• facebook
  • twitter
Friday, 5 December, 2025

৩৭ বছরেই বাজিমাত! থাইল্যান্ডের সর্বকনিষ্ঠ প্রধানমন্ত্রী হলেন পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রা

মাত্র ৩৭ বছরে থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী হলেন পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রা

ইতিহাস! মাত্র ৩৭ বছর বয়সে থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী হলেন পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রা। তিনিই থাইল্যান্ডের সর্বকনিষ্ঠ প্রধানমন্ত্রী পদে শপথ নিতে চলেছেন। রবিবার থাইল্যান্ডের রাজা নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ৩৭ বছর বয়সী পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রাকে আনুষ্ঠানিক ভাবে নিয়োগ করলেন। পেতংতার্ন বিতর্কিত প্রাক্তন থাই প্রধানমন্ত্রী ও ধনকুবের থাকসিনের মেয়ে।

রবিবার ব্যাংককের স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ৯টার পর একটি অনুষ্ঠানে রাজা মাহা ভাজিরালংকর্নের কাছ থেকে সরকার গঠনের আনুষ্ঠানিক চিঠি গ্রহণ করেন পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রা। অনুষ্ঠানে বিশিষ্টজনদের মধ্যে পেতংতার্নের বাবা থাকসিন সিনাওয়াত্রাও (৭৫) উপস্থিত ছিলেন। থাইল্যান্ডের দ্বিতীয় মহিলা প্রধানমন্ত্রী হলেন পেতংতার্ন। পেতংতার্নের কাকিমা ইংলাক থাইল্যান্ডের প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী ছিলেন।

Advertisement

সম্প্রতি থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীর পদ হারান সেথ্রা থাভিসিন। স্রেথার বিরুদ্ধে অভিযোগ, দুর্নীতি ও আদালত অবমাননার দায়ে ২০০৮ সালে ছয় মাসের কারাদণ্ড পাওয়া প্রাক্তন আইনজীবী পিচিট চুয়েনবানকে মন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ করেছিলেন তিনি। পিচিটের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তিনি আদালতের কর্মীদের একটি ব্যাগে ৫৫ হাজার ২১৮ ডলার ঘুষ দেওয়ার চেষ্টা করেন।

Advertisement

আদালতের যুক্তি ছিল, সাজাপ্রাপ্ত পিচিটকে মন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ করার মধ্যে দিয়ে ‘নৈতিকতার মান’ লঙ্ঘন করেছেন স্রেথা।এরপরই তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়। কয়েক দিন আগে থাভিসিনকে মসনদ থেকে সরিয়ে দেয় থাইল্যান্ডের আদালত। সেথ্রা থাভিসিনের মন্ত্রিসভা ভেঙে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। এর পর ফেউ থাই পার্টির তরফে প্রধানমন্ত্রী পদের প্রার্থী হিসাবে পেতংতার্নয়ের নাম অনুমোদন করা হয়।

গত কয়েক দশক ধরে থাইল্যান্ডের রাজনীতিতে রাজত্ব করছে সিনাওয়াত্রা পরিবার। থাইল্যান্ডের স্কুলের পড়াশোনা শেষের পর উচ্চশিক্ষার জন্য ব্রিটেনে যাব পেতংতার্ন। পরে পারিবারিক ব্যবসায় যোগ দেন। সিনাওয়াত্রার মালিকানাধীন রেন্ডে হোটেল শিল্প গোষ্ঠীতে কয়েক বছর কাজ করেছেন তিনি। এরপর পেতংতার্ন পা রাখেন রাজনীতির ময়দানে। ২০২১ সালে ফেউ থাই পার্টিতে যোগ দেন।

২০২৩ সালে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের দুই সপ্তাহ আগে দ্বিতীয় সন্তানের মা হন পেতংতার্ন। নির্বাচনে তিনি ছিলেন একজন জনপ্রিয় প্রার্থী। পেতংতার্ন থাকসিন পরিবার থেকে দেশের শীর্ষ পদে স্থান পাওয়া তৃতীয় ব্যক্তি। তাঁর বাবা থাকসিন থাই রক থাই পার্টি থেকে ২০০১ সালে প্রধানমন্ত্রী হন। ২০০৬ সালে সামরিক অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার আগপর্যন্ত এ পদেই ছিলেন তিনি।

থাকসিনের বোন ইংলাক সিনাওয়াত্রা ২০১১ সালে প্রধানমন্ত্রী হন। ২০১৪ সালে সাংবিধানিক আদালত তাঁকে সেই থেকে অপসারণ করে। ওই বছর আরেক সামরিক অভ্যুত্থানে কয়েক মাসের জন্য রাজনৈতিক অস্থিরতায় পড়ে থাইল্যান্ড। ওই ঘটনার পর গ্রেফতারি এড়াতে থাকসিন ও ইংলাক দুজনই দেশ ছেড়ে স্বেচ্ছা নির্বাসনে যান। গত বছরের অগস্টে দেশে ফেরেন থাকসিন।

২০২৩ সালের অক্টোবরে পেতংতার্নকে দলের নেত্রী হিসেবে বেছে নেওয়া হয়। এবার থাইল্যান্ডের সর্বকনিষ্ঠ প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব পালন করবেন পেতংতার্ন। স্রেথার অপসারণের পর থাইল্যান্ডের পার্লামেন্টে ভোটাভুটি হয়েছিল। পার্লামেন্টের ৪৯৩ আসনের মধ্যে তাঁর দল ও জোটের আসন ৩১৪। ভোটাভুটিতে পেতংতার্নের পক্ষে ৩১৯টি ভোট পড়ে, আর বিপক্ষে পড়ে ১৪৫টি।

Advertisement