• facebook
  • twitter
Friday, 5 December, 2025

গাজায় ৬ সাংবাদিকের মৃত্যুতে দুঃখপ্রকাশ নেতানিয়াহুর

গাজা উপত্যকার দক্ষিণে নাসের হাসপাতালে সোমবার ইজরায়েলি বাহিনীর পর পর দুটি বিমান হানায় নিহত হন ছয়জন সাংবাদিক সহ অন্তত ২১ জন।

প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র

দক্ষিণ গাজার নাসের হাসপাতালে বিমান হানা নিয়ে মুখ খুললেন ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। ৬ সাংবাদিক সহ অন্তত ২১ জনের মৃত্যুর ঘটনায় দুঃখপ্রকাশ করেছেন তিনি। গাজা উপত্যকার দক্ষিণে নাসের হাসপাতালে সোমবার ইজরায়েলি বাহিনীর পর পর দুটি বিমান হানায় নিহত হন ওই ২১ জন। বিস্ফোরণে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয় হাসপাতালের একটি অংশ। ঘটনায় নিহতদের মধ্যে রয়েছেন রয়টার্স, আল জাজিরা, অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের সঙ্গে যুক্ত সাংবাদিকেরা। মৃত সাংবাদিকেরা হলেন – হোসাম আল-মাসরি, মহম্মদ সালামা, মারিয়ম আবু দাকা ও মোয়াজ আবু তাহা।

এই হামলার পর প্রথমবার প্রকাশ্যে দুঃখপ্রকাশ করলেন ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। মঙ্গলবার এক্স-এ দেওয়া বিবৃতিতে তিনি লেখেন, ‘নাসের হাসপাতালে ঘটে যাওয়া দুর্ভাগ্যজনক ঘটনায় ইজরায়েল গভীরভাবে দুঃখিত। সাংবাদিক, স্বাস্থ্যকর্মী এবং নিরীহ মানুষের প্রাণের মূল্য ইজরায়েল জানে।’ একই সঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, ইজরায়েলি সেনার তরফে হামলার ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। তাঁর কথায়, ‘গাজার এই যুদ্ধ হামাসের বিরুদ্ধে, সাধারণ মানুষের বিরুদ্ধে নয়।’ তবে তাঁর এই বিবৃতি কতটা আন্তরিক, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে আন্তর্জাতিক মহল। অনেকে বলছেন, ক্রমবর্ধমান কূটনৈতিক চাপ সামলাতেই নেতানিয়াহুর এই কৌশলী দুঃখপ্রকাশ।

Advertisement

নাসের হাসপাতালের হামলার ঠিক এক সপ্তাহ আগেই গাজা সিটির আল-শিফা হাসপাতালে ইজরায়েলি বাহিনীর আর এক হামলায় প্রাণ গিয়েছিল আল জাজিরার পাঁচ সাংবাদিকের। বারবার হাসপাতাল ও সংবাদমাধ্যমকর্মীদের উপর এমন আক্রমণ আন্তর্জাতিক আইন ও মানবাধিকারের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন বলে মনে করছে রাষ্ট্রসঙ্ঘ সহ একাধিক মানবাধিকার সংগঠন। গত দু’বছরে গাজায় এই পর্যন্ত প্রায় ২৪৫ জন সাংবাদিক নিহত হয়েছেন। এই সংখ্যা যুদ্ধ পরিস্থিতির ভয়াবহতা তুলে ধরছে।

Advertisement

এদিকে, যুদ্ধ ও হোস্টেজ ইস্যুতে এবার নিজের দেশেই প্রবল জনরোষের মুখে ইজরায়েল সরকার। হামাসের হাতে বন্দি ইজরায়েলিদের এখনও পর্যন্ত মুক্ত করা না পারায় ক্ষোভে ফুঁসছে নাগরিক সমাজ। মঙ্গলবার সকাল থেকেই জেরুজালেম, তেল আভিভ সহ বিভিন্ন শহরে রাস্তায় নামেন হাজার হাজার মানুষ। আয়ালন হাইওয়ে অবরোধ করে চলে টানা বিক্ষোভ। আন্দোলনের নেতৃত্বে ছিলেন ‘হস্টেজেস অ্যান্ড মিসিং ফ্যামিলিস ফোরাম’-এর সদস্যেরা। তেল আভিভের সাভিডোর সেন্ট্রাল স্টেশনে আয়োজিত এক বিশাল সমাবেশে বন্দিদের মুক্তি এবং গাজা যুদ্ধ অবিলম্বে বন্ধের দাবি জানান হয়।

এই মুহূর্তে ইজরায়েল সরকার প্রবল কূটনৈতিক ও অভ্যন্তরীণ চাপে। একদিকে আন্তর্জাতিক মহলের নিন্দা, অন্যদিকে দেশের মানুষের ক্ষোভ, দু’য়ের মাঝে দাঁড়িয়ে নেতানিয়াহুর সরকার কী সিদ্ধান্ত নেয়, সেই দিকেই নজর গোটা বিশ্বের। গাজা যুদ্ধ কী দীর্ঘায়িত হবে না কি দ্রুত কোনও রাজনৈতিক সমাধানের দিকে এগোবে, সেই প্রশ্নই এখন সবচেয়ে বড়।

Advertisement