• facebook
  • twitter
Sunday, 7 December, 2025

জয়ী কে? তিন দেশই দাবি করছে যুদ্ধের সাফল্য

আমেরিকা এবং ইজরায়েলের যৌথ হামলার পরেও ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি ইরানের পরমাণুঘাঁটি। এই যুদ্ধে এটাই ইরানের বড় সাফল্য বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র

১২ দিনের যুদ্ধ শেষমেশ থেমেছে। ইরান ও ইজরায়েলের যুদ্ধ চলায় অশান্ত হয়ে উঠেছিল পশ্চিম এশিয়া। দুই দেশের সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে আমেরিকা। অনেক ক্ষয়ক্ষতির পর যুদ্ধ থেমেছে ঠিকই, সেই সঙ্গে যুদ্ধে কে জয়ী হয়েছে তা নিয়ে দেখা দিয়েছে সংশয়। আমেরিকা-ইজরায়েল-ইরান তিন দেশই দাবি করছে এই যুদ্ধে নিজেরা সফল! ফলে এ নিয়ে ধন্দে পড়েছে গোটা বিশ্ব।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছেন, যুদ্ধ থামিয়েছেন তিনিই। ইজরায়েলের পাশে দাঁড়িয়ে সরাসরি ইরানের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে আমেরিকা। ইরানের তিনটি পরমাণুঘাঁটিতে হামলা চালায় ট্রাম্পের সেনারা। শুধু আকাশপথে নয়, জলপথেও আক্রমণ করা হয় ইরানে। যদিও মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থার এক রিপোর্টে জানানো হয়েছে, আমেরিকা আদতে ইরানের পরমাণুঘাঁটিগুলির কোনও ক্ষতিই করতে পারেনি। মার্কিন হামলার জেরে ইরানের পরমাণু কর্মসূচি বড়জোর কয়েক মাস পিছিয়ে গিয়েছে। অন্যদিকে, ট্রাম্প অবশ্য ওই গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্ট মানতে নারাজ। মার্কিন প্রেসিডেন্ট মনে করেন, তিনিই ইরান ও ইজরায়েলের যুদ্ধ থামিয়েছেন।

Advertisement

যুদ্ধ বিরতির পর ইজরায়েলের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, পরমাণু অস্ত্র এবং ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র– ইরানের এই দুই শক্তিকে তারা ধ্বংস করে দিতে পেরেছে। পাশাপাশি, ইজরায়েলের হামলায় মারা গিয়েছে ইরানের ৯ জন বিজ্ঞানী এবং গুরুত্বপূর্ণ সেনাপ্রধান। অন্যদিকে, যেহেতু প্যালেস্তাইনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের পরই ইরানে হামলা চালিয়েছে ইজরায়েল তাই এ কথা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে একই সঙ্গে একাধিক দেশের সঙ্গে যুদ্ধ চালাতে সক্ষম বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। গাজায় হামাসের বিপক্ষে আক্রমণ চালানোয় অবশ্য মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছিল ইজরায়েলের বিরুদ্ধে। অন্যদিকে, ইরান হুশিয়ারি দিয়েছিল তাদের পরমাণু শক্তি ইজরায়েলের অস্তিত্বের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। এই ঝুঁকির প্রসঙ্গ টেনে এনে গাজায় মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়টি কিছুটা হলেও এড়িয়ে যেতে পেরেছে ইজরায়েল। এসবই নেতানিয়াহু সাফল্য।

Advertisement

আমেরিকা এবং ইজরায়েলের যৌথ হামলার পরেও ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি ইরানের পরমাণুঘাঁটি। এই যুদ্ধে এটাই ইরানের বড় সাফল্য বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। মার্কিন গোয়েন্দারা স্বীকার করেই নিয়েছেন, ইরানের তিন পরমাণুঘাঁটিতে হামলা চালিয়েও তাদের সংরক্ষিত বিশুদ্ধ ইউরেনিয়াম ধ্বংস করতে পারেনি আমেরিকা। মার্কিন হামলার আগেই চুপিসারে নিজেদের ইউরেনিয়াম সংগ্রহ সুরক্ষিত জায়গায় সরাতে পরেছিল ইরান। পাশাপাশি ইজরায়েল জানিয়েছে, আগামীদিনে ইরানের পরমাণুঘাঁটিগুলির দিকে নজর থাকবে তাদের।

অন্যদিকে ট্রাম্প সরাসরি জানিয়ে দিয়েছেন, ইরানের বর্তমান শাসন ব্যবস্থার পরিবর্তনের ক্ষেত্রে তাঁর সায় নেই। সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতোল্লা আলি খামেনেইর নির্দেশে ইরানের প্রশাসন নারীদের রক্ষণশীল করার ব্যাপারে অতিরিক্ত তৎপর হয়েছিল বলে অভিযোগ তুলে রাস্তায় নেমেছিল মহিলারা। তবে ১২ দিন আগে যুদ্ধ লেগে যাওয়ায় দেশের মানুষেরা এক হয়ে খামেনেই প্রশাসনকে সমর্থন করে এক হয়েছে বলে খবর।

Advertisement