• facebook
  • twitter
Sunday, 3 August, 2025

পিএনবি জালিয়াতি কাণ্ডে আমেরিকায় গ্রেপ্তার নীরব মোদীর ভাই নেহাল

পলাতক নীরব মোদীর ভাই নেহাল মোদী গ্রেপ্তার। পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্কের (পিএনবি) আর্থিক তছরুপের মামলায় নীরবের পাশাপাশি অভিযুক্ত নেহালও।

পলাতক নীরব মোদীর ভাই নেহাল মোদী গ্রেপ্তার। পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্কের (পিএনবি) আর্থিক তছরুপের মামলায় নীরবের পাশাপাশি অভিযুক্ত নেহালও। নেহাল বর্তমানে বেলজিয়ামের নাগরিক। ভারতের দুই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই এবং ইডির তরফে নেহালকে প্রত্যর্পণের জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছিল। সংবাদ সংস্থা সূত্রে খবর, ভারতের অনুরোধের প্রেক্ষিতেই তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শনিবার দুপুরে (ভারতীয় সময় অনুসারে) জানা যায়, আমেরিকায় গ্রেপ্তার হয়েছেন নেহাল।

পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক প্রতারণা মামলায় নেহালের বিরুদ্ধে টাকা পাচার, বেআইনি আর্থিক লেনদেন এবং তদন্তকে বাধা দেওয়ার একাধিক অভিযোগের বিরুদ্ধে ইডির চার্জশিটেও তাঁর নাম স্পষ্টভাবে উল্লেখ আছে। এমনকি প্রমাণ লোপাট এবং নীরব মোদীকে পালাতে সাহায্য করার কথাও উল্লেখ রয়েছে। নেহালের বিরুদ্ধে দু’টি মামলা রয়েছে – আর্থিক তছরূপ প্রতিরোধকারী আইন, ২০০২-এর (পিএমএলএ) আওতায় ৩ নম্বর ধারা। দ্বিতীয়ত, ভারতীয় দণ্ডবিধির ১২০বি ধারায় অপরাধের চক্রান্ত করা এবং ২০১ নম্বর ধারায় অপরাধের পর পালিয়ে যাওয়া।

নেহাল মোদী বর্তমানে বেলজিয়ামের নাগরিক। তিনি অ্যান্টওয়ার্পে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ইংরেজি, হিন্দি এবং গুজরাটি ভাষা জানেন।৪ জুলাই তাঁকে গ্রেপ্তার করেছে মার্কিন প্রশাসন। সিবিআই এবং ইডির প্রত্যার্পণের অনুরোধে রেড কর্নার নোটিশ জারি করেছিল ইন্টারপোল। নেহালকে প্রত্যর্পণে মার্কিন প্রশাসনের উপর চাপ তৈরি করেছিল ভারতের দুই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই এবং ইডি। মনে করা হচ্ছে, সেই কারণেই নীরবের ভাইকে গ্রেপ্তারে তৎপর হয় হোয়াইট হাউস।

শনিবার নেহাল মোদীকে পেশ করা হয় আমেরিকার আদালতে। তদন্তকারী সংস্থার হেফাজতে নেওয়া হয়েছে নেহালকে। ১৭ জুলাই পরবর্তী শুনানি। অনুমান, সেই শুনানিতে জামিনের আবেদন জানাতে পারেন তিনি। নেহালকে ভারতের হাতে প্রত্যর্পণের জন্য ইতিমধ্যে আইনি প্রক্রিয়া শুরু করেছে আমেরিকার প্রশাসন। আমেরিকার তদন্তকারী সংস্থার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, পরবর্তী শুনানিতে জামিনের আবেদন জানাতে পারেন নেহাল। সেক্ষেত্রে আমেরিকার সরকারি আইনজীবীরা ওই জামিনের আর্জির বিরোধিতা করতে প্রস্তুত।

২০১৮ সালে প্রথম পিএনবি কাণ্ড প্রকাশ্যে আসে। অভিযোগ উঠেছিল, ব্যাঙ্কের কিছু কর্মীর সহায়তায় কোটি কোটি টাকা তছরুপ করেন নীরব মোদী এবং তাঁর মামা মেহুল চোকসি। মুম্বই কোর্টে অবস্থিত পিএনবি-র ব্র্যাডি হাউস শাখায় প্রথম বিষয়টি সামনে আসে। সেই সময়ে জানা গিয়েছিল, প্রায় ১৪ হাজার কোটি টাকার কেলেঙ্কারি হয়েছে। বিষয়টি সামনে আসার পরেই ভারত ছেড়ে পালিয়ে যান নীরব মোদী। তারপর থেকে আর দেশে ফেরেননি তিনি।

২০১৯ সালের ১৪ মার্চ লন্ডনের একটি ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট খুলতে গিয়ে গ্রেপ্তার হন নীরব মোদী। বছরখানেক আগে আদালতে তিনি বলেন, ‘আমার সমস্ত সম্পত্তি ফ্রিজ করে দেওয়া হয়েছে। আইনজীবীর ফি দেওয়ারও সামর্থ্য নেই।’ তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলেও দাবি করতে দেখা যায় তাঁকে। উল্লেখ্য, গত বছর ঋণখেলাপি ব্যবসায়ীর ২৯ কোটি ৭৫ লক্ষ টাকার সম্পত্তি অস্থায়ীভাবে বাজেয়াপ্ত করেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। বেআইনি আর্থিক লেনদেন প্রতিরোধ আইনে নীরবের এই বিপুল সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয়।

আপাতত লন্ডনের একটি জেলে বন্দি রয়েছেন নীরব। সেই কেলেঙ্কারির ছায়াতেই এবার ধরা পড়লেন তাঁর ভাই নেহালও। কয়েক মাস আগেই এই মামলার আরও এক অভিযুক্ত মেহুল চোকসি বেলজিয়ামে গ্রেপ্তার হন। তাঁকেও ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া চলছে, যদিও এখনও পর্যন্ত এই কাজে ভারত সরকার সফল হয়নি। এবার কেন্দ্রের নজর নেহাল মোদীর প্রত্যর্পণ প্রক্রিয়ার দিকে।