ক্লাব বিশ্বকাপে দুরন্ত ছন্দে রিয়াল মাদ্রিদ। কোয়ার্টার ফাইনালে টানটান নাটক শেষে বরুসিয়া ডর্টমুন্ডকে হারালো ৩-২ গোলে হারিয়ে সেমিফাইনালের ছাড়পত্র আদায় করে নিলো তাঁরা। স্পেনের ক্লাবটি। এদিন, ম্যাচের শুরুটা বেশ দাপটের সঙ্গেই করেছিল কিলিয়ান এমবাপে – গঞ্জালো গার্সিয়া’রা। প্রথমার্ধেই ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায় স্পেনের ক্লাবটি। ম্যাচ শুরুর ১০ মিনিটের মধ্যে তাঁদেরকে এগিয়ে দেন তরুণ গঞ্জালো গার্সিয়া। এরপর, আরও আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে তাঁরা। সেই আক্রমণ থেকেই ২০ মিনিটে তাঁদের হয়ে ব্যবধান বাড়ান ফ্রান গার্সিয়া। তবে, দ্বিতীয় গোল খেয়েই বদলে যায় বরুসিয়া। ম্যাচে ফেরার জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে তাঁরা। কিন্তু, কিছুতেই কাঙ্খিত গোলের দেখা পাচ্ছিলো না নিকো কোভাচের দল।
অবশেষে ম্যাচের সংযুক্তি সময়ে (৯০+২) তাঁদের হয়ে ব্যবধান কমান ম্যাক্সিমিলিয়ান। এরপরেই শুরু হয় চূড়ান্ত নাটক। ১ গোল খেয়ে নিজেদের আক্রমণের ঝাঁজ বাড়ায় রিয়াল। অতিরিক্ত সময়ে ৯০+৪ মিনিটে ৩-১ গোলে স্প্যানিশ দলটিকে এগিয়ে দেন এমবাপে। তাঁর বাইসাইকেল কিকে করা গোলটি বেশ নজর কাড়লো মাঠে উপস্থিত দর্শকদের। এই প্রসঙ্গে বলা যায়, অসুস্থতা থেকে ফিরে ক্লাব বিশ্বকাপে রিয়ালের জার্সি গায়ে এটাই তাঁর প্রথম গোল। ৩-১ ব্যবধানে এগিয়ে থাকা অবস্থায় ম্যাচের ৯০+৬ মিনিটে লাল কার্ড দেখেন রিয়ালের ডিন হুইসেন। ফলে, ১০ জনে হয়ে যায় তাঁরা। নাটকের তখনও অনেকটাই বাকি ছিল। ৯০+৮ মিনিটে পেনাল্টি পায় ডর্টমুন্ড। সেখান থেকে তাঁদের হয়ে ফের একবার ব্যবধান কমান গুইরেসি। তাতে অবশ্য বিশেষ লাভ হয়নি। শেষ পর্যন্ত ৩-২ ব্যবধানে জিতে ক্লাব বিশ্বকাপের শেষ চার নিশ্চিন্ত করলেন এমবাপেরা।
Advertisement
নক আউটের অন্য ম্যাচে, শনিবার রাতে বায়ার্ন মিউনিখকে ২-০ গোলে হারিয়ে সহজেই সেমিফাইনালে পৌঁছালো পিএসজি। লুইস এনরিকের দল। এই ম্যাচে ৯ জনের পিএসজিকে পেয়েও জিততে ব্যর্থ জার্মান জায়ান্টেরা। আসলে, আটলান্টার মার্সিডিজ-বেঞ্জ স্টেডিয়ামে এদিন প্রথম মিনিট থেকেই যথেষ্ট দাপট ছিল লুইস এনরিকের দলের। এদিন, ম্যাচের শুরু থেকে ওসমান ডেম্বেলে – দেশঁর দুয়ে’রা ক্রমাগত আক্রমণ চালালেও প্রথমার্ধে কাঙ্খিত গোলের দেখা পায়নি তাঁরা। অন্যদিকে, গোল পায়নি বায়ার্নও। তবে, প্রথমার্ধের শেষদিকে গুরুতর চোট পেয়ে মাঠ ছাড়েন বায়ার্নের অন্যতম ভরসা ফরোয়ার্ড জামাল মুসিয়ালা।
Advertisement
গোলের তাগিদে দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকে আক্রমণের চাপ আরও বাড়ায় পিএসজি। সেই আক্রমণের ফলস্বরূপ, ম্যাচের ৭৮ মিনিটে তাঁদের হয়ে প্রথম গোল করেন দেশঁর দুয়ে। কিন্তু, এর মিনিট চারেকের মধ্যেই লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন ডিফেন্ডার উইলিয়ান পাচো। ১০ জনে হয়ে গেলেও নিজেদের আক্রমণাত্মক মেজাজ থেকে একবারের জন্য সরে আসেনি ফরাসি ক্লাবটি। এরপর, ম্যাচের ৯২ মিনিটে থিও হার্নান্দেজ লাল কার্ড দেখলে ৯ জন্যে হয়ে যায় তাঁরা। তবে, ৯ জনের পিএসজি’কে পেয়েও সমতায় ফিরতে ব্যর্থ বায়ার্ন। উল্টে, ম্যাচের সংযুক্তি সময়ে (৯০+৬) লুইস এনরিকের দলের হয়ে ব্যবধান বাড়ান ওসমান ডেম্বেলে। শেষ পর্যন্ত, ২-০ ব্যবধানে জিতেই শেষ চারের ছাড়পত্র আদায় করে নিলো তাঁরা।
ফাইনালে যাওয়ার লড়াইয়ে রিয়াল মাদ্রিদের মুখোমুখি হবে পিএসজি, যা আবার এমবাপের প্রাক্তন ক্লাবও বটে। শুধু তাই নয়, চুক্তি অনুযায়ী টাকা না পাওয়ায় বর্তমানে নিজের দেশের ক্লাবের বিরুদ্ধে আইনি লড়াই করছেন ফরাসি তারকা। ফলে, সেমিফাইনালের এই দ্বৈরথ যে বেশ উপভোগ্য হতে চলেছে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
Advertisement



