রাষ্ট্রসঙ্ঘের সাধারণ সভায় বক্তব্য রাখার সময় ‘পাকিস্তানি’ তকমা পেয়েছিলেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ওই ঘটনায় নিউ ইয়র্কে রাষ্ট্রসঙ্ঘ কার্যালয়ের সামনে বৃহৎ বিক্ষোভে অংশ নেন প্রবাসী বাংলাদেশিদের একটি বড় অংশ। এই পরিস্থিতি সামলাতে মুহাম্মদ ইউনূস দেশ ও জাতি পুনর্গঠনে প্রবাসী বাংলাদেশিদের সহযোগিতা চেয়ে নতুনভাবে এগিয়ে আসার আহবান জানিয়েছেন।
শনিবার ‘এনআরবি কানেক্ট ডে: এমপাওয়ারিং গ্লোবাল বাংলাদেশিজ’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘দূরে গ্যালারিতে দাঁড়িয়ে খেলা দেখব, এমন দিন শেষ। গ্যালারিতে বসে দেখার দিন গেছে। এখন আমাদের নিজেদেরই খেলতে হবে।’ তাঁর বক্তব্যে প্রবাসী বাংলাদেশিদের দেশ-সংস্কার ও উন্নয়নে সরাসরি অংশগ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।
Advertisement
প্রসঙ্গত, ২০২৪ সালের জুলাইয়ে বিপ্লবের মাধ্যমে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করে। এই সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্বে থাকা মুহাম্মদ ইউনূসকে ইতিমধ্যেই সংখ্যালঘু নির্যাতন ও নানাবিধ সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে। সেই রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে রাষ্ট্রসঙ্ঘে দেওয়া বক্তব্য ও প্রবাসীদের বিক্ষোভ দেশজুড়ে ও আন্তর্জাতিক মহলে জল্পনা বাড়িয়েছে।
Advertisement
ইউনূস বলেন, ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে যে পরিবর্তনের স্বপ্ন আমরা দেখেছি, তা এগিয়ে নিয়ে যেতে প্রবাসী বাংলাদেশিরা তাঁদের নিজ নিজ সক্ষমতা অনুযায়ী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারেন।’ এই বক্তব্যে তিনি প্রবাসীদের দেশের পুনর্গঠনে অংশগ্রহণের উপর জোর দিয়েছেন।
এদিন অনুষ্ঠানের শুরুতে বাংলাদেশে বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন একটি বিস্তারিত বিবৃতি প্রকাশ করেন। এতে তিনি জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ১৫ মাসে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি তুলে ধরে রেমিটেন্সে ২১ শতাংশের বেশি বৃদ্ধির ইঙ্গিত দেন। এই অবদানের জন্য তিনি প্রবাসীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
এর পাশাপাশি বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জামাত-ই-ইসলামির নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মহম্মদ তাহের ও এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন অনুষ্ঠানে অভ্যুত্থান পরবর্তী রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেন। তাঁরা দেশের রাজনৈতিক পরিবর্তন ও প্রবাসীদের ভূমিকার কথা উল্লেখ করেন।
তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, রাষ্ট্রসঙ্ঘে ‘পাকিস্তানি’ তকমা ও তার পরের বিক্ষোভ বাংলাদেশের বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের ভাবমূর্তি ও নীতিগত কৌশল গুরুত্বপূর্ণ মোড় নিয়েছে।
Advertisement



