• facebook
  • twitter
Friday, 5 December, 2025

ট্রাম্পের প্রস্তাবে ইজরায়েল ও হামাস রাজি হওয়ার পর ফের হামলা গাজায়, মৃত ৭

হামাস শান্তি প্রস্তাব সম্মতি জানানোর পরেই ফের গাজায় হামলা চালাল নেতানিয়াহু

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরে ইজরায়েলে হামলা চালায় জঙ্গি সংগঠন হামাস। এরপরই প্যালেস্তাইনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে নেতানিয়াহু। এখনও পর্যন্ত হামাস-ইজরায়েলের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে প্রাণ গিয়েছে হাজার হাজার শিশু-নারী-সহ সাধারণ মানুষের। ইজরায়েলের হামলায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে গাজা। দুর্ভিক্ষ ও মহামারী দেখা দিয়েছে সেখানে। যাঁরা বেঁচে আছেন তাঁদের কাছে প্রাণ ওষ্ঠাগত হয়ে উঠেছে। কবে এই যুদ্ধ থামবে সে দিকে তাকিয়ে গোটা বিশ্ব। গাজার যুদ্ধ থামাতে ২০ দফা প্রস্তাব পেশ করেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

নেতানিয়াহু সেই প্রস্তাবে রাজি হলেও হামাস নীরব ছিল। শুক্রবার হামাসকে চরম সময়সীমা বেঁধে দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। রবিবার ৬টার মধ্যে শান্তিচুক্তিতে স্বাক্ষর করার জন্য হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়। না হলে নরক নেমে আসবে বলেও হুঙ্কার ছাড়েন ট্রাম্প। রবিবারের আগেই হামাস শান্তি প্রস্তাবে রাজি বলে জানিয়ে দিল। সমস্ত ইজরায়েলি পণবন্দি এবং মৃত পণবন্দিদের দেহ ফেরাবার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছে হামাস। ফলে দীর্ঘমেয়াদী সংঘাত শেষে গাজায় যুদ্ধের সমাপ্তি এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা।

Advertisement

উল্লেখ্য, কিছুদিন আগেই গাজার যুদ্ধ থামানো নিয়ে ট্রাম্পের সঙ্গে বিশেষ বৈঠক করেন ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। তারপরেই হোয়াইট হাউসের তরফে ২০ দফা পরিকল্পনা প্রকাশ করা হয়। সংঘর্ষবিরতি থেকে গাজায় নতুন সরকার গঠন-সহ একাধিক প্রস্তাব রাখেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।

Advertisement

ইজরায়েল এবং হামাস দু’পক্ষই প্রস্তাব মেনে নিলে সঙ্গে সঙ্গে যুদ্ধবিরতি হবে। ৭২ ঘণ্টার মধ্যে জীবিত এবং মৃত পণবন্দিদের ফেরাতে হবে। ইজরায়েলও সমস্ত বন্দিদের মুক্তি দেবে। রাষ্ট্রসংঘ এবং রেড ক্রসের তত্ত্বাবধানে গাজার জন্য বিপুল ত্রাণ পাঠানো হবে। এই প্রস্তাবে অবশেষে সম্মতি জানিয়েছে হামাস। এরপরই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এক্স হ্যান্ডলে ট্রাম্পের প্রচেষ্টার প্রশংসা করেন।

হামাস জানিয়েছে, জীবিত ও মৃত সমস্ত বন্দিদের তারা ফিরিয়ে দেবে। আলোচনায় বসতে রাজি বলেও জানিয়েছে তারা। পাশাপাশি গাজার শাসনভার তারা কোনও প্যালেস্তিনীয় গোষ্ঠীর হাতেই তুলে দিতে চায় বলেও জানিয়েছে।

হামাসের বিবৃতি নিজের সমাজমাধ্যমে প্রকাশ করেছেন ট্রাম্প। হামাস লিখেছে, ‘গাজ়া স্ট্রিপে আমাদের লোকজনের উপর অত্যাচার, আগ্রাসন থামাতে বৃহত্তর স্বার্থে হামাস নেতৃত্ব ট্রাম্পের পরিকল্পনা নিয়ে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করেছেন এবং তার ভিত্তিতে এই বিবৃতি জারি করা হচ্ছে। গাজায় যুদ্ধ থামাতে মুসলিম এবং আরব দেশগুলির প্রচেষ্টা, ট্রাম্পের প্রচেষ্টার প্রশংসা করছে হামাস।

ট্রাম্পের প্রস্তাব অনুযায়ী হামাস বন্দিদের মুক্তি দেওয়ার প্রস্তাবে রাজি। এর জন্য কিছু শর্ত প্রয়োগ করা অবশ্যম্ভাবী। এই প্রেক্ষিতে হামাস সমঝোতার শর্তাবলি এবং গোটা প্রক্রিয়া নিয়ে বিশদে কথা বলতে আলোচনার টেবিলে যেতে চায়। প্যালেস্তাইনি কোনও গোষ্ঠীর হাতে গাজার প্রশাসনিক দায়িত্ব তুলে দিতে চায় হামাস।’

হামাসের বিবৃতির পরেই ইজরায়েলকে পাল্টা ‘নির্দেশ’ দেন ট্রাম্প। সমাজমাধ্যমে তিনি লেখেন, ‘এইমাত্র হামাস যে বিবৃতি জারি করল, তার ভিত্তিতে মনে হচ্ছে ওরা দীর্ঘস্থায়ী শান্তিস্থাপনে রাজি। গাজায় বোমা হামলা অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে ইজরায়েলকে। যাতে আমরা বন্দিদের নিরাপদে এবং দ্রুত বার করে আনতে পারি। এ নিয়ে ইতিমধ্যে আলোচনা শুরু হয়েছে। এটা শুধু গাজার বিষয় নয়, এটা পশ্চিম এশিয়ায় বহুকাঙ্ক্ষিত শান্তির বিষয়।’

হামাস শান্তি প্রস্তাব সম্মতি জানানোর পরেই ফের গাজায় হামলা চালাল নেতানিয়াহু। কথা রাখলেন না ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শান্তি প্রস্তাবে রাজি হওয়ার পরই গাজায় হামলা চালাল তেল আভিভ। ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে খবর। শনিবার সকালে গাজা শহর এবং গাজার দক্ষিণাংশের খান ইউনিস এলাকায় গোলাবর্ষণ করে ইজরায়েলি সেনা। এর মধ্যে গাজা শহরে মৃত্যু হয়েছে ৪ জনের। অন্যদিকে, খান ইউনিস এলাকায় মৃত্যু হয়েছে ২ জন সাধারণ নাগরিকের। ইজরায়েলের এই হামলায় প্রশ্ন উঠছে, গাজায় কি শান্তি ফিরবে?

Advertisement