কানাডার একটি সমুদ্রসৈকতের ধার থেকে এক ভারতীয় পড়ুয়ার দেহ উদ্ধার হল। মৃতের নাম বংশিকা সাইনি (২১)। প্রায় আড়াই বছর ধরে অটোয়ায় এক কলেজে পড়াশোনা করছিলেন বংশিকা। পাঞ্জাবের দেরা বস্সির বিধায়ক কুলজিৎ সিংহ রান্ধওয়ার ঘনিষ্ঠ আম আদমি পার্টি (আপ) নেতা দেবেন্দ্র সাইনির কন্যা তিনি। কলেজ লাগোয়া একটি সমুদ্রসৈকতে তাঁর দেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়। তিনদিন ধরে নিখোঁজ ছিলেন বংশিকা। অটোয়ার ভারতীয় হাই কমিশন বংশিকার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে শোকপ্রকাশ করেছে। ইতিমধ্যেই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে অটোয়া পুলিশ।
পাঞ্জাবে স্কুলজীবন শেষ করার পর প্রায় আড়াই বছর আগে ডিপ্লোমা কোর্স পড়তে অটোয়ায় গিয়েছিলেন বংশিকা। পুলিশ সূত্রে খবর, ২৫ এপ্রিল শুক্রবার রাত ৯টা নাগাদ ভাড়া বাড়ি খুঁজতে বেরিয়েছিলেন বংশিকা। সেই দিন রাত সাড়ে ১১টার পর তাঁর ফোন বন্ধ হয়ে যায়। এরপর থেকে তাঁর আর কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি। ২৬ এপ্রিল বংশিকার একটি গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষাও ছিল। সেই পরীক্ষাতে অনুপস্থিত ছিলেন তিনি। এরপর থেকে পরিবার ও বন্ধুরা তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেনি। একাধিক জায়গায় তাঁর খোঁজও নেওয়া হয়। কিন্তু বংশিকার কোনও হদিশ পাওয়া যায়নি। নানা জায়গায় তল্লাশির পর সোমবার সমুদ্রের তীর থেকে বংশিকার দেহ উদ্ধার হয়।
বংশিকার ঘনিষ্ঠেরা জানান, সাধারণত প্রতিদিন সকালে পরিবার এবং বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগ করতেন তিনি। ২৫ এপ্রিলের পর থেকে বংশিকার কোনও ফোন পাননি তাঁরা। তরুণীর বাবা তথা আপ নেতা দেবেন্দ্র জানান, শুক্রবার মেয়ের শেষ কথা হয়। তাঁর কথায় কোনও অস্বাভাবিকতা লক্ষ্য করেননি তিনি। অটোয়ার হিন্দি কমিউনিটি পুলিশকে এই ঘটনার দ্রুত তদন্তের আবেদন জানিয়েছে।
এই ঘটনার পর শোকপ্রকাশ করে এক্স হ্যান্ডলে ভারতীয় হাই কমিশন জানিয়েছে, ‘অটোয়ায় ভারতীয় ছাত্রী বংশিকার মৃত্যুর খবর পেয়ে আমরা গভীরভাবে শোকাহত। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে তুলে ধরা হয়েছে এবং স্থানীয় পুলিশ জানিয়েছে যে ঘটনার তদন্ত চলছে। আমরা বংশিকার পরিবারের পাশে রয়েছি। সব রকম সহায়তার জন্য আমরা প্রস্তুত। স্থানীয় সংগঠনগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে।’ কী কারণে বংশিকার মৃত্যু হয়েছে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। মৃত্যুর সঠিক কারণ জানতে তদন্ত শুরু করেছে অটোয়া পুলিশ।
প্রসঙ্গত, কয়েক সপ্তাহ আগে কানাডায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয়েছিল আরেক ভারতীয় পড়ুয়ার। হরসিমরত রান্ধওয়া নামে ওই তরুণী বাসের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। দুই গাড়িচালক ওই রাস্তা দিয়ে গুলি চালাতে চালাতে যাচ্ছিলেন। সেই সময় একটি গুলি লাগে হরসিমরতের বুকে। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়েছিল তাঁর। একের পর এক ভারতীয় মৃত্যুতে কানাডার নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।