• facebook
  • twitter
Friday, 5 December, 2025

টানা নির্বাচনী পরাজয়ের জেরে ইস্তফা শিগেরু ইশিবার, নেতৃত্বে পরিবর্তনের পথে জাপান

টানা দু'টি গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনে পরাজয়ের চাপ অবশেষে সহ্য করতে না পেরে জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবা পদত্যাগ করলেন।

টানা দু’টি গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনে পরাজয়ের চাপ সহ্য করতে না পেরে অবশেষে জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবা পদত্যাগ করলেন। রবিবার সকালে সরকারি সংবাদমাধ্যম এনএইচকে-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ইস্তফার ইচ্ছা প্রকাশের পর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই আনুষ্ঠানিকভাবে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা করেন তিনি।

বর্তমানে জাপানে ক্ষমতাসীন লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (এলডিপি) এবং তাদের জোটসঙ্গী কোমেইতো পার্টি দেশ শাসন করলেও, দলের অভ্যন্তরে ইশিবার নেতৃত্ব নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই অসন্তোষ চলছিল। বিশেষ করে গত বছরের জুলাইয়ে পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারানোর পর থেকেই ইশিবার শাসন নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে।

Advertisement

দলের ভিতর থেকে ওঠা সমালোচনার মুখেও শুরুতে ইস্তফা দিতে রাজি ছিলেন না ইশিবা। তিনি বারবার জানিয়েছেন, দেশের অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যনীতিতে মনোনিবেশ করতেই চান তিনি। কিন্তু সম্প্রতি দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে একাধিক বৈঠকের পর অবশেষে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নেন তিনি।

Advertisement

প্রধানমন্ত্রী পদ ছাড়ার পাশাপাশি, লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির প্রেসিডেন্ট পদ থেকেও সরে দাঁড়িয়েছেন ইশিবা। দলীয় সেক্রেটারি জেনারেল মোরিয়ামকে তিনি ইতিমধ্যে নির্দেশ দিয়েছেন দ্রুত নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু করতে।

মাত্র এক বছর আগে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছিলেন শিগেরু ইশিবা। কিন্তু তাঁর মেয়াদকাল খুব একটা মসৃণ ছিল না। প্রথমে পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারায় এলডিপি। এরপর উচ্চকক্ষেও একই ফল হওয়ার ফলে দলের রাজনৈতিক ভিত্তি ক্রমশ দুর্বল হতে থাকে। বিশ্লেষকদের মতে, দেশের অর্থনৈতিক দুরবস্থা, মূল্যবৃদ্ধি এবং জীবনযাত্রার ব্যয়বৃদ্ধি সাধারণ মানুষের ক্ষোভকে বাড়িয়ে তোলে। পাশাপাশি দক্ষিণপন্থী দলগুলির উত্থান এলডিপিকে কমজোরী করে তোলে।

উল্লেখ্য, ১৯৯৫ সাল থেকে প্রায় নিরবচ্ছিন্নভাবে জাপানের ক্ষমতায় রয়েছে লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি। বিভিন্ন সময়ে দলীয় নেতৃত্বে পরিবর্তন এলেও শাসনব্যবস্থায় মৌলিক পার্থক্য খুব একটা লক্ষ্য করা যায়নি। তবে এবারের রাজনৈতিক সঙ্কট এবং ইশিবার ইস্তফা নতুন এক দিশার সূচনা করতে পারে বলেই মত পর্যবেক্ষকদের। ইশিবার পরবর্তী উত্তরসূরি কে হবেন, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই জল্পনা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে দলীয় ঐক্য বজায় রাখা এবং জনগণের আস্থা পুনরুদ্ধার করাই হবে এলডিপির প্রধান চ্যালেঞ্জ।

Advertisement