• facebook
  • twitter
Saturday, 6 December, 2025

হরমিত কৌর ধিলোঁর প্রকৃত পরিচয় কী? ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর কী সম্পর্ক?

ধিলোঁ গত বছর রিপাবলিকান ন্যাশনাল কমিটির সভাপতি হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেও ব্যর্থ হন। তিনি রিপাবলিকান জাতীয় কমিটির সদস্য ছিলেন এবং ২০১৬ ও ২০২৪ সালে রিপাবলিকান জাতীয় সম্মেলনে শিখদের ভোট প্রার্থনায় যোগ্য ভূমিকা পালন করেছিলেন।

ফাইল চিত্র

আগামী ২০ জানুয়ারি আমেরিকার নতুন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান। তাঁর আগে সরকার পরিচালনায় একে একে নিজের হাতে থাকা দাবার বোড়েগুলো সাজিয়ে নিচ্ছেন। সেই তালিকায় স্থান পেয়েছেন চারজন ভারতীয় বংশোদ্ভূত আমেরিকান। যার মধ্যে নবতম সংযোজন হরমিত কৌর ধিলোঁ। তাঁকে নতুন সরকারের মানবাধিকার সংক্রান্ত বিষয়ের সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল পদে নির্বাচিত করেছেন ট্রাম্প। এই শিখ ললনাকে নিয়ে আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক মহলে যথেষ্ট কৌতূহল দেখা দিয়েছে। সবচেয়ে বেশি কৌতূহল রয়েছে ভারতীয় ও বিভিন্ন দেশের প্রবাসী ভারতীয়দের মধ্যে। কে এই হরমিত কে. ধিলোঁ? তাঁর সঙ্গে ট্রাম্পের কী সম্পর্ক? কেনই বা আমেরিকার ভাবী প্রেসিডেন্ট তাঁকে এমন গুরুত্বপূর্ণ একটি পদে নির্বাচিত করলেন?

এইসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে জানা গিয়েছে, হরমিত কৌর ধিলোঁর জন্ম ১৯৬৯ সালে, পাঞ্জাবের চণ্ডীগড়ে। একটি পাঞ্জাবি শিখ পরিবারে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা তেজপাল সিং ধিলোঁ অস্থিবিভাগের একজন শল্য চিকিৎসক। শিশু বয়সে হরমিত বাবা মায়ের সঙ্গে আমেরিকায় চলে যান। সেখানেই তাঁর শিক্ষা ও বেড়ে ওঠা। তাঁর স্কুল শিক্ষা নিউ ইয়র্কে শুরু হলেও পরবর্তীকালে ক্যালিফোর্নিয়ায় তিনি পাকাপাকিভাবে বসবাস শুরু করেন। ধিলোঁ ডার্টমথ কলেজ এবং ভার্জিনিয়া ল স্কুল থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন।

Advertisement

হরমিত কৌর ধিলোঁ আদতে পেশায় একজন আইনজীবী। তিনি ল গ্রুপ এবং সেন্টার ফর আমেরিকান লিবার্টি নামে দুটি সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা। তাঁর প্রতিষ্ঠিত নিজস্ব ল’ ফার্ম ধিলোঁ ল গ্রুপ আইনি পরামর্শ দিয়ে থাকে। তিনি ২০১৮ সালে সেন্টার ফর আমেরিকান লিবার্টি নামে একটি সংস্থার সহ-প্রতিষ্ঠাতা। যেটি মানবাধিকার বিষয়ে কাজ করে।

Advertisement

হরমিত ট্রাম্পের কট্টর সমর্থক। একসময় রিপাবলিকান পার্টির ক্যালিফোর্নিয়া ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব সামলেছেন। তিনি বিভিন্ন টিভি চ্যানেলের অতিথি বক্তা হিসেবে যথেষ্ট জনপ্রিয় হলেও ফক্স নিউজে তাঁকে নিয়মিত দেখা যায়। ধিলোঁ কোভিড ১৯-এর সময়ে মানুষের স্বার্থে ক্যালিফোর্নিয়া প্রশাসনের বিরুদ্ধে অসংখ্য মামলা লড়েছিলেন। তিনি সরকারের হোম কোয়ারেন্টাইন অর্থাৎ ঘরে থাকা বাধ্যতামূলক নীতির বিরুদ্ধে মামলা লড়ে দেশে যথেষ্ট পরিচিত হয়ে ওঠেন। তিনি বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ করেন।

ধিলোঁ গত বছর রিপাবলিকান ন্যাশনাল কমিটির সভাপতি হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেও ব্যর্থ হন। তিনি রিপাবলিকান জাতীয় কমিটির সদস্য ছিলেন এবং ২০১৬ ও ২০২৪ সালে রিপাবলিকান জাতীয় সম্মেলনে শিখদের ভোট প্রার্থনায় যোগ্য ভূমিকা পালন করেছিলেন। ২০২০ সালের নির্বাচনে, তিনি ট্রাম্পের প্রচারে আইনি উপদেষ্টা ছিলেন। তিনি উইমেন ফর ট্রাম্পের সহ-সভাপতিও ছিলেন। যে শাখাটি তার নির্বাচনের জন্য মহিলাদের সমর্থন জোগাড় করেছিল।

রাজনৈতিক ও পেশাগত জীবনে ধিলোঁ যথেষ্ট সফল হলেও দাম্পত্য জীবনে হরমিত অনেক প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হন। তাঁর প্রথম বিয়ে হয় কানোয়ারজিৎ সিংয়ের সঙ্গে। কিন্তু সেই বিয়ে দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। ২০০৩ সালে তাঁদের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। এরপর তিনি সরবজিৎ সিং রণধাওয়াকে বিয়ে করেন। সেই বিয়ে তাঁর জীবনে শান্তি দিলেও স্থায়ী হয়নি। তাঁর স্বামী রণধাওয়া পার্কিনসন্স এবং ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে ২০২৪ সালে মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়েন।

Advertisement