গাজায় ইজরায়েলের সামরিক অভিযানের তীব্রতা আরও বেড়েছে। রবিবার সকাল থেকে শহরের বিভিন্ন অংশে ধারাবাহিক বিমান হামলায় কমপক্ষে ১৭ জন সাধারণ নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে। নিশানা করা হয়েছে বহুতল ভবন, পরিত্যক্ত স্কুল এবং শরণার্থীদের ত্রিপলের তাঁবুও।
ইজরায়েলের সেনার দাবি, গাজা শহরের একাধিক বহুতল ভবন হামাস গোষ্ঠীর ঘাঁটি ও নজরদারির কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছিল। সেই কারণেই সেগুলিতে লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়েছে। পাশাপাশি একটি পরিত্যক্ত স্কুলে এবং আল-ওয়াফা হাসপাতালের অদূরে আশ্রয়হীনদের তাঁবুতে বোমা পড়ার ঘটনাও ঘটেছে বলে অভিযোগ।
Advertisement
এই অবস্থার জন্য পুরোপুরি হামাসকেই দায়ী করেছে তেল আভিভ। ইজরায়েলের বিদেশমন্ত্রী গিদোন সার রবিবার জানিয়েছেন, ‘যদি হামাস পণবন্দিদের মুক্তি দেয় এবং অস্ত্রসমর্পণ করে, তাহলে আগামী কালই গাজায় সংঘর্ষ থেমে যেতে পারে।’
Advertisement
অন্যদিকে, হামাস গোষ্ঠী তাদের অবস্থান স্পষ্ট করে জানিয়েছে, ইজরায়েলকে আগে গাজা থেকে সেনা প্রত্যাহার করতে হবে এবং অবরোধ তুলতে হবে, তবেই তারা পণবন্দিদের মুক্তি দেবে। শনিবার এই বিষয়ে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেছিল হামাস। এর পরেই রবিবার ফের শর্তের পক্ষে সওয়াল করেন ইজরায়েলি মন্ত্রী।
ইজরায়েলের বাহিনী ইতিমধ্যেই গাজা ভূখণ্ডের প্রায় ৪০ শতাংশ এলাকার উপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছে বলে সেনাবাহিনীর তরফে দাবি করা হয়েছে। গাজা শহরের বাসিন্দাদের দক্ষিণ প্রান্তে, আল-মাওয়াসি অঞ্চলে চলে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। ওই অঞ্চলকে ‘মানবিক করিডর’ বলে ঘোষণা করেছে ইজরায়েল, যেখানে খাদ্য, পানীয় জল ও চিকিৎসার ব্যবস্থা রয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
তবে আল-মাওয়াসি কতটা নিরাপদ, তা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে রাষ্ট্রসঙ্ঘ। রাষ্ট্রসঙ্ঘের তরফে জানানো হয়েছে, যুদ্ধবিধ্বস্ত অঞ্চলে বাস্তুচ্যুত নাগরিকদের জন্য একটি ‘নিরাপদ অঞ্চল’ গঠন করলেও, সেখানে পর্যাপ্ত রক্ষাকবচ বা নিরাপত্তার ব্যবস্থা না থাকলে নতুন করে বিপদের আশঙ্কা থেকেই যায়।
গাজায় চলা এই সংঘর্ষে এখনও পর্যন্ত কয়েক হাজার মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে। ইজরায়েলি সেনার এই ধাঁচের আক্রমণে সাধারণ নাগরিকদের জীবন বিপন্ন হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ জানাচ্ছে একাধিক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা।
Advertisement



