কলকাতা ফুটবল লিগে প্রিমিয়র ডিভিশনের খেলায় ইস্টবেঙ্গল জয়ের সরণিতে ফিরল। শুক্রবার নৈহাটি স্টেডিয়ামে সাদামাটা খেলায় ইস্টবেঙ্গল ১-০ গোলে জয় তুলে নিল কালীঘাট স্পোর্টস লাভার্স অ্যাসোসিয়েশনের বিরুদ্ধে। খেলার দ্বিতীয় পর্বে জয়সূচক গোলটি করেন লাল-হলুদ শিবিরের গুইতে পেকা। আর এই জয়ের ফলে ইস্টবেঙ্গল লিগ টেবলে তৃতীয় স্থানে জায়গা করে নিল। এই ম্যাচটি অবশ্যই জেতার লক্ষ্যে কোচ বিনো জর্জের দল মাঠে নেমেছিল। গত ম্যাচেই তারা পুলিশের কাছে হেরে গিয়ে পিছিয়ে পড়েছিল। ইস্টবেঙ্গল দলে বেশ কয়েকজন ফুটবলারকে বদল করা হয়। সেই কারণেই কোচ বিনো জর্জ সিনিয়র খেলোয়াড়দের উপরেই বিশেষভাবে ভরসা রেখেছিলেন। চোটের কারণে মনোতোষ মাঝি, মনোতোষ চাকলাদার ও জেসিন টিকেরা মাঠের বাইরে রয়েছেন। আবার কার্ডের সমস্যায় খেলতে পারেননি প্রভাত লাকরা ও ডেভিড। সেই জায়গায় অভিজ্ঞ ফুটবলার ও গোলরক্ষক দেবজিৎ মজুমদারকে যেমন খেলানো হয়েছে, তেমনই আবার সৌভিক চক্রবর্তী ও এডমুন্ড লালরিনডিকাকে কালীঘাট স্পোর্টস লাভার্সের বিরুদ্ধে খেলানো হয়। যদি কোচ জুনিয়র খেলোয়াড়দের নিয়েই মাঠে নামতেন, তাহলে ম্যাচ জেতাটা বেশ কঠিন হয়ে যেত। তাই কোনওরকম ঝুঁকি না নিয়ে প্রথম একাদশে অভিজ্ঞ ও সিনিয়র খেলোয়াড়দেরই সুযোগ দেওয়া হয়েছে।
যদিও দুই দলের মধ্যে একেবারে নিষ্প্রাণ ফুটবল দেখা গিয়েছে। কোনওরকম চমক বা আক্রমণাত্মক ফুটবল দেখতে পাওয়া যায়নি। ভিজে মাঠে সাধারণত বড় দলের যে ভূমিকা হয়ে থাকে, তাও দেখা মেলেনি। তবে প্রথমার্ধে ইস্টবেঙ্গল বেশ কয়েকটি সুযোগ পেয়েছিল। কিন্তু সেই সুযোগগুলি কাজে লাগাতে পারেননি ফুটবলাররা। নিজেদের মধ্যে কোনওরকম বোঝাপড়া ছিল না। তবে প্রতিপক্ষ দল কালীঘাট স্পোর্টস লাভার্স কোনওভাবেই আক্রমণ গড়ে তুলতে পারেনি। তাদের দেখতে পাওয়া গিয়েছে রক্ষণভাগে ভিড় জমিয়ে ইস্টবেঙ্গলের আক্রমণকে রুখে দেওয়ার চেষ্টায়। খেলার দ্বিতীয় পর্বে ইস্টবেঙ্গল একটু গতিময় ফুটবল খেলায় কালীঘাট স্পোর্টস লাভার্সের রক্ষণভাগে ফাটল ধরায়। ৫৫ মিনিটের মাথায় গোলটি করেন গুইতে। খেলার শেষ মুহূর্তে কালীঘাট স্পোর্টস লাভার্স অ্যাসোসিয়েশনের একটি পেনাল্টি পাওয়া উচিত ছিল। সূরজ মণ্ডল ইস্টবেঙ্গল বক্সে প্রবেশ করতেই দুই ডিফেন্ডার পিছন থেকে তাঁকে বাধা দিলে পড়ে যান। সঙ্গে সঙ্গে কালীঘাট স্পোর্টসের ফুটবলাররা পেনাল্টির দাবি করতে থাকেন রেফারি শুভঙ্কর দাসের কাছে। কিন্তু রেফারি কোনওভাবেই ওই দাবিকে কর্ণপাত করেননি। খেলার শেষেও রেফারিকে ঘিরে ধরেন কালীঘাট স্পোর্টস লাভার্সের ফুটবলাররা। পুলিশের সাহায্য নিয়ে শেষ পর্যন্ত রেফারিদের মাঠ ছাড়তে হয়। রেফারি শুভঙ্কর দাসের খেলা পরিচালনা দেখে মনে হল, বড় ক্লাবের বিরুদ্ধে কখনওই তাঁরা সাহসী ভূমিকা নিতে পারেন না। অতীতে এরকম প্রচুর ঘটনা ঘটেছে।



