অবৈধ অনুপ্রবেশের জন্য মালদ্বীপের প্রাক্তন ভাইস প্রেসিডেন্টকে ফেরত পাঠাল ভারত

ভারতীয় উপকূলরক্ষী বাহিনীর হাতে ধরা পড়লেন মালদ্বীপের প্রাক্তন ভাইস প্রেসিডেন্ট আহমেদ আদিব আবদুল গফুর।

Written by SNS New Delhi | August 4, 2019 2:30 pm

(মালদ্বীপের প্রাক্তন ভাইস প্রেসিডেন্ট আহমেদ আদিব আবদুল গফুর। Photo: Ahmed SHURAU / AFP)

বৈধ নথিপত্র ছাড়া পণ্যবাহী জাহাজে ভারতের জলসীমা অতিক্রম করে তামিলনাড়ুর তুতিকোরিনে অনুপ্রবেশের জন্য ভারতীয় উপকূলরক্ষী বাহিনীর হাতে ধরা পড়লেন মালদ্বীপের প্রাক্তন ভাইস প্রেসিডেন্ট আহমেদ আদিব আবদুল গফুর।

কুটনৈতিক নীতি মেনে শনিবার তাঁকে দেশে পাঠান হয়। ‘ভারতীয় উপকূলরক্ষী বাহিনীর তৎপরতায় মালদ্বীপের ভাইস প্রেসিডেন্টকে দেশে পাঠান হয়েছে। উপকূলরক্ষী বাহিনীর হেফাজতে তাঁকে রাখা হয়। আমরা তাঁর পরিকল্পনা জানতে পারিনি। ওনাকে দেশে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য মালদ্বীপ সরকারকে বাের্ড পাঠানাের আর্জি জানান হয়েছে’ তুতিকোরিনের এক পুলিশ অফিসার জানিয়েছেন।

তামিলনাড়ুর উপকূল থেকে মালদ্বীপের প্রাক্তন রাষ্ট্রনেতার আটক সম্পর্কে ভারতের বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র রভীশ কুমার জানিয়েছে, পর্যটনের বৈধ অনুমতিপত্র থাকলে কোনও সমস্যা হত না। এক্ষেত্রে তা হয়নি, উনি সােজা পথে প্রবেশ করেননি। তাঁর কাছে বৈধ কোনও প্রমাণপত্রও ছিল না।

এক্ষেত্রে ওঁনাকে ভারতে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া সম্ভব নয়। আহমেদ আদিব আবদুল গফুর (৩৭) দ্বীপরাষ্ট্র মালদ্বীপের সব থেকে কনিষ্ঠতম ভাইস প্রেসিডেন্টন। তিনি ২০১৫ সালে এই পদে মনােনিত হন। তৎকালীন প্রেসিডেন্ট আবদুল্লাহ ইয়ামেনের ওপর বােমা হামলায় যড়যন্ত্রের পিছনে আদিরে হাত থাকার সন্দেহে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। গত মে মাসে তিনি জেল থেকে ছাড়া পান। এখন তাঁর বিরুদ্ধে দেশের শীর্ষ আদালতে দুর্নীতির মামলা চলছে। জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর বেশ কিছুদিন তিনি গৃহবন্দি ছিলেন।

মালদ্বীপে প্রাক্তন ভাইস প্রেসিডেন্ট আহমেদ আদিব আব্দুল গফুর  লুকিয়ে দেশ ছাড়ার জন্য সেদেশের সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, রাজনৈতিক আশ্রয় পাওয়ার আশা নিয়েই হয়তাে প্রাক্তন ভাইস প্রেসিডেন্ট সমুদ্রপথে আত্মগােপন করে ভারতে প্রবেশের চেষ্টা করেন। কয়েকজন সঙ্গীকে নিয়ে তিনি একটি মালবাহী জাহাজে করে মালদ্বীপে ছেড়ে ভারতের উদ্দেশ্যে পালান। রাজধানী শহর মালে থেকে নিরুদ্দেশ হতে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। সতর্ক করা হয় নৌবাহিনীকে। কিন্তু তাঁর খোঁজ পাওয়া যায়নি।

মালদ্বীপের প্রাক্তন ভাইস প্রেসিডেন্টকে ভারতীয় জলসীমা অবৈধভাবে পার করার অভিযােগে তামিলনাড়ু তুতিকোরিনের কাছে আটক করে উপকূল রক্ষী বাহিনী। তাঁর বােট আটক করা হয়। উপকূলরক্ষী বাহিনী সন্দেহের বশে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করলে প্রাক্তন প্রেসিডেন্টের পরিচয় জানতে পেরে চাঞ্চল্য ছড়ায়। কুটনৈতিক নিয়ম মেনে মালদ্বীপ সরকারকে বিষয়টি জানান হয়।

তারপর থেকে শুরু হয় রাজনৈতিক টানাপােড়েন। প্রাক্তন প্রেসিডেন্টকে নিয়ে শুরু হয় কুটনৈতিক টালবাহানা। ভারতের আইন মেনে অনুপ্রবেশের দায়ে তাঁর বিচার হবে নাকি মালদ্বীপ সরকারের হাতে তুলে দেওয়া হবে, এই নিয়ে দিল্লি ও মালের মধ্যে কুটনৈতিক আলােচনা প্রক্রিয়া শুরু হয়। শনিবার কড়া নিরাপত্তার মধ্যে প্রাক্তন ভাইস প্রেসিডেন্ট আদিকে তাঁর দেশে ফেরত পাঠান হয়েছে। ভারত-মালদ্বীপের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক সুমধুর।

আগেও মালদ্বীপ অভ্যন্তরীন সংকটে ভারত সরকারকে পাশে পেয়েছে। সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে মালদ্বীপকে ঘিরে দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতিতে চলছে টানাপােড়েন। সার্কভুক্ত দেশগুলি বিশেষ করে পাকিস্তানের অভিযােগ মালদ্বীপের ওপর প্রভাব খাটাতে তৎপর ভারত। সেই অভিযােগকে মান্যতা দিয়ে পাকিস্তানের বন্ধুরাষ্ট্র চিন হুঁশিয়ারি দিয়েছে এই দ্বীপরাষ্ট্রকে। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের খবর, দ্বীপরাষ্ট্র মালদ্বীপকে ঘিরে চিন ভারতের কুটনৈতিক লড়াই বড় আকার নিয়েছে।