• facebook
  • twitter
Saturday, 5 October, 2024

শেষ চারের খেলায় দুরন্ত জয় তুলে নিয়ে ফাইনালে ভারত

এশিয়ান চ্যাম্পিয়ন্স কাপ হকি প্রতিযোগিতায় ফাইনালে পৌঁছে গেল ভারত। গতবারের চ্যাম্পিয়ন ভারত গ্রুপ লিগ থেকে নকআউট পর্যায়ে সবকটি ম্যাচে জয় তুলে নিয়ে সবার নজর কেড়ে নিয়েছে।

এশিয়ান চ্যাম্পিয়ন্স কাপ হকি প্রতিযোগিতায় ফাইনালে পৌঁছে গেল ভারত। গতবারের চ্যাম্পিয়ন ভারত গ্রুপ লিগ থেকে নকআউট পর্যায়ে সবকটি ম্যাচে জয় তুলে নিয়ে সবার নজর কেড়ে নিয়েছে। সেমিফাইনাল ম্যাচে সোমবার দাপটের সঙ্গে ভারত ৪-১ গোলে দক্ষিণ কোরিয়াকে উড়িয়ে দিয়ে চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছে গেল। গ্রুপ লিগের ম্যাচে দক্ষিণ কোরিয়াকে পরাস্ত করেছিলেন হরমনপ্রীত সিংরা। মঙ্গলবার দুর্ধর্ষ ভারতীয় হকি দল ফাইনালে মুখোমুখি হবে আয়োজক দেশ চিনের বিরুদ্ধে। অপর সেমিফাইনাল ম্যাচে পাকিস্তানকে টাইব্রেকারে হারিয়ে চিন ফাইনালে খেলার ছাড়পত্র পেয়েছে।

এদিনের খেলায় ভারতের খেলোয়াড়রা আত্মবিশ্বাসী হয়ে দক্ষিণ কোরিয়ার বিরুদ্ধে মাঠে নেমেছিলেন। তাঁরা ভালো করেই জানতেন, গ্রুপ লিগের ম্যাচে যেভাবে তাঁদের অশ্বমেধের ঘোড়া ছুটেছে, সেই জায়গা থেকে প্রতিপক্ষ দলকে পরাস্ত করতে খুব একটা অসুবিধে হবে না। তারপরে গ্রুপ লিগের ম্যাচে প্রতিপক্ষ দলকে হারিয়ে দিয়ে তাদের রণকৌশলটা প্রত্যেকেরই জানা ছিল। লড়াইয়ে খুব একটা বাধা সৃষ্টি হয়নি। খেলার প্রথম থেকেই ভারতের আক্রমণের কাছ বারবার পিছিয়ে পড়ে দক্ষিণ কোরিয়া। সেই কারণেই অনেকটা এগিয়ে থেকে ভারতীয় দল লড়াইয়ে নেমেছিল। একের পর এক আক্রমণে দক্ষিণ কোরিয়ার রক্ষণভাগ দারুণ চাপে পড়ে গিয়েছিল।

তবে, খেলার প্রথম কোয়ার্টারে ভরতীয় দল ১-০ গোলে এগিয়ে যায়। ১৩ মিনিটের মাথায় সার্কেলের মধ্যে প্রবেশ করে আরাইজিৎ সিং বল বাড়িয়ে দিয়েছিলেন উত্তম সিংকে। গোলের সামনে অপেক্ষমান উত্তম গোল করতে ভুল করেননি। তবে, এই কোয়ার্টারের শেষে দক্ষিণ কোরিয়া পেনাল্টি কর্নার পেয়ে গিয়েছিল। সেই পেনাল্টি কর্নার থেকে গোল আসেনি। দ্বিতীয় কোয়ার্টারে আরও চাপ বাড়াতে থাকে ভারতীয় দল। ওপেন প্লে খেলে বারবার দক্ষিণ কোরিয়ার সার্কেলে প্রবেশ করতে থাকেন সুখজিৎ সিং, অভিষেক ও হরমনপ্রীতরা। খেলার ১৯ মিনিটের মাথায় ভারত পেনাল্টি কর্নার পায়। সেই পেনাল্টি কর্নার থেকে অধিনায়ক হরমনপ্রীত সিং গোল করে গোলের ব্যবধান বাড়িয়ে দেন। এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে, পেনাল্টি কর্নারে গোল করতে এই মুহূর্তে ভারতের পয়লা নম্বর খেলোয়াড় হলেন হরমনপ্রীত সিং। বিরতিতে ২-০ গোলে এগিয়ে যায় ভারতীয় দল।

তৃতীয় কোয়ার্টার শুরু থেকে গোল করার জন্য দক্ষিণ কোরিয়া আক্রমণ গড়ে তোলে। কিন্তু সেই আক্রমণকে প্রতিহত করে ভারতীয় খেলোয়াড়রা পাল্টা আক্রমণে চলে যান। ৩২ মিনিটের মাথায় সুমিতের কাছ থেকে বল পেয়ে যান জারমানপ্রীত সিং। বল ধরে সার্কেলে ঢুকে পড়েন তিনি এবং গোল করে ভারতীয় দলকে ৩-০ গোলে এগিয়ে দেন। তবে, ৩৩ মিনিটের মাথায় দক্ষিণ কোরিয়া পেনাল্টি কর্নার পেয়ে যায়। পেনাল্টি কর্নার থেকে জোরালো শট নিয়ে ইয়াং জিহুন গোল করে ব্যবধান কমান। পেনা্ল্টি কর্নার বাঁচাতে ভারতীয় গোলরক্ষক কৃষ্ণ পাঠক চেষ্টা করলেও তাঁর পায়ের প্যাডে লেগে বল চলে যায় গোলের জালে।

তৃতীয় কোয়ার্টারে ভারতীয় দল প্রাধান্য দেখিয়ে আবার চাপ সৃষ্টি করতে থাকে প্রতিপক্ষ শিবিরে। ফিল্ড গোল করার মতো সুযোগ পেয়েও গোল করতে পারেননি ভারতের খেলোয়াড়রা। তবে এই কোয়ার্টারের একেবারে শেষ মিনিটে ভারতীয় দল আবার পেনাল্টি কর্নার পেয়ে যায়। সেই পেনাল্টি কর্নার থেকে আবার গোল করে হরমনপ্রীত সিং ভারতীয় জয়কে নিশ্চিত করে দেন। হরমনপ্রীত এই নিয়ে সাতটি গোল করেছেন। আর এই সাতটি গোল পেনাল্টি থেকে করেই কৃতিত্ব দেখিয়েছেন। ভারত ৪-১ গোলে এগিয়ে থেকে চতুর্থ কোয়ার্টারে খেলা শুরু করে। দক্ষিণ কোরিয়ার খেলোয়াড়রাও গোল করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। শেষ পর্যন্ত ভারতীয় দল ৪-১ গোলে দক্ষিণ কোরিয়ার বিরুদ্ধে জয় তুলে নিয়ে ফাইনালে খেলার ছাড়পত্র হাতে তুলে নেয়।