আইএসএল ফুটবলে ইতিমধ্যেই লিগ-শিল্ড জয়ের কৃতিত্বে নাম লিখিয়ে ফেলেছেন মোহনবাগান সুপার জায়ান্টস। এখনও দুটো খেলা রয়েছে মোহনবাগানের। তবে শনিবার সবুজ-মেরুন ব্রিগেড খেলতে নামবে মুম্বই এফসি দলের বিপক্ষে। মুম্বই দল তাদের ঘরের মাঠে খেলবে। স্বাভাবিকভাবে তাদের বাড়তি সুবিধা থাকবে, তা নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই। তবে এখনও পর্যন্ত অ্যাওয়ে ম্যাচে মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে একটা ম্যাচও জিততে পারেনি মোহনবাগান। সেই কারণেই কোচ হোসে মোলিনার কাছে একটা বড় চ্যালেঞ্জ। যদি মোহনবাগান জিততে পারে, তাহলে নতুন নজির সৃষ্টি হবে। সেই লক্ষ্য পূরণের দিকে অবশ্যই এগিয়ে রয়েছে মোহনবাগান। এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে, ঘরের মাঠে মোহনবাগান প্রথমবার লিগ-শিল্ড জয়ের কৃতিত্ব দেখিয়েছিল মুম্বইকে হারিয়ে। এটা মনে রাখতে হবে, ভারতীয় ফুটবলে মোহনবাগানর কাছে সবচেয়ে বড় প্রতিদ্বন্দ্বী মুম্বই দল। মুম্বই অনেকটাই পিছিয়ে রয়েছে লিগ টেবলে। যদি মুম্বই দল তাদের মাঠে মোহনবাগানকে হারাতে না পারে, তাহলে আরও পিছিয়ে যাবে।
অন্যদিকে মোহনবাগানের ফুটবলাররা কোনওভাবেই মুম্বই দলকে হালকা চালে খেলতে চাইছেন না। টানা দশটি ম্যাচ সবুজ-মেরুন ব্রিগেড জিতে রয়েছে। আবার টানা পাঁচটি অ্যাওয়ে ম্যাচে মোহনবাগান জয়লাভ করেছে। শেষ দশটি ম্যাচে সবুজ-মেরুন ব্রিগেড কুড়িটি গোল করেছে আর দু’টি গোল মাত্র হজম করতে হয়েছে। এই পরিসংখ্যানে এগিয়ে রয়েছে মোহনবাগান। আর মুম্বই দল গত দু’টি ম্যাচে জিততে পারেনি। হায়দরাবাদের সঙ্গে খেলা ড্র করেছে। আবার ইস্টবেঙ্গলকে হারাতে পারেনি কলকাতায় এসে। মোহনবাগান শিবিরে চোট-আঘাতের পাশে কার্ডের সমস্যাও রয়েছে। দলের নির্ভরযোগ্য স্ট্রাইকার জেসন কামিন্স চারটি হলুদ কার্ড দেখায় মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে তিনি মাঠে নামতে পারছেন না। আবার চোটের তালিকায় সাহাল আবদুল সামাদ রয়েছেন। তবে চোট সারিয়ে আপাতত মাঠে ফিরে এসেছেন আশিস রাই, অনিরুদ্ধ থাপা ও মনবীর সিংরা। এরকম সমস্যার মধ্যে মোহনবাগান সাম্প্রতিককালে পড়েনি। তবে বিদেশি ফুটবলার জেমি ম্যাকলারেন যেভাবে খেলা শুরু করেছিলেন, তা ধরে রাখতে পারছেন না। তাই কোচ মোলিনার কাছে এটি চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। পাঞ্জাব এফসি’র বিরুদ্ধে যেমন জোড়া গোল করেছেন, তেমনই আবার কেরলা ব্লাস্টারের বিরুদ্ধেও তাঁর পা থেকে দুটো গোল এসেছিল। কিন্তু পরবর্তী ক্ষেত্রে সেইভাবে ম্যাকলারেন বড় ভূমিকা নিতে পারছেন না। তবে এই বিষয়ে কোচ হোসে মোলিনা খুব একটা চিন্তা করছেন না। আসলে রিজার্ভ বেঞ্চে যাঁরা রয়েছেন, তাঁরা প্রত্যেকে জানেন মাঠে নামলে সেরা খেলা উপহার দেওয়া যায় কীভাবে? তাই কোচ মনে করেন, মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জে মোহনবাগান জয় তুলে আনবে।
মুম্বই দল লিগ টেবলে বেশ কিছুটা পিছিয়ে থাকলেও, তারা অবশ্যই চাইবে ঘরের মাঠে মোহনবাগানকে চাপে রাখতে। গত ম্যাচে তারা ৪-৩-৩ ছকে খেললেও কোচ ক্রাতকি অঙ্ক কষেই খেলার চেষ্টা করবেন। তাই আক্রমণে বিক্রমপ্রতাপ সিং, লালিয়ানজুয়ালা ছাংতে, জর্জ অর্টিজদের খেলাবেন। মাঝমাঠে ইয়ল ফান, জজ টোরাল ও ব্র্যান্ডন ফার্নান্ডেজকে খেলাবেন। রক্ষণভাগে মেহতাব সিং, সাহিল আনোয়ার, ভালভুইয়া ও তিরিকে রেখেই দল সাজাবেন। তবে, মুম্বই দলের প্রাক্তন ফুটবলার আপুইয়া অর্থাৎ রালতে যদি সবুজ-মেরুন মাঠে নামেন, তাহলে গোল করার জন্য মুখিয়ে থাকবেন। তিনি সাধারণত মাঝমাঠে খেলেন। আক্রমণ ভাগের খেলোয়াড়দের গতি বাড়াতে তিনি বল বাড়াতে সাহায্য করেন।
তবে মোহনবাগানের অধিনায়ক শুভাশিস বসু মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে জেতার জন্য বদ্ধপরিকর। মুম্বই ও পরের ম্যাচে মোহনবাগান জিততে পারলে একটা নজিরও হবে। এটা ঠিক, লিগ-শিল্ড জয় হয়ে যাওয়ার পরেও মোহনবাগান প্রথম ছ’দলের মধ্যে সেরা হতে
চাইছে।