোচনায় বসতে চলেছেন। এরপর আন্দোলনের পরবর্তী রণকৌশল ঠিক করবেন তাঁরা।
Advertisement
এর আগে বার বার অভিযান চালিয়েও ব্যর্থ হন কৃষকরা। প্রথমে ৬ ডিসেম্বর দিল্লি অভিযানের ডাক দেন আন্দোলনকারীরা। কিন্তু সেদিন পুলিশের বাধা পেয়ে পিছু হটেন। ফের ৮ ডিসেম্বর ‘দিল্লি চলো’ অভিযানের ডাক দেন কৃষকরা। সেদিন সকাল থেকেই প্রচুর পুলিশ মোতায়েন করা হয় শম্ভু সীমানায়। এলাকায় ১৬৩ ধারা জারি করা হয়। ব্যারিকেড করে আটকে দেয় পুলিশ। দফায় দফায় কাঁদানে গ্যাসের সেল ফাটিয়ে কৃষকদের ছত্রভঙ্গ করে দেওয়া হয়। যার জেরে মিছিল এগোনোর চেষ্টা করেও সফল হয়নি। ছয়দিন পর ফের আন্দোলন শুরু করেন কৃষকরা। শম্ভু সীমান্ত থেকে শনিবার সকালে রাজধানীর উদ্দেশ্যে রওনা দেন আন্দোলনকারীরা। যার জেরে যাতে মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তিকর খবর ছড়িয়ে না পড়ে তার জন্য আগাম সতর্কতা অবলম্বন করে হরিয়ানা সরকার। আম্বালা জেলায় সকাল ৬টা থেকে মোবাইল ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে জেলা প্রশাসন যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হয় বলে সূত্রের খবর।
গত নভেম্বর মাসের ১৩ ও ২১ তারিখেও কৃষকরা দিল্লি যাওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু প্রতিবারই দিল্লি ঢোকার আগেই আটকে দেওয়া হয় তাঁদের। মিছিলের উপর পুলিশি হানার নিন্দা করেছেন কৃষক নেতা সরওয়ান সিংহ পান্ধের। আন্দোলনকারী কৃষকদের বক্তব্য, তাঁরা শান্তিপূর্ণভাবে মিছিল করতে চেয়েছিলেন। সেই কারণেই ট্রাক্টরের বদলে মাত্র ১০১ জন প্রতিনিধিকে নিয়ে পায়ে হেঁটে মিছিল করার সিদ্ধান্ত নেন। পাশাপাশি, কৃষকদের দাবিদাওয়াগুলি নিয়ে সরকারের উদাসীনতারও সমালোচনা করেছেন সরওয়ান।
উল্লেখ্য, ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য (এমএসপি), কৃষি ঋণ মকুব, পেনশনের ব্যবস্থা বিদ্যুতের বিল না-বাড়ানোর মতো বেশ কয়েকটি দাবি রয়েছে এই আন্দোলন কর্মসূচিতে। এই নিয়ে দীর্ঘ ১০ মাস ধরে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে পাঞ্জাব এবং হরিয়ানার কৃষক সংগঠনগুলি। গত ১৩ ফেব্রুয়ারি থেকে এই আন্দোলন শুরু হয়। দিল্লি সংলগ্ন পাঞ্জাব, হরিয়ানার শম্ভু এবং খানাউড়ি সীমানায় অবস্থানে বসে রয়েছেন আন্দোলনকারী কৃষকরা। গত ২৬ নভেম্বর কৃষক নেতা জগজিৎ সিংহ ডাল্লেওয়াল আমরণ অনশন শুরু করার পর আন্দোলন নতুন করে উজ্জীবিত হয়ে ওঠে।
Advertisement



