• facebook
  • twitter
Saturday, 9 November, 2024

জয়ের স্বপ্নে এখন বিভোর সবুজ-মেরুন ব্রিগেড

ডার্বি ম্যাচে ইস্টবেঙ্গলকে হারিয়ে দেওয়ার পরে টানা বিশ্রামে ছিল দল। তারপরে হায়দরাবাদ এফসি কলকাতায় এসে মহমেডান স্পোটিংকে হারিয়ে প্রথম জয়ের হাসি হাসতে পেরেছিল।

আইএসএল ফুটবলের শততম ম্যাচে এক অভাবনীয় কীর্তি গড়ে তুলল মোহনবাগান সুপার জায়ান্টস। স্মরণীয় ম্যাচে জয়ের হ্যাটট্রিক গড়ল সবুজ-মেরুন ব্রিগেড। নিজাম শহরে ঝড় তুলে মোহনবাগান ২-০ গোলে হায়দরাবাদকে হারিয়ে দিয়ে লিগ টেবলে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এলো। মোহনবাগনের জয়ের রথ ছুটছে। তা নতুন করে বলার প্রয়োজন হয় না। আইএসএল ফুটবলে প্রথম ম্যাচে মুম্বই দলের কাছ হেরে গিয়ে সবুজ-মেরুন ফুটবলাররা শপথ নিয়েছিলেন ঘুরে দাঁড়াতেহবে। আর পাখির চোখ থাকবে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার দিকে। তাই সত্যি হলো। যেভাবে একের পর এক ম্যাচে জয়ের ছবিটা আঁকছেন ফুটবলাররা, তাতে মোহনবাগান সমর্থকরা প্রত্যাশায় বুক বাঁধতে পারেন।

ডার্বি ম্যাচে ইস্টবেঙ্গলকে হারিয়ে দেওয়ার পরে টানা বিশ্রামে ছিল দল। তারপরে হায়দরাবাদ এফসি কলকাতায় এসে মহমেডান স্পোটিংকে হারিয়ে প্রথম জয়ের হাসি হাসতে পেরেছিল। সেই আত্মবিশ্বাসে মোহনবাগানকে ঘরের মাঠে চাপে রেখে পয়েন্ট ছিনিয়ে নেবে। আশা করাটা কোনও অন্যায় নয়। কিন্তু মোহনবাগাননামক দলের সঙ্গে লড়াই করাটা অত সহজ ছিল না। সবুজ-মেরুন ফুটবলাররা চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে বলতে পেরেছিল নিজাম শহর আমরা জয় করতে এসেছি। সেই ভাবনার সার্থক রূপ পেল হায়দরাবাদ এফসি’কে ২-০ গোলে উড়িয়ে দিয়ে। মোহনবাগানের এই জয় কোচ হোসে মোলিনাকে তৃপ্তি দিয়েছে।

তবে আইএসএল ফুটবল শুরুতে মোহনবাগানকে প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছিল রক্ষণভাগ নিয়ে। রক্ষণভাগের দুর্বলতা নিয়ে কোচের কপাল চওড়া হচ্ছিল। আক্রমণভাগের ফুটবলাররা গোল করলেও রক্ষণবাগের দুর্বলতায় গোল হজম করতে হচ্ছিল। তাই কোচ মোলিনা এ ব্যাপারে সতর্ক ছিলেন। তাই অনুশীলনে ডিফেন্ডারদের নিয়ে বেশি পরিশ্রম করেছেন। কীভাবে ফুটবলারদের ক্লান্তি দূর করা যায়, সেদিকে নজর রেখেছিলেন। তাই শেষ তিন ম্যাচে ৭টি গোল করেছে মোহনবাগান। কিন্তু প্রতিপক্ষ দল একটিও গোলকরতে পারেনি। তাই তো কোচ মোলিনা খুশি। তাঁর মুখে হাসি ফুটে উঠেছে। গোল অক্ষত রেখে টানা জয় এসেছে।

বলতেই হবে হায়দরাবাদ এফসির বিপক্ষে খেলা মোহনবাগানের কাছে বেশ কঠিন ছিল। বিপক্ষ দলের আক্রমণকে কীভাবে মোকাবিলা করতে হবে, তা সবসময় সাইডলাইনের ধারে দাঁড়িয়ে কোচ মোলিনা বার বার নির্দেশ দিয়েছেন। আক্রমণে তীব্রতা ছিল। রক্ষণভাগের খেলোয়াড়রা দুর্গকে দারুণভাবে পাহারা দিয়েছেন। প্রত্যেককে স্যালুট জানাতে হবে। খেলার শুরুতে হায়দরাবাদ কিচুটা চাপ সৃষ্টি করলেও, সবুজ-মেরুন ব্রিগেড পাল্টা আঘাত হেনে তাদের পরিকল্পনাকে নস্যাৎ করে দিয়েছে। খেলার একটি মুহূর্তে মোহনবাগানের ফুটবলাররা সজাগ ছিলেন।

তাই আক্রমণের শুরুতেই প্রতিপক্ষ দলের চেষ্টাকে ভণ্ডুল করে দিয়েছেন সবুজ-মেরুন ফুটবলাররা। বিশেষ করে মাঝমাঠের ফুটবলাররা যেভাবে আক্রমণের উৎসটা রচনা করেছেন, তার জন্য প্রশংসা তোলা থাকবে। গোল করার পরেও মোহনবাগান কোনও সময়ের জন্য আক্রমণে পিছিয়ে থাকেনি। শতাব্দীপ্রাচীন মোহনবাগান ক্লাবের দাপটে ঘরের মাঠে হায়দরাবাদ একেবারে এলোমেলো হয়ে যায়। ছন্দময় ফুটবল খেলে মোহনবাগান তখন জয়ের ধারাকে অব্যাহত রাখতে নতুন করে স্বপ্ন দেকতে শুরু করেছে। আগামী ১০ নভেম্বর মোহনবাগানকে খেলতে হবে ওড়িশা এফসি’র বিপক্ষে। এখন দেখার, ওড়িশার সঙ্গে লড়াই করে জয়ের রথকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে কিনা!