• facebook
  • twitter
Saturday, 6 December, 2025

ধস-বন্যায় বিপর্যস্ত নেপাল, মৃত ৫১, আটকে বহু পর্যটক

‘পাশে আছি’ বার্তা মোদীর

ধস-বন্যায় বিপর্যস্ত নেপাল। চলছে উদ্ধার কাজ।

টানা বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত নেপাল। রবিবার সকাল পর্যন্ত পাহাড়ি দেশটির বিভিন্ন প্রান্তে ভয়াবহ ধস ও বন্যায় মৃত্যু হয়েছে অন্তত ৫১ জনের। প্রাণহানির পাশাপাশি দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা কার্যত অচল হয়ে পড়েছে। প্রশাসন জানিয়েছে, দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর সক্রিয়তার জেরে কোশি, মাধেস, বাগমতী, গন্ডকি ও লুম্বিনি — এই পাঁচটি প্রদেশে সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

নেপালের প্রশাসন ও সশস্ত্র পুলিশ বাহিনী (এপিএফ) জানিয়েছে, অনবরত বৃষ্টিতে নতুন করে ধসের আশঙ্কায় রাস্তায় যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। দেশের একাধিক জাতীয় সড়ক এবং পাহাড়ি হাইওয়েতে ধস নেমে বিপর্যস্ত যানবাহন ব্যবস্থা। বহু এলাকা কার্যত বিচ্ছিন্ন। আটকে পড়েছেন শতাধিক দেশি-বিদেশি পর্যটক। প্রশাসন তাঁদের আপাতত হোটেলেই থাকার পরামর্শ দিয়েছে।

Advertisement

বাগমতী ও পূর্ব রাপ্তি নদীতে লাল সতর্কতা জারি করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই দুর্গত এলাকাগুলিতে নামানো হয়েছে সেনাবাহিনী ও উদ্ধারকারী দল। স্থানীয় সূত্রে খবর, ইলাম জেলার দেউমাই ও মাইজোগমাই পুরনিগমে ৮ জন করে, ইলাম পুরসভা ও সান্দাকপুর গ্রামীণ পুরনিগমে ৬ জন করে, সূর্যোদয় এলাকায় ৫ জন, মাংগসেবাংয়ে ৩ জন এবং ফাকফোকথুম গ্রামে ১ জনের মৃত্যু হয়েছে। কেবল ইলামেই প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৩৭ জন।

Advertisement

জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর (এনডিআরআরএমএ) মুখপাত্র কালীদাস ধৌবাজি জানান, ধসের জেরে বহু যানবাহন জাতীয় সড়কের মাঝপথে আটকে ছিল। সোমবার থেকে জরুরি পরিষেবা ও পণ্যবাহী ট্রাকগুলিকে সীমিতসংখ্যায় চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে স্থানীয় প্রশাসনের নির্দেশ মেনে তবেই রওনা হতে বলা হয়েছে।

এই প্রাকৃতিক দুর্যোগে নেপালের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছে ভারত। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তাঁর সমাজমাধ্যমে নেপালের জনগণের উদ্দেশে শোকবার্তা জানিয়ে লিখেছেন, ‘প্রবল বৃষ্টিতে নেপালে বহু মানুষের প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এই ঘটনা অত্যন্ত বেদনাদায়ক। এই দুঃসময়ে আমরা নেপালের মানুষ ও সরকারের পাশে আছি। পড়শি ও বন্ধু দেশ হিসাবে যে কোনও প্রয়োজনে নেপালকে সাহায্য করা আমাদের নৈতিক কর্তব্য।’

প্রশাসনের পূর্বাভাস, অন্তত আগামী ২৪ ঘণ্টা ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। সেই সঙ্গে নতুন করে ধস নামার আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। ইতিমধ্যেই ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দেশের মধ্যে চলাচলকারী বিমানের ওঠানামা স্থগিত রাখা হয়েছে।

অন্যদিকে, নেপালের পাহাড়ি অঞ্চল থেকে নেমে আসা অতিরিক্ত জলের জেরে ইন্দো-নেপাল সীমান্তবর্তী বিহারের একাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। মেচি, কনকই, রটুয়া, নুনা ও বকরা নদীর জলস্ফীতির ফলে বহু এলাকা জলের তলায়। এসএসবি ও স্থানীয় পুলিশ যৌথভাবে উদ্ধার কাজে নেমেছে। গ্রামবাসীদের নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে রবিবার বিকেল থেকে মাইকিং করে সতর্ক করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, একদিকে অশান্ত রাজনৈতিক পরিস্থিতি, অন্যদিকে ভয়াবহ প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে বিপর্যস্ত নেপাল। দেশটি এখন এক অনিশ্চিত সময়ের সঙ্গে লড়ছে।

Advertisement