পাকিস্তানে হিন্দু মেডিকেল ছাত্রীর রহস্যমৃত্যু, দেহ ও পোশাকে মিলল পুরুষের ডিএনএ নমুনা

তদন্তকারী পাকিস্তানি গােয়েন্দা সংস্থার তরফে জানানাে হয়েছে ওই ছাত্রীর দেহে এবং পােশাকে পুরুষের ডিএনএ স্যাম্পেল পাওয়া গিয়েছে।

Written by SNS Islamabad | November 4, 2019 3:14 pm

প্রতিকি ছবি (Photo: iStock)

ক’দিন আগেই তােলপাড় হয়েছিল পাকিস্তানের লারকানা শহরের আসিফা ডেন্টাল মেডিকেল কলেজে। কারণ এই কলেজের হস্টেল থেকেই উদ্ধার হয়েছিল এক হিন্দু ছাত্রীর দেহ। কলেজ কর্তৃপক্ষের দবি ছিল, আত্মহত্যা করেছেন ওই ছাত্রী। তবে পরিবারের দাবি ছিল সংখ্যালঘু পড়ুয়া বলে খুন করা হয়েছে ওই ছাত্রীকে। শুরু হয় তদন্ত। আর তাতেই উঠে এসেছে এক চাঞ্চল্যকর তথ্য।

তদন্তকারী পাকিস্তানি গােয়েন্দা সংস্থার তরফে জানানাে হয়েছে ওই ছাত্রীর দেহে এবং পােশাকে পুরুষের ডিএনএ স্যাম্পেল পাওয়া গিয়েছে। সিন্ধু প্রদেশে লারকানা জেলার বিবি আসিফা ডেন্টাল কলেজের ফাইনাল ইয়ারের ছাত্রী নিম্রিতা চন্দানী ছিলেন একজন সােশ্যাল অ্যাক্টিভিস্টও। গত ১৬ সেপ্টেম্বর হস্টেলের ঘর থেকে নিম্রিতার দেহ উদ্ধার করেন তাঁর বন্ধুরা। খাটের উপর পড়েছিলেন নিথর নিম্রিতা। গলায় লাগানাে ছিল দড়ির ফাঁস।

ঘােটকি জেলার বাসিন্দা নিম্রিতার মৃত্যুর পর সন্দেহভাজন হিসেবে ৩২ জনকে আটক করে পুলিশ। তাদের মধ্যে ছিলেন নিম্রিতার দুই সহপাঠী মেহেরান আবরাে এবং আলি শান মেমন। নিম্রিতার মােবাইলের কল লিস্ট ঘেঁটেই এঁদের আটক করা হয় বলে জানিয়েছিল পুলিশ। তদন্তের স্বার্থে ডিএনএ টেস্টের জন্য পাঠানাে হয় নিম্রিতার দেহ। আর তারপরেই সামনে এসেছে এই তথ্য।

লারকানা জেলার সিনিয়র পুলিশ অফিসার মাসুদ বঙ্গেশ জানিয়েছেন, ডিএনএ রিপাের্টে বলা হয়েছে নিম্রিতার শরীর এবং পােশাকে পুরুষের ডিএনএ স্যাম্পেল রয়েছে। ওই পুলিশ অফিসার আরও জানিয়েছেন যে, ফরেন্সিক ল্যাবরেটরি থেকে দেওয়া এই রিপোর্ট দ্রুতই আদালতে পেশ করা হবে। গত ১৭ সেপ্টেম্বর নিম্রিতার পােশাক এবং রক্তের নমুনা জামশরু ফরেন্সিক ল্যাবরেটরিতে পাঠায় লারকানা জেলার পুলিশ। অফিসার মাদুস বঙ্গেশের কথায়, এই ডিএনএ রিপাের্ট নিম্রিতা হত্যাকাণ্ডে একটা নয়া মােড়। 

কলেজ কর্তৃপক্ষ নিম্রিতার মৃত্যুকে আত্মহত্যা বলে দাবি করলেও, তা মানতে নারাজ ছাত্রীর পরিবার। তাঁদের সাফ কথা, খুন করা হয়েছে নিম্রিতাকে। মৃতার দাদা বিশাল করাচির দাউ মেডিকেল কলেজের মেডিকেল কনসালটেন্ট। তিনিও জানিয়েছেন, তাঁর বােন আত্মঘাতী হয়নি। বরং নিম্রিতার গলায় থাকা দাগ থেকে এটা স্পষ্ট যে কেবলের তার বা ওই জাতীয় কিছু পেঁচিয়ে তাঁকে খুন করা হয়েছে। নিম্রিতার হাতেও রয়েছে বেশ কিছু আঘাতের চিহ্ন, যা দেখে নিম্রিতার দাদার অনুমান সম্ভবত ঘটনার সময় কেউ চেপে ধরে রেখেছিল তাঁর বােনের হাত।

ইতিমধ্যেই নিম্রিতার হস্টেলের ঘর থেকে নমুনা সংগ্রহ করে নিয়ে গিয়েছে ফরেন্সিক দল। পরীক্ষা করা হচ্ছে মৃতার মােবাইল এবং ল্যাপটপ। খতিয়ে দেখা হয়েছে দুই সন্দেহভাজন মেহেরান আবরাে এবং আলি শান মেমনের ফোনও। পুলিশ জানিয়েছে, নিম্রিতার সঙ্গে ভালােই যােগাযােগ ছিল এই দু’জনের। কিন্তু দু’জনেই নিম্রিতার মৃত্যুর পর প্রায় ৪০টি মেসেজ ডিলিট করে দিয়েছিলেন নিজেদের ফোন থেকে। এছাড়াও পুলিশ জানতে পেরেছে আবরাের সঙ্গে একটা সম্পর্ক ছিল নিম্রিতার। এ কথা নিজেই জানিয়েছে আবরো। এছাড়াও পুলিশের দাবি, জেরায় আবারাে জানিয়েছেন, তার সঙ্গে বিয়ের ব্যাপারে কথা বলেছিলেন নিম্রিতা। কিন্তু বিয়ের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন আবরাে।