টেস্ট ক্রিকেটকে আরও বেশি আকর্ষণীয় করে তুলতে এবং দু’দলের মধ্যে লড়াকু মনোভাব জিইয়ে রাখতে আইসিসি গুরুত্বপূর্ণ ভাবনা নিতে চলেছে। তাঁরা চাইছেন, টেস্ট খেলা দেখার জন্য দর্শকরা আরও বেশি করে মাঠে আসুক এবং ক্রিকেটারদের পাশে থাকুন। এই তো কিছুদিন আগে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল শেষ হল। এই প্রথম দক্ষিণ আফ্রিকা চ্যাম্পিয়ন হয়ে ক্রিকেট দুনিয়াকে অবাক করে দিয়েছে। ফাইনালে তারা অস্ট্রেলিয়ারম তো শক্তিশালী দেশকে পরাস্ত করেছে। তাই টেস্ট ক্রিকেট অবশ্যই একজন ক্রিকেটারকে বড় পরিচিতি এনে দিতে পারে। তারপরে ছোট দেশগুলির আগ্রহ বাড়াতে পাঁচ দিনের টেস্ট ম্যাচকে পরিবর্তন করে নতুন ফর্ম্যাট তৈরি করতে চলেছে আইসিসি। আশা করা যায়, পাঁচদিনের পরিবের্তে টেস্ট খেলা হবে চারদিনের।
২০২৭-২০২৯ বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে পাঁচদিনের খেলা বদলে গিয়ে লাল বলের ক্রিকেট চারদিনে হবে। তবে, এখনকার বাছাই করা কিছু খেলা পাঁচদিনে হতে পারে। অবশ্য ফর্ম্যাট চেঞ্জ করার ব্যাপারটা প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। যাতে ছোট দেশগুলি আরও বেশি সংখ্যক টেস্ট এবং বড় সিরিজে অংশ নিতে পারে, সেই জন্যই চারদিনের টেস্ট করার ভাবনা দেখা দিয়েছে। আর এই চারদিনের টেস্ট ম্যাচ হলে আন্তর্জাতিক সূচিতে আরও বেশি দিন পাওয়া যাবে। পাশাপাশি, খরচও কমে যাবে আয়োজক দেশের কাছে।
সম্প্রতি লর্ডসে টেস্ট বিশ্বকাপের ফাইনালের সময় আইসিসি কর্মকর্তাদের মধ্যে একটা বৈঠক হয়, সেখানে আইসিসি’র চেয়ারম্যান জয় শা উপস্থিত ছিলেন। তিনি টেস্টে দিনসংখ্যা কমানোর অনুমোদন দিয়েছেন। আগামী বিশ্বটেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ চক্র থেকে চারদিনের টেস্ট ম্যাচ আয়োজনের কথা ভাবা হচ্ছে। আইসিসি কর্মকর্তারা মনে করছেন, যদি টেস্ট ম্যাচের দিন কমে যায়, তাহলে দুই দলের কাছে একটা প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাকবে। টেস্ট ম্যাচের উত্তেজনা আরও বৃদ্ধি পাবে। আইসিসি’র সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে ছোট দেশগুলির সময়সূচি ও খরচের জন্য টেস্ট ম্যাচ আয়োজন করতে আগ্রহ প্রকাশ করে না।
চারদিনের টেস্ট ম্যাচ হলে তিন ম্যাচের সিরিজ শেষ হয়ে যাবে তিন সপ্তাহের মধ্যেই। এর ফলে খরচও কমে যাবে। আর তখনই ছোট দেশগুলি টেস্ট ম্যাচ আয়োজনে আগ্রহ প্রকাশ করবে। আবার আইসিসি’র পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, চারদিনের টেস্ট ম্যাচে প্রতিদিনে ৯০ ওভারের পরিবর্তে বোলারদের বল করতে হবে ৯৮ ওভার। দলগুলি অকারণে আর সময় নষ্ট করতে পারবে না। তবে এখনও পর্যন্ত চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে সিলমোহর পড়েনি।
এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে, ২০১৭ সালে আইসিসি প্রথম চারদিনের টেস্ট ম্যাচের জন্য অনুমতি দিয়েছিল। সেই কারণে ২০১৯ ও ২০২৩ সালে আয়ারল্যান্ডের বিরুদ্ধে চারদিনের টেস্ট ম্যাচ খেলেছিল ইংল্যান্ড। এমনকি গত মাসে জিম্বাবোয়ের বিরুদ্ধে একটা চারদিনের টেস্ট ম্যাচে অংশ নিয়েছিল বেন স্টোকসরা। সত্যিই যদি চারদিনের টেস্ট ম্যাচ হয়, তাহলে ক্রিকেটাররা আগ্রাসী ভূমিকা নিয়ে একে অপরের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।
তবে ২০২৫-২০২৭ সালে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়ন চক্রে কোনওরকম বদল হচ্ছে না। এই চক্রে ২৭টি সিরিজের সব টেস্টম্যাচগুলি হবে পাঁচদিনে। এই মুহূর্তে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে দক্ষিণ আফ্রিকা চ্যাম্পিয়ন হওয়াতে নতুন করে টেস্ট ক্রিকেট নিয়ে সবার উৎসাহ দেখা দিয়েছে।