মায়ানমার থেকে আরও রোহিঙ্গা বাংলাদেশে ঢোকার চেষ্টা করছে

আবার মায়ানমার থেকে পালিয়ে কক্সবাজারের টেকনাফ সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করছে রােহিঙ্গারা।

Written by Basudeb Dhar Dhaka | September 9, 2019 7:32 pm

কক্সবাজারে রোহিঙ্গা রিলিফ শিবির। (Xinhua/Jibon Ahsan/IANS)

আবার মায়ানমার থেকে পালিয়ে কক্সবাজারের টেকনাফ সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করছে রােহিঙ্গারা। শুক্রবার গভীর রাতে একটি নৌকায় ছয় রােহিঙ্গা টেকনাফের হ্নীলা নয়াপাড়া সীমান্ত দিয়ে প্রবেশের চেষ্টা চালায়। এর আগেও ২২ জন রােহিঙ্গাকে অনুপ্রবেশের সময় প্রতিহত করে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। শনিবার বেলা ১১টার দিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন টেকনাফ-২ বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়নের উপ-অধিনায়ক মেজর শরীফুল ইসলাম জোমাদ্দার।

বিজিবি জানায়, শুক্রবার গভীর রাতে হীলা নয়াপাড়া নাফ নদের কুতুবদিয়া ঘাট এলাকা দিয়ে অনুপ্রবেশের চেষ্টাকারে মায়ানমারের ছয় রােহিঙ্গাকে আটক করা হয়। টেকনাফের হীলা নয়াপাড়া বিশেষ ক্যাম্পের নায়েক সুবেদার মােহাম্মদ শাহ আলমের নেতৃত্বে একটি বিশেষ টহল দল তাদের আটক করে। আটক রােহিঙ্গাদের মধ্যে তিনজন নারী এবং তিনজন শিশু ছিল। পরে গভীর রাতে আটক রােহিঙ্গাদের একই সীমান্ত দিয়ে মায়ানমারে ফেশ্রত পাঠানাে হয়।

মেজর শরীফুল ইসলাম জোমাদ্দার বলেন নতুন করে কোনও রোহিঙ্গা ঢুকতে দেওয়া হবে না। অনুপ্রবেশ রােধে সীমান্তে সতর্কতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছে বিজিবি। সম্প্রতি সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশকালে ২৮ রােহিঙ্গাকে প্রতিহত করা হয়েছে। পাশাপাশি মাদক পাচার ঠেকাতে মায়ানমার সীমান্তে বিজিবি সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।

এ ব্যাপারে টেকনাফ লেদা রোহিঙ্গা শিবিরের চেয়ারম্যান মােহাম্মদ আলম জানান, মায়ানমার থেকে যাওয়া রােহিঙ্গারা কষ্টের মধ্যে দিয়ে জীবন যাপন করছে। এ কারণেই তারা এখনও বাংলাদেশে প্রবেশের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তবে আগের মতাে রােহিঙ্গারা বাংলাদেশে প্রবেশ করতে পারছেন না। টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মােহাম্মদ রবিউল হাসান বলেন, মাঝে মধ্যে সীমান্ত দিয়ে রােহিঙ্গারা অনুপ্রবেশের চেষ্টা চালিয়ে থাকে। তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।

২০১৭ সালে ২৫ আগস্ট রাখাইনের ৩০টি নিরাপত্তা চৌকিতে হামলার ঘটনা ঘটে। প্রতিক্রিয়ায় মায়ানমার সেনাবাহিনী রােহিঙ্গাদের ওপর ব্যাপক নিপীড়ন শুরু করে। ফলে প্রাণ বাঁচাতে প্রায় সাত লাখ রোহিঙ্গা সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নেয়। পুরনােসহ উখিয়া টেকনাফের ৩৪টি শিবিরে ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা অবস্থান করছে। জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, উখিয়া টেকনাফে আশ্রিত রােহিঙ্গার সংখ্যা ১১ লাখ ৮৫ হাজার ৫৫৭। তাদের মধ্যে নারী ও শিশুর সংখ্যাই বেশি।

জাতিগত নিধন ও গণহত্যার প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রােহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে আন্তর্জাতিক চাপের মুখে ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে বাংলাদেশ মায়ানমার প্রত্যাবাসন চুক্তি সম্পন্ন হয়। তবে এখন পর্যন্ত কোনও রােহিঙ্গা বিনা শর্তে মায়ানমার ফিরে যেতে রজি হয়নি।