পরপর তিনটি ম্যাচে হেরে যাওয়ার পরে ইস্টবেঙ্গলের সমর্থকরা পুরোপুরি হতাশ হয়ে গিয়েছিলেন। হয়তো সেই কারণেই তারা মাঠমুখী হতেন না। কিন্তু কোচ অস্কার ব্রুজো দলকে অক্সিজেন দিতে নতুন পন্থা অবলম্বন করেছেন। তিনি খেলোয়াড়দের নির্দেশ দিয়েছেন, কোনও সময়ের জন্য রক্ষণাত্মক ভূমিকা পালন করা চলবে না। রেফারির বাঁশি বাজার সঙ্গে সঙ্গে আক্রমণে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। এটা মনে রাখতে হবে, আহত বাঘের হুঙ্কার সারা বনকে কাঁপিয়ে রাখে।
ঠিক সেইভাবে ইস্টবেঙ্গলের সংগ্রামী চরিত্রকে প্রকাশ করে প্রতিপক্ষ কেরল ব্লাস্টার্সকে চাপের মধ্যে রাখতে হবে। ভয় বলে কোনও শব্দ কথা বলবে না। এই মুহূর্তে হারানোর কোনও কিছু নেই। তাই লড়াই করে ম্যাচ ছিনিয়ে নিতে হবে ফুটবল রণক্ষেত্র থেকে। কোচের এই নির্দেশে ইস্টবেঙ্গলের ফুটবলাররা উদ্দীপ্ত হয়ে মধুর প্রতিশোধ নিলেন কেরল ব্লাস্টার্সকে ২-১ গোলে হারিয়ে দিয়ে। তাই গত শনিবার যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গণে ইস্টবেঙ্গলের এই জয় সমর্থকদের কাছে নতুন করে স্বপ্ন দেখাল। প্রথম ছয়ে খেলার আশা জিইয়ে রাখল লাল-হলুদ ব্রিগেড।
Advertisement
ইস্টবেঙ্গলে সৌভিক চক্রবর্তী, ক্লেটন সিলভা ও নতুন বিদেশি ফুটবলার রিচার্ড সেলিস দেখিয়ে দিলেন, চ্যালেঞ্জে কীভাবে বাজিমাত করতে হয়। প্রথম মিনিট থেকেই সুনামি ঝড়ের মতো লাল-হলুদ ফুটবলাররা কেরলের রক্ষণভাগে ঝাঁপিয়ে পড়ছিলেন। আত্মবিশ্বাসী দিমিত্রি দিয়ামানতাকোস ও রিচার্ড সেলিসরা যেভাবে কেরলের খেলোয়াড়দের চাপের মধ্যে রেখে দিয়ে জয়ের বার্তা পৌঁছে দিলেন গ্যালারিতে। খেলার প্রথমার্ধেই পিভি বিষ্ণু গোল করে ইস্টবেঙ্গলকে এগিয়ে দেন।
Advertisement
এগিয়ে থাকা ইস্টবেঙ্গলের ফুটবলাররা কোনও সময়ের জন্য আক্রমণ থেকে ছুটি নেননি। প্রবল গতিতে ও ছন্দের দোলায় প্রতিপক্ষ কেরলকে নাস্তানাবুদ করে দেন সৌভিকরা। খেলার দ্বিতীয় পর্বে ইস্টবেঙ্গল আবার গোল পেয়ে যায়। এবারের গোলদাতা হিজাজি মাহের। কার্ডের সমস্যা ও চোটের কারণে প্রথম সারির বেশ কয়েকজন ফুটবলার দলে না থাকলেও কোচ রিজার্ভ বেঞ্চের ফুটবলারদের দলে এনে জাগরণ ঘটিয়ে দিলেন। এমনকি প্রতিপক্ষ দলের দুই ভয়ঙ্কর ফুটবলার নোয়া সাদিউ ও আদ্রিয়ান লুনার আক্রমণের ফলাকে একেবারে ভোঁতা করে দিয়েছেন নিশু কুমাররা। তবে কেরলের আক্রমণে ইস্টবেঙ্গলের রক্ষণভাগের ভুলে দানিস ফারুক গোল করে ব্যবধান কমান। ইস্টবেঙ্গলের মশাল কখনওই ম্রিয়মান হয় না, তা বুঝিয়ে দিয়েছেন ফুটবলাররা কেরলের বিরুদ্ধে জয়ের মধ্যে দিয়ে।
Advertisement



