বছরের পর বছর শুধুই বাংলার ক্রিকেট শিবিরে ব্যর্থতার ছবি। ট্রফি তো দূরের কথা, কবে যে ছবিটা বদলাবে, তা কেউই হলফ করে বলতে পারবেন না। হরিয়ানার বিরুদ্ধে ঘরের মাঠে লজ্জার হারে রঞ্জি অভিযান শেষ করল বাংলা। কল্যাণীতে হরিয়ানার কাছে ২৮৩ রানের বিরাট ব্যবধানে হারতে হল অনুষ্টুপ মজুমদারের বাংলাকে। এই হার শুধু হার নয়, রঞ্জি ট্রফির ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বনিম্ন রানে বাংলার ইনিংস শেষ হয়ে গেল। লজ্জার নজির গড়ল বাংলা। এটা ঠিক, এই ম্যাচে অভিমন্যু ঈশ্বরণ, সুদীপ চ্যাটার্জি ও শাহবাজ আহমেদদের দলে পাওয়া যায়নি। চরম ব্যাটিং ব্যর্থতায় এই কারণ দেখিয়ে বাংলা পার পাবে না। ব্যাটসম্যানরা যেমন হতাশ করেছেন, তেমনই আবার বোলারদের দুর্বল বোলিং হরিয়ানাকে প্রথম থেকেই এগিয়ে দিয়েছে। বাংলা প্রথম ইনিংস ১২৫ রানে সবাই আউট হয়ে গিয়েছিল।
বাংলা পিছিয়ে পড়েছিল ৩২ রানে। আর হরিয়ানা প্রথম ইনিংসে করেছিল ১৫৭ রান। হরিয়ানার এই কম রানে সামনে পেয়েও বাংলার এমন দূর্দশা হবে, তা হলফ করে বলতে পারা যায়নি। দুই তিনজন ক্রিকেটার বাংলা দলে না থাকলে এমন হাল হবে, এটা কি ভাবা যায়? একটা সময় মনে হত, বাংলার ক্রিকেটাররা বিপক্ষ দলের বিরুদ্ধে শাসন করবে। কিন্তু বর্তমানে বাংলার হাল এমন করুণ, দলের খেলোয়াড়রা প্রথম থেকেই হারকে হাতিয়ার করে প্রতিপক্ষ দলের বিরুদ্ধে খেলতে নামে। সৌরভ গাঙ্গুলির রেকর্ড ভেঙে অভিষেক হওয়া ১৫ বছরের অঙ্কিত চ্যাটার্জি মাত্র ২৯ রান করে। অভিষেক পোড়েল কিছুটা লড়াকু ভূমিকা নিয়ে খেলার চেষ্টা করে ৩১ রানে আউট হয়ে যান।
দ্বিতীয় ইনিংসে হরিয়ানা আরও আত্মবিশ্বাসী হয়ে খেলা শুরু করে ৩৩৬ রান তুলে নেয়। হরিয়ানার নিশান্ত সাধু ও হিমাংশু রানার ব্যাটকে ভর করে হরিয়ানা পৌঁছে যায় ৩৩৬ রানে। নিশান্তের ব্যাট থেকে এসেছে ৮০ রান আর হিমাংশু করেছে ৭২ রান। তবে প্রথম ইনিংসের মতো দ্বিতীয় ইনিংসেও বাংলার বোলার সূরজসিন্ধু জয়সওয়াল ৫টি উইকেট দখল করেন। দুই ইনিংস মিলিয়ে তাঁর নামের পাশে ১১টি উইকেট লেখা হয়েছে। ৩৬৮ রানে এগিয়ে থাকা হরিয়ানাকে চ্যালেঞ্জ জানাতে গিয়ে বাংলার অনুষ্টুপরা তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়লেন। এবারে দ্বিতীয় ইনিংসে ৮৫ রান করে বাংলা পাততাড়ি গুটিয়ে নেয়। ভারতীয় দলের প্রাক্তন ক্রিকেটার ঋদ্ধিমান সাহার ব্যাট থেকে আসে ২৫ রান। আর অঙ্কিত চট্টোপাধ্যায় ২১ ও প্রদীপ্ত প্রামাণিক ১২ রান করে আউট হয়ে যান। আর অন্য ক্রিকেটাররা দুই অঙ্কে পৌঁছতে পারেননি। শেষ পর্যন্ত বাংলাকে হারতে হল ২৮৩ রান। বাংলা লজ্জার হারকে সঙ্গী করে এবারের মতো রঞ্জি ট্রফিতে বিদায় ঘণ্টা বাজিয়ে বিদায়ের পথে।