• facebook
  • twitter
Thursday, 14 August, 2025

ভারতের তুরুপের তাস বুমরা বললেন ব্রড ও জস বাটলার

ব্রড আরও বলেন, ‘আমি যখন শোয়েব আখতারের বিরুদ্ধে মুখোমুখি হতাম, তখন তাঁকে দেখেছি ঘন্টায় ১০০ মাইল বেগে দৌড়তে। কিন্তু বুমরা তাঁর রানআপে খুবই ভারসাম্যপূর্ণ।

প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র

হাতে গোনা আর মাত্র কয়েকটা দিন। আগামী ২০ জুন থেকে ভারত ও ইংল্যান্ডের মধ্যে পাঁচ টেস্ট সিরিজ শুরু হয়ে যাচ্ছে। প্রথম ম্যাচে ভারতীয় দলে যেমন নতুন অধিনায়ক শুভমন গিলকে দেখা যাবে, তেমনই বেশ কয়েকজন তরুণ মুখকেও প্রথম একাদশে খেলতে দেখা গেলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। আবার এই দলে কয়েকজন অভিজ্ঞ ক্রিকেটার রয়েছেন, যাঁরা ভারতীয় দলকে সমৃদ্ধ করতে পারবেন। পাশাপাশি, কঠিন চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেওয়ার জন্য কোচ গৌতম গম্ভীরের পরামর্শ অবশ্যই দলে খেলা করবে। এদিকে ইংল্যান্ডের দুই তারকা ক্রিকেটার স্টুয়ার্ট ব্রড ও জস বাটলার ভারতীয় দলের প্রশংসা করে বলেছেন, তারা ভালো জায়গায় রয়েছে। শুধু তাই নয়, যশপ্রীত বুমরার মতো একজন তারকা পেসার রয়েছেন। বুমরার ম্যাচ জেতানোর ক্ষমতা আছে। যে কোনও সময় তিনি তুরুপের তাস হিসেবে বিপক্ষ শিবিরকে লণ্ডভণ্ড করে দিতে পারেন। স্টুয়ার্ট ব্রড বলেছেন, যশপ্রীত বুমরার বোলিং অ্যাকশন প্রতিপক্ষ দলের ব্যাটসম্যানদের কাছে ভয়াবহ রূপ নিতে পারে। শুক্রবার থেকে প্রথম টেস্ট ম্যাচ শুরু হচ্ছে ভারত ও ইংল্যান্ডের মধ্যে। তিনি বলেন, বুমরা যেভাবে দৌড়ে আসেন, তাতেই স্পষ্ট হয়ে যায়, তাঁর গতি খেলার মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে। তাঁর বল ছুটে আসে প্রতি ঘণ্টায় সত্তর মাইল বেগে। আবার কখনও কখনও নব্বই মাইল প্রতি ঘণ্টায় আঘাত করতে পারে। বুমরার এই স্পিড কখনওই সেইভাবে বুঝতে পারবেন না ব্যাটম্যানরা। তাঁর ছন্দময় বোলিং ব্যাটসম্যানদের কাছে উদ্বেগের কারণ হতে পারে।

ব্রড আরও বলেন, ‘আমি যখন শোয়েব আখতারের বিরুদ্ধে মুখোমুখি হতাম, তখন তাঁকে দেখেছি ঘন্টায় ১০০ মাইল বেগে দৌড়তে। কিন্তু বুমরা তাঁর রানআপে খুবই ভারসাম্যপূর্ণ। মাঝেমধ্যেই বলের গতি পাল্টিয়ে উইকেটে আঘাত হানতে পারেন। ইতিমধ্যেই বুমরা গত ৬০৪টি টেস্ট উইকেট নেওয়ার কৃতিত্ব দেখিয়ে ফেলেছেন। ব্রড আরও বলেন, যশপ্রীত বুমরাকে যত দেখেছি, ততই যেন সে নতুন ভঙ্গিমায় বল করে থাকেন। আমার তো মনে হয়, যাঁরা বলছেন বুমরা পাঁচটি টেস্ট ম্যাচ খেলতে পারবেন না,

তাঁদের কাছে এই বার্তা দিতে চাই বুমরা এখনও ক্ষমতা রাখে পুরো সিরিজে বল করার। বুমরার অসাধারণ বোলিং যে কোনও বিপক্ষ দলের কাছে তুরুপের তাস হিসেবে খেলা করবে। তাই সাবধান থাকতে হবে।

আবার ইংল্যান্ড দলের প্রাক্তন অধিনায়ক জশ বাটলার স্পষ্ট জানিয়েছেন, ভারতীয় দলের সুপারস্টার বলতেই এখন যশপ্রীত বুমরা। আমি জোর গলায় বলছি, ইংল্যান্ড সফরে যে ভারতীয় দল এসেছে, সেই দলে সুপারস্টার বুমরা। তাঁর চেয়ে বড় স্টার অন্য কেউই নেই। আমিও বুমরাকে মোকাবিলা করতে গিয়ে সমস্যায় পড়েছি। বুমরার অদ্ভুত একটা অ্যাকশন আছে। বল ছোড়া দেখেই মনে হবে উইকেটের ধারেকাছে পড়বে, কিন্তু অবাক হতে হয় ওই বলটা কীভাবে সরাসরি উইকেটে আঘাত করে, তা জানা যায় না। একটা ভয়াবহ অবস্থা তৈরি করে। সেই কারণেই বুমরাকে সুপারস্টার বোলার হিসেবে চিহ্নিত করতে চাই। এই সিরিজে ভারতীয় দলের সাফল্যে সবচেয়ে বড় হাতিয়ার হবেন যশপ্রীত বুমরা। ইংল্যান্ড দলে বেশ কয়েকজন সেরা ক্রিকেটার রয়েছেন। তাঁদের সঙ্গে জবরদস্ত লড়াই করার ক্ষমতা রাখেন বুমরা। তাই বুমার থেকে সবার নজর থাকবে খেলার চরিত্র বদলে দেওয়ার জন্য।

এদিকে যশপ্রীত বুমরা নিজেই বলেছেন, কেন তিনি ভারতের অধিনায়ক হতে চাননি। রোহিত শর্মা টেস্ট ক্রিকেট থেকে সরে দাঁড়ালে, সেই সময় ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরা অভিমত প্রকাশ করে বলেছিলেন, ভারতীয় দলকে নেতৃত্ব দিতে পারবেন এখন যশপ্রীত বুমরা। রোহিত শর্মার জায়গায় তরুণ মুখ শুভমন গিলকে ভারতীয় দলের অধিনায়কের ব্যাটনটা তুলে দেওয়া হলে অনেকেই সমালোচনায় মুখর হয়েছিলেন। সেই ব্যাপারে বুমরা নিজেই স্পষ্ট করলেন, রোহিত শর্মা ও বিরাট কোহলির অবসরের পরে আমি নিজেই বিসিসিআইয়ের সঙ্গে কথা বলেছি। সেই সময় আইপিএল চলছিল। চোট থেকে পুরোপুরি সেরে না উঠলেও খেলার জায়গায় ছিলাম। কিন্তু পাঁচ টেস্ট ম্যাচে যে পরিশ্রম করা দরকার, সেই জায়গায় হয়তো সঠিকভাবে পৌঁছতে পারতাম না। তাই নিজেকে সরিয়ে রেখে তিনি বলেন, মাঠে নামলে একটু বুদ্ধি করে খেলতে হবে। খেলতে হবে সাবধানে। চোট সমস্যায় যাতে আবার জড়িয়ে পড়তে না হয়, সেই কারণে নিজেকে দূরে রেখেছিলাম। এটা মনে রাখতে হবে, দলের স্বার্থটাই বড়। তাই বিসিসিআইয়ের কর্মকর্তাদের বলেছিলাম, আমি অধিনায়কত্ব নিয়ে কোনও কিছু ভাবছি না। বরঞ্চ যে ক্রিকেটার পুরো পাঁচটি টেস্ট খেলতে পারবেন, তাঁদের মধ্যে থেকে অধিনায়ক বাছাই করা ভালো। বর্ডার-গাভাসকার ট্রফিতে বুমরা একটি টেস্টে নেতৃত্ব দিয়ে ভারতকে জয় তুলে দিয়েছিলেন। শেষ টেস্টেও দায়িত্ব পেয়েছিলেন বুমরা। কিন্তু চোট পেয়ে মাঠের বাইরে চলে যেতে হয় তাঁকে। তারপরেই ইংল্যান্ড সফরে ভারতীয় দল নির্বাচনে প্রধান নির্বাচক অজিত আগরকর বলেছিলেন, বুমরাকে বোলার হিসেবে বেশি সময় চাই। কিন্তু এমন কিছু ঘটনা না ঘটুক, যা বুমরার জীবনে অন্য কোনও কিছু দেখা দেয়। আমাদের কাছে ও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বোলার। বুমরাই ভালো করে জানেন, নিজেকে কীভাবে প্রকাশ করবেন খেলার মাঠে। শরীরটা কতটা ফিট সেই জানেন। তাই ওঁর সিদ্ধান্তই শেষ কথা।