• facebook
  • twitter
Friday, 5 December, 2025

জলবায়ু সম্মেলনে অর্থ বরাদ্দ নিয়ে মতপার্থক্য, আজও বৈঠক চলবে

পর্তুগাল এবারের সম্মেলনে বলেছে যে, ভারতের অর্থনীতির যা অবস্থা, তাতে ভারতকে আর অর্থ সাহায্য দেবার প্রয়োজন নেই। তবে প্যারিস চুক্তি অনুযায়ী অবশ্য তা মানা সম্ভব নয়।

বাকুতে জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে সম্মেলনের একটি বিশেষ মুহূর্তে।

স্নেহাশিস সুর, বাকু

২২ নভেম্বর— জলবায়ু পরিবর্তন রোধের কর্মসূচিতে অর্থ বরাদ্দ নিয়ে উন্নত ও উন্নতিশীল দেশগুলির মধ্যে মতৈক্য হল না। ফলে আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে অনুষ্ঠিত রাষ্ট্রসঙ্ঘের জলবায়ু পরিবর্তন বিশ্ব সম্মেলন শুক্রবার শেষ হওয়ার কথা থাকলেও তা সম্ভবত এখনও চলবে। উন্নতিশীল দেশগুলি জলবায়ু পরিবর্তন রোধের কাজে প্রতি বছর ১.৩ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থ বরাদ্দের দাবি করলেও উন্নত দেশগুলি বছর প্রতি মাত্র ২৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ২০৩৫ সাল পর্যন্ত বরাদ্দ স্বীকৃত হয়েছে। শুক্রবার সম্মেলনে যে আর্থিক খসড়া প্রকাশ করা হয়েছে, তাতে এই মতানৈক্যের বিষয়টি উঠে এসেছে। এর ফলে মতৈক্য ‘পৌঁছতে এখনও আলোচনা বা দর কষাকষি চলছে। সুতরাং শুক্রবার এই সম্মেলন শেষ হওয়ার কথা থাকলেও আপাতত তা হচ্ছে না। সম্মেলনের সময়সীমা আর এক-দু’দিন বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে।

Advertisement

তবে এই যে অর্থ বরাদ্দের লক্ষ্যমাত্রার উল্লেখ করা হয়েছে, তাতে এই প্রথম বিভিন্ন উন্নত দেশের সরকারের পক্ষ থেকে অর্থ বরাদ্দের সঙ্গে বেসরকারি উৎস যেমন বাণিজ্য সংস্থা, স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান, ব্যাঙ্ক সহ আর্থিক সংস্থা, দ্বিপাক্ষিক ও বহুপাক্ষিক চুক্তি মারফত অর্থ জোগাড়ের জন্যও উন্নতিশীল দেশগুলিকে আর্থিক খসড়ার ৯ নম্বর অনুচ্ছেদে আহ্বান জানানো হয়েছে।

Advertisement

অন্যদিকে খসড়ার তিন নম্বর অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, প্রতিটি দেশের ন্যাশনালি ডিটারমিন্ড কন্ট্রিবিউশন বা এনডিসি’র বরাদ্দের পরিমাণ যোগ করলে ২০৩০ সাল পর্যন্ত তার পরিমাণ দাঁড়াবে ৫.১ থেকে ৬.১ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের মধ্যে, যা প্রতি বছরের হিসেবে হবে প্রায় ৪৫৫ থেকে ৫৮৪ মার্কিন ডলার।

অন্যদিকে জলবায়ু পরিবর্তনের মোকাবিলায় বা অ্যাডপটেশনের জন্য যে অর্থের প্রয়োজন হবে, তার পরিমাণ বছর প্রতি ২১৫ থেকে ৩৮৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার হবে। জলবায়ু পরিবর্তন রোধের কর্মসূচির জন্য যে পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন ও যে পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ হচ্ছে, তার মধ্যে যে ব্যাপক তফাত থেকে যাচ্ছে, সেই বিষয়টি আর্থিক খসড়ায় খুব উদ্বেগের সঙ্গে উল্লেখ করা হয়েছে।

তবে এই খসড়ায় কোন কোন দেশ এ বিষয়ে অর্থ পাবে, সেই তালিকার পরিবর্তনের কোনও উল্লেখ নেই। এটা ভারতের স্বস্তির কারণ। পর্তুগাল এবারের সম্মেলনে বলেছে যে, ভারতের অর্থনীতির যা অবস্থা, তাতে ভারতকে আর অর্থ সাহায্য দেবার প্রয়োজন নেই। তবে প্যারিস চুক্তি অনুযায়ী অবশ্য তা মানা সম্ভব নয়।

বুধবার এই সম্মেলনের মূল অধিবেশনে ভাষণ দিতে গিয়ে ভারতের প্রতিনিধি দলের সহকারি নেতা কেন্দ্রীয় পরিবেশ দপ্তরের সচিব লীমা নন্দন বলেন, এই কপ অর্থ নিয়ে আলোচনার কপ, উন্নত ও উন্নতিশীল দেশগুলির মধ্যে ভারসাম্যের কপ, জলবায়ু পরিবর্তন রোধ করতে কাজ করার ব্যবস্থা নেবার কপ। যদি এই কপে সাফল্য না আসে, তাহলে আমরা জলবায়ু পরিবর্তন বন্ধের যুদ্ধ থেকে সরে আসতে বাধ্য হব এবং তার দায় উন্নত দেশগুলির ওপরই পড়বে।

Advertisement